বালুর চরে উফশী ফসল স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

জামালপুর সদরের বলাইচরে কৃষক শিখা আক্তারসহ (২৫) অনেকেই জীবন সংগ্রামে বেছে নিয়েছেন বালুর চরে শুধু ধান চাষ নয়, উফশী ফসল সিম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। জামালপুর সদর উপজেলার বলাইচর, চর যথার্থপুর ও মধ্যচর গ্রামের কৃষকরা বালুর চরে ধানের পরিবর্তে, উফশী ফসল চাষ করে বালু মাটিকে কাজে লাগিয়ে সাবলম্বি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকেই। জামালপুর-শেরপুর রোডের পূর্বপাশে তুলশীর চর ইউনিয়নে রাস্তার পাশে চর যথার্থপুর গ্রাম ও শেরপুরের মধ্যচর গ্রামের কৃষকরা উফশী ফসল, শিম, টমেটো, আলু, মরিচ চাষ করে তাদের স্বপ্ন পূরণের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষক স্বপন মিয়া ও শামীম হোসেন বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে এ বছর উফশী ফসল শিম রোপণ করেছি। যার খরচ পড়েছিল প্রায় একলাখ নব্বই হাজার টাকা। তবে বর্তমানে বাজার মূল্য ভালো থাকার কারণে বিক্রি করেছি দুই লাখ টাকার শিম। আরো প্রায় সাত লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা চরের মানুষ, সরকারের কোন সহযোগিতা পাই না। কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তাও কখনো আমাদের কাছে আসে না। যদি তারা আসতো এবং সরকার সহযোগিতা করত তবে আমরা অনেকটাই লাভবান হতাম। কৃষক শিখা আক্তার বলেন, আমি চার বিঘা জমিতে সীম চাষ করেছি। চার বিঘা জমিতে সীম চাষ করতে আমার খরচ হয়েছে একলাখ পঁচিশ হাজার টাকা। এরমধ্যে আমি বিক্রি করেছি একলাখ পঁয়তালিশ হাজার টাকা। তবে আমি আশা করছি চার লাখ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার সীম বিক্রি করবো। আরও বেশি লাভবান হতাম যদি কৃষি কর্মকর্তারা আমাদের কাছে এসে খোঁজ খবর নিতো। কারণ সময় মতো সার-বিষ, রোগবালাই প্রতিরোধ পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা দিতো। দুলাল মিয়া বলেন, আমরা সবসময় অবহেলিত অথচ এই চর থেকেই ফসল উৎপাদিত হয়ে বাজারে যাচ্ছে যা সাধারণ মানুষ ক্রয় করছে। এই ফসলের পিছনে যে পরিশ্রম তার মূল্য আমরা কখনো পাই না। যদি আমাদের গ্রামে সরকারের মধ্যমে সরাসরি কৃষক থেকে এই উফশী ফসল সংগ্রহ করা হতো তবে আমরা হয়তো সঠিক মূল্য পেতাম। আমাদের কৃষকদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতো। এবং ফসল উৎপাদনের সময় যদি কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা একটু সুদৃষ্টি দিতো তা হলে চরাঞ্চলের কৃষকরা অনেকটাই উপকৃত হতো। জামালপুর জেলা কৃষিকর্মকর্তা বলেন, এবার জামালপুর জেলায় উফশী জাতের ফসলের ফলন অনেকটাই ভালো হয়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় বীজ ভাল না থাকায় কৃষকের অনেক ক্ষতিও হয়েছে। তবে কৃষকরা যে সকল অভিযোগগুলি করেছে তা সত্য নয়। কারণ কৃষকরা যদি আমাদের না বলে তাহলে আমরা কিভাবে জানবো যে তাদের ফসলের সমস্যা হয়েছে।