জামালপুরের চর এলাকায় উফশী ফসল চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জামালপুর সদর উপজেলার বলাইচর, চর যথার্থপুর ও মধ্যেরচর গ্রামের কৃষক বালুর উফশী ফসল চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। জামালপুর-শেরপুর সড়কের পূর্বপাশে তুলসীরচর ইউনিয়নে মূল রাস্তার পাশে তারা চরে ধানের পরিবর্তে উফশী ফসল শিম, টমেটো, আলু, মরিচ চাষ করে তাদের স্বপ্ন পূরণের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষক মাসুদ আলম ও সাবের ম-ল বলেন, তারা ৫ বিঘা জমিতে এ বছর উফশী ফসল শিম রোপণ করেছেন। যার খরচ পড়েছিল প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে ২ লাখ টাকার শিম করেছেন। আরও প্রায় ৭ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন। কৃষক হাসনা বানু বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এরই মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন ৪ লাখ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বেশি লাভবান হতে পারতেন যদি কৃষি কর্মকর্তারা খোঁজখবর নিতেন। কারণ কৃষি কর্মকর্তারা সময়মতো সার-রোগবালাই প্রতিরোধ পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের ধারণা দিতে পারতেন।
কৃষক হাফেজ মোল্লা বলেন, তারা সবসময় অবহেলিত, অথচ এ চর থেকেই ফসল উৎপাদিত হয়ে বাজারে যাচ্ছে যা সাধারণ মানুষ ক্রয় করছে। এ ফসলের পেছনে যে শ্রম, তার মূল্য তারা কখনও পান না বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তাদের গ্রামের কৃষক থেকে সরাসরি এ উফশী ফসল সংগ্রহ করা হলে তারা হয়তো সঠিক মূল্য পেতেন।
জামালপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এবার জামালপুর জেলায় উফশী জাতের ফসলের ফলন ভালো হয়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় বীজ ভালো না থাকায় কৃষকের অনেক ক্ষতিও হয়েছে। তবে কৃষক যেসব অভিযোগ করেছেন, তা সত্য নয়। কারণ কৃষক যদি আমাদের না বলেন, তাহলে আমরা কীভাবে জানব যে তাদের ফসলের সমস্যা হয়েছে। তাই আমি বলব, সবার আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চরের কৃষককে উফশী ফসলের মাধ্যমে ভাগ্য পরিবর্তনে সরকারের কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে তারা সহজেই স্বাবলম্বী হবেন।