রংপুর জেলায় তিস্তা নদীর বালুচরে স্কোয়াশ চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। জানা গেছে, জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা উপজেলার ধু-ধু বালুচরে ২০০৯ সাল থেকে স্কোয়াশ চাষ শুরু হয়। এসব এলাকায় ২৬ হেক্টর জমিতে সবুজে ছেয়ে গেছে। স্কোয়াশ সবজি হেক্টরপ্রতি সাধারণত ৫০০ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়ে থাকে। তিন উপজেলায় ২০ হাজার মানুষ এ সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এবার এসব এলাকায় এ সবজি বিক্রি করে অন্তত অর্ধকোটি টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চর রাজীবে ১ হাজার ৬০০টি গর্তে চাষ শুরু করা হয়েছে, যা তাক লাগিয়ে দিয়েছে অন্য চরাঞ্চলের হাজারো কৃষককে। তিস্তার বালুচর এখন সবুজে ছেয়ে গেছে। কৃষক জানান, আগামী মৌসুমে এর চাষাবাদ আরও বাড়বে। কাউনিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের আর্থিক সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো ১ হাজার ৬০০টি গর্তে থাইল্যান্ড জাতের এ স্কোয়াশ চাষ শুরু করা হয়েছে। চর রাজীব গ্রামের ৪০ জন কৃষান-কৃষানিকে উদ্বুদ্ধ করে স্কোয়াশ চাষ শুরু করা হয়েছে। কৃষক শফিকুল ইসলাম, মিন্টু মিয়া, মালা রানী ও নিরঞ্জন চন্দ্র জানান, বাংলাদেশের শসাজাতীয় এ সবজি অন্যান্য সবজির চেয়ে অনেক সুস্বাদু। ভিটামিন গুণেও ভরা এ সবজি। আর কিছুদিন পর আমরা স্কোয়াশ বাজারে ছাড়তে পারব। ঢাকায় স্কোয়াশের চাহিদা অনেক। সেখানে প্রতিটি ষ্কোয়াশ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। তারা জানান, এরই মধ্যে ঢাকার ব্যবসায়ীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আর স্থানীয় বাজারে দাম একটু কম হলেও এর চাহিদা বেশ আছে। তবে তারা জানান, স্কোয়াশের ফলনও হয় বাম্পার এবং এর রোগবালাই নেই বললেই চলে। চাষিরা বালুচরে পতিত জমিতে স্কোয়াশ চাষ করতে পেরে এবং সেখান থেকে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজে পাওয়ায় তারা বেজায় খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে নভেম্বর মাসে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় চর রাজীবে ৪০ জন কৃষক প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেন। কৃষকের মাঝে থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা বীজ ও প্রয়োজনীয় সার দিয়ে চাষ শুরু করা হয়। চরে পানির জন্য গর্তে করে পলিথিন বিছিয়ে পানি সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সেচ দেয়া হয়। রোগবালাই নেই তাই কীটনাশক ব্যবহারও করতে হয় না। এজন্য স্কোয়াশ স্বাস্থ্যসম্মত একটি প্রোটিন জাতীয় খাবার। তবে হাইব্রিড জাতের স্কোয়াশের বীজ এখনও দেশে উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। চলতি মৌসুমে স্কোয়াশ চাষ সীমিত হলেও আগামী মৌসুমে এর চাষ অনেক বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।