উপজেলার লালপুরের শুঁটকির খ্যাতি দেশের সীমা ছাড়িয়ে এখন বিশ্বজুড়ে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কোনো উপাদান মেশানো হয় না এ শুঁটকিতে। ফরমালিনমুক্ত দেশি প্রজাতির মাছ থেকে এ শুঁটকি উত্পাদন করা হয় বিধায় এর স্বাদ আলাদা। তাই প্রতি বছর বিদেশে রপ্তানি হয় বিপুল পরিমাণ শুঁটকি। এদিকে, শুঁটকি গুদামজাতকরণে গুদাম প্রতিষ্ঠা ও শুঁটকি উত্পাদনে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, লালপুর গ্রামে মেঘনা নদীর পাড়ে পুরোদমে চলছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। নদীর পাড়ে তৈরি করা শত শত ডাঙ্গিতে শুঁটকি শুকানো হচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছে প্রায় সহস্রাধিক নারী-পুরুষ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত, নেপাল, সৌদি আরব, আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে পাঠানো হয় শুঁটকি। স্থানীয় আড়ত্দার বা মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে পুঁজি সংগ্রহ করতে হয় ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি, কম সুদে জামানত বিহীন ব্যাংক ঋণ প্রদান করা হলে শুঁটকি উত্পাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব।
শুঁটকি ব্যবসায়ী মো. খলিলুর রহমান জানান, শ্রমিকদের বেতন দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ব্যাংক থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। শুঁটকি ব্যবসায়ী খায়ের মিয়া জানান, পুঁজির অভাবে এখন আর আগের মতো ব্যবসা করতে পারছি না। দিন দিন মাছের দাম যেমনি বাড়ছে, তেমনি শ্রমিকের মজুরিও বাড়ছে। এখন অল্প টাকায় এই ব্যবসা চালনো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই এই ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন শুঁটকি ব্যবসায়ীরা।
লালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবুল খায়ের জানান, পুঁজির অভাবে প্রান্তিক শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকারীরা তাদের ন্যায্য মূল্য পায় না। সরকার শুঁটকি উত্পাদনকারীদের ব্যাংক ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি শুঁটকি উত্পাদন দ্বিগুণ হতো। এ ছাড়া এখানে শুঁটকির গুদাম প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তিনি। অগ্রণী ব্যাংক লালপুর শাখার ম্যানেজার হাসান সাইদুর রহমান জানান, নিয়মানুসারে তারা শুঁটকি ব্যবসায়ীদের এসএমই ঋণ প্রদান করছে। প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা তাদের ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। তবে জামানতবিহীন কিংবা শহজশর্তে ঋণের কোনো নির্দেশনা তাদের কাছে নেই বলেও জানান তিনি। তবে মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ গ্রহণ না করে ব্যাংকে এসে কথা বলার জন্য সকল উত্পাদনকারীদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।