পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকে পাহাড়ে পাহাড়ে ফুটতে শুরু করে ঝাড়ু ফুল। প্রতি বছরের মতো এবারও পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে ঝাড়ু ফুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ফুল সংগ্রহ ও শুকাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খাগড়াছড়ির ব্যবসায়ীরা। এ ফুল দিয়ে তৈরি ঝাড়ু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া, কুমিল্লা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ ফুল পাহাড়ের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও রাখছে অবদান। বদলে দিচ্ছে পাহাড়িদের ভাগ্য।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, পৌষের মাঝামাঝি সময় থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত ঝাড়ু ফুল ফোটা ও সংগ্রহের সময়। কম সময়ের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা না হলে ফুলের ডগায় বীজ ফুটতে শুরু হয়। তখন এটি ব্যবহার উপযোগী থাকে না। তাই মাঘের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ঝাড়ু ফুল সংগ্রহ করতে হয়। ভালো করে শুকিয়ে ঝাড়– বানিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে ঝাড়ু ফুল ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রাকৃতিকভাবে ঝাড়ু ফুল ফোটায় কী পরিমাণ ও কত পরিবার এ পেশার সঙ্গে জড়িত তার কোনো সঠিক তথ্য কৃষি বিভাগের কাছে নেই।
জেলা সদরের খবংপুড়িয়া এলাকার বিলে ঝাড়ু ফুল শুকানো কাজে ব্যস্ত কয়েক শ্রমিক। তাদের মধ্যে মনু মিয়া ও চাইøহা মার্মার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিতে তারা ঝাড়ু ফুল শুকানোর কাজ করছে। প্রতিদিন সকালে ফুলগুলো শুকাতে দেয়া হয় এবং বিকালে কুড়িয়ে নেয়াই তাদের কাজ। ঝাড়ু ফুল ব্যবসায়ী মোঃ সরোয়ার ও মঞ্জুরুল আলম জানান, মৌসুমি ব্যবসা হলেও দীর্ঘমেয়াদে এ ব্যবসায় মূলধন বিনিয়োগ করতে হয়। ফুল সংগ্রহ করতে পাহাড়িদের অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখতে হয়। এছাড়া কাঁচা ফুল শুকাতে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। তখন শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে খুব বেশি মুনাফা করতে পারি না। ইব্রাহিম খলিল নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, খাগড়াছড়ির চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার আড়তদাররা এখান থেকে ঝাড়ু ফুল নিচ্ছেন। প্রতি গাড়ি ঝাড়ু ফুলের জন্য বন বিভাগকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা রাজস্ব দিতে হয়। কিন্তু বৈধভাবে ব্যবসা করলেও সড়কপথে পরিবহনের জন্য চাঁদা গুনতে হওয়ায় খরচ বেশি পড়ছে। এতে করে কাক্সিক্ষত মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে না।