ভুটানে ধান বীজ রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নয়া দিগন্ত উন্মোচন

এবারও বাংলাদেশের ধান আবাদ করবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটান। গত মৌসুমে বাংলাদেশের ধানের জাত নিয়ে সে দেশে আবাদের পর প্রচুর ফলন পাওয়ায় এবার বাংলাদেশের সাথে নতুন করে চুক্তি করে দেশটি।

 

এবার ব্রিধান ২৮ এবং বিআর ২৬ এই দুইজাতের ৫ টন বীজ রপ্তানির জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এ দুটি ধানের জাত থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন গুণগত মানসম্পন্ন বীজ উত্পাদন করেছে। যা এখন ভুটানে আবাদ হবে।

 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান বীজতত্ত্ববিদ কৃষিবিদ আজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে ব্রিধান ২৮ এবং বিআর ২৬ এর ফলন বেশি। আর বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলের কৃষি পরিবেশ ভুটানের কৃষি পরিবেশের সাথে প্রায় মিল রয়েছে। এ কারণে ভুটান বাংলাদেশ থেকে এ দুটি ধানের বীজ আমদানির আগ্রহ দেখায়। এ দুটি বীজ নিয়ে ইতোমধ্যে তারা তাদের কৃষি পরিবেশের সাথে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে। গত বছর ২৫ টন বীজ আমদানি করেছিল ভুটান।

 

বোরো মৌসুমের আগাম জাত হিসেবে সুপরিচিত ব্রিধান ২৮। এ ধানের ডিগপাতা হেলে যায় এবং শীষ উপরে থাকে; ফলনেও ভাল তাই এর জনপ্রিয়তা ঘরে ঘরে এ জাতের চাল সাদা ও চিকন। ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু।

 

কৃষি তথ্য সার্ভিস বিআর ২৬ এর পরিচয় তুলে ধরে জানিয়েছে, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটিকে রোপা আউশের জাত হিসেবে চূড়ান্ত ভাবে নির্বচান করা হয়। এ ধানের জনপ্রিয় নাম শ্রাবণী। এটি আগাম জাত।

 

কৃষিমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাইব্রিড ধানের বীজ উত্পাদনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে হাইব্রিড ধান বীজ রপ্তানি হচ্ছে। পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপ মরিশাসেও ধানের বীজ রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইং-এর প্রচেষ্টায় দেশে উত্পাদিত হাইব্রিড বীজ বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়। এর ফলে ধান উত্পাদনে বিশ্বের অন্যতম দেশ ভিয়েতনাম এগিয়ে আসে হাইব্রিড ধানের বীজ আমদানির প্রস্তাব নিয়ে। এর ফলে ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম ও চীনে হাইব্রিড ও ইনব্রিড ধানের বীজ রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়। কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, হাইব্রিড বীজ রপ্তানির মধ্য দিয়ে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি নতুন খাত সৃষ্টি হয়েছে।