বানারীপাড়া ও স্বরূপকাঠিতে একই জমিতে একসঙ্গে একাধিক ফসলের চাষ করে আার্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন শত শত প্রান্তিক কৃষক। অনেক দিন ধরে স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে একই জমিতে একসঙ্গে দুই বা তিন ফসল উৎপাদন হলেও সম্প্রতি এর মাত্রা বেড়ে গেছে অনেক গুণ। চাষাবাদের পরিধি স্বরূপকাঠির পর এখন বানারীপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
বানারীপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন, বিশারকান্দি, উদয়কাঠি ও ইলুহার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। জমিতে মাটি কেটে আইল বেঁধে ক্ষেত তৈরি করার পাশাপাশি নার্সারিতে বা পেয়ারা বাগানের খালি জমিতে, এমনকি উঠানের পাশে খালি জায়গায় বোম্বাই মরিচসহ সবজি চাষ করে বাড়তি আয় করছেন কৃষকরা। উপজেলার রাজ্জাকপুর, ইলুহার, তেতলা, উমারেরপাড়, কলাভিটা, মধুরভিটা, বিশারকান্দি এবং স্বরূপকাঠি উপজেলার মাহামুদকাঠি, সঙ্গীতকাঠি, কুড়িয়ানা, আদাবাড়ী, বঙ্কুরা, জিন্তাকাঠি, হরিহরকাঠিসহ বিভিন্ন গ্রামে এখন একই জমিতে চার ধরনের ফসল উৎপাদন করছেন কৃষক। স্বরূপকাঠি উপজেলার বেশি জমিতে মরিচ চাষ করেন আদাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা রিপন হাওলাদার ও অসীম হাওলাদার। এক সময় রিপন দিনমজুর আর ভাতিজা অসীম এইচএসসি পাস করার পর ছিলেন বেকার। ২০০৭ সালে চাচা-ভাতিজা মিলে সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে বোম্বাই মরিচের চাষ শুরু করেন। তারা এখন ওই গ্রামের সচ্ছলদের অন্যতম। কুড়িয়ানা-রায়েরহাট সড়কের বঙ্কুরা ও বাস্তকাঠি এলাকার রাস্তার দুই ধারে তাদের একাধিক সবজিক্ষেত পথচারীদের মন কাড়ে। রিপন তার ক্ষেতের পরিধি স্বরূপকাঠি ছাড়িয়ে বানারীপাড়া উপজেলার রাজ্জাকপুরে বিস্তৃত করেছেন। এখানে তিনি বিভিন্ন প্লটে ক্ষেত তৈরি করে একই সঙ্গে বোম্বাই মরিচ, পুঁইশাক, বিভিন্ন ধরনের কপি ও কাঁচকলার চাষ করছেন।
অসীম হাওলাদার জানান, কার্তিক মাসের শেষের দিকে শুরু হয় বোম্বাই মরিচ চাষের কার্যক্রম। প্রথমে বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করা হয়। ক্ষেতে পরিমাণ মতো চাষ দিয়ে অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি চারা তুলে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হয়।
এক বিঘা জমিতে রোপণ করা হয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার চারা। একই সঙ্গে রোপণ করা হয় কলাগাছের চারা, পুঁইশাকের বীজ ও অন্যান্য সবজির চারা। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দির অনিল দাস ও মরিচবুনিয়া গ্রামের আল-আমিন। তারা জানান, তাদের দুই বিঘা জমিতে সবজি চাষ করে ৮-৯ জনের সংসার বেশ ভালোই চলছে। ইলুহার গ্রামের মতিয়ার রহমান ও তেতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ একসঙ্গে বোম্বাই মরিচ, সবজি ও মেহগনি গাছের চারা উৎপাদন করেন।
স্বরূপকাঠি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিফাত সিকদার সমকালকে বলেন, চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছেন মাঠকর্মীরা।