পাস হওয়া পাঁচ বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি : পল্লী দারিদ্র্যবিমোচনে কাজ করবে ‘বার্ড’

প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা পল্লীর দারিদ্র্যবিমোচনে প্রতিষ্ঠান গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বিলে অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে আরো ৪টি বিলে সম্মতি দিয়েছেন তিনি। বিলগুলোÑ ক্যাডেট কলেজ বিল-২০১৭, বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য বিল-২০১৭, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিল-২০১৭ এবং পাট বিল-২০১৭। গতকাল রোববার বিলগুলোতে সম্মতি দিয়ে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে সামরিক শাসনামলে জারি করা অধ্যাদেশগুলো বাতিল হয়ে গেলে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি আইনটিও রহিত হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে রহিত অধ্যাদেশ বলে গঠিত ও পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর আইনি শূন্যতা সমাধানকল্পে ২০১৩ সালে বাতিল আইনগুলোর কার্যকারিতা অব্যাহত রাখার স্বার্থে অধ্যাদেশ কার্যকরণ বিশেষ বিধান জারি করেন রাষ্ট্রপতি। ২৯ সেপ্টেম্বর আগের অধ্যাদেশ ‘বাংলাদেশ একাডেমি ফর রুরাল ডেপেলপমেন্ট অর্ডিন্যান্স ১৯৮৬’ রহিতক্রমে আইনটি পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে এ বিল উত্থাপন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষির আধুনিকীকরণসহ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনেক মডেল সৃষ্টি করেছে। দেশে-বিদেশে অধিকতর সমাদৃত হয়েছে। জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর আইনি কাঠামো আরো শক্তিশালীকরণ প্রয়োজন। এ জন্য আইনের খসড়া বিলটি এপ্রিল মাসের মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। বিলে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা জড়িত থাকায় সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক রাষ্ট্রপতির সুপারিশ পাওয়া গেছে।
বিলে বলা হয়, একাডেমি পরিচালনার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ও মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিবকে ভাইস চেয়ারম্যান করে ১৭ সদস্যের একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে। একাডেমির মহাপরিচালক সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একাডেমি পল্লী উন্নয়ন ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গবেষণা, পল্লী উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবে, পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে সরকারকে সহায়তা প্রদান করবে। একাডেমি তার দায়িত্ব ও কাজ সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত শর্তে ঋণ নিতে পারবে। একাডেমির একটি তহবিল থাকবে। তহবিলে সরকারের অনুদানসহ দেশি-বিদেশি সরকার ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান ও ঋণ নেয়ার এখতিয়ার দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় আওতাধীন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীনের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি পল্লী উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা পল্লীর দারিদ্র্য বিমোচনে নিরলস সহায়তা করে যাচ্ছে। তৎকালীন সরকার ‘পাকিস্তান গ্রাম উন্নয়ন একাডেমি’ নামে এটি প্রতিষ্ঠিত করলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান নামে নামান্তরিত হয়।