আলু উৎপাদনে আশার আলো

বেশি করে আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান অথবা আলু খেলে বুড়ো হয়, এ কথাটি সত্য নয়। আলুকে ভাতের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় করতে এই সস্নোগানগুলো বহুল প্রচলিত। ফলে ভাতের পর এখন দেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশক্তির উৎস আলু। অন্য যে কোনো শস্যের চেয়ে আলুর ফলনও বেশি হয়। আলুতে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ আছে। এ ছাড়া আলুর খোসায় আছে ভিটামিন ‘এ’, পটাশিয়াম, আয়রন, অ্যান্টি-অক্সাইড, ফাইবারসহ আলু থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পাই। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা কেন্দ্রের (ইফ্রি) এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদন বলছে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে আলু উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। উৎপাদন বেড়েছে ২৬ গুণ। মাথাপিছু আলু খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে ১০ গুণ। বাংলাদেশের মানুষ বছরে মাথাপিছু ২৩ কেজি আলু খায়, যা ভারতের চেয়ে আট কেজি বেশি। সিঙ্গাপুর বছরে দুই লাখ টন এবং শ্রীলংকা বছরে ১ দশমিক ৫ লাখ টন আলু আমদানি করে। তাই রপ্তানিতে অপ্রচলিত পণ্যের তালিকায় আলুকেও সংযোজন করার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে চীন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া এসব দেশের আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের আলুবাজার প্রায় সম্পূর্ণ ভারতের নিয়ন্ত্রণে। চলতি মৌসুমে দেশে ৪ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদের মাধ্যমে ৯০ লাখ টন গোল আলু উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, গোল আলু উৎপাদনে এখনো বড় বাধা উন্নত বীজ ও এর আবাদ প্রযুক্তি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-বারির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন মাঠপর্যায়ে কৃষকের কাছে উন্নত জাতের বীজ ও এর আবাদ প্রযুক্তি হস্তান্তর নিশ্চিত করা গেলে দেশে আলুর উৎপাদন আগামী পাঁচ বছরে কোটি টন অতিক্রম সম্ভব। তাদের মতে, উন্নত বীজ এবং পরিমিত জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহারসহ সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশে হেক্টরপ্রতি ৩০-৪০ টন পর্যন্ত গোল আলু উৎপাদন সম্ভব বলে।

আলুর উৎপত্তি ও বিকাশ
তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, গোল আলুর উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে। পরবর্তী সময়ে তা পর্তুগিজ ব্যবসায়ী ও নাবিকদের হাত ধরে ইউরোপে আসে। বাংলাদেশে ২০০ বছর আগে পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ জেলায় আলুর আবাদ শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট নিরসনকল্পে মানুষের খাদ্য হিসেবে আলুর কদর বেড়ে যায়। গোল আলু এবং মিষ্টি আলু দুটোই যুদ্ধোত্তর পৃথিবীর খাদ্য সংকট মোকাবেলায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। তবে আলুর আদি নিবাস পেরুতে হলেও ১৫৭০ সালে এর বিস্তার ঘটে স্পেনে। ১৬০০ সালে আলুর আবাদ ছড়িয়ে পড়ে ইতালি, ফ্রান্স, হল্যান্ড, ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানিসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে। ১৭৯৫ সালে ইংল্যান্ডের কৃষিবিভাগ একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যার শিরোনাম ছিল ‘আলু ভালোবাসুন, আলুর ব্যবহার বৃদ্ধি করুন। সিদ্ধ আলুতে মোট যে পরিমাণ খনিজ পদার্থ থাকে তা সমপরিমাণ রুটি বা ভাতের চেয়ে অনেক বেশি। খোসাসহ আলু সিদ্ধ করে খাওয়া হলে ভিটামিন ‘সি’ অপচয় কম হয়। দামে যেমন সস্তা, ব্যবহার বৈচিত্র্যেও আলু তুলনাহীন। সিদ্ধ আলু, আলু ভাত, আলু খিঁচুড়ি, আলু চাপাতি, চপ, চটপটি, লুচি, শিঙ্গাড়া, দম, আলু সবজি, আলু পায়েস, হালুয়া ইত্যাদি নানাবিধ উপাদেয় খাদ্য তৈরি করা যায়। আর ব্যস্ত নাগরিক জীবনে আলুর জনপ্রিয় পদ চিপস ও ফ্রেঞ্জ ফ্রাই।

বাংলাদেশে বিস্তৃতি
গত একযুগে দেশে আলু থেকে প্রক্রিয়াজাত পণ্য যেমন- চিপস, ফ্রেঞ্জ ফ্রাই, ফ্লেক্স ও অন্যান্য খাদ্য ও পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ক্যাটালিস্টের হিসাবে ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে দেশে ১৫টি আলু প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থাপিত হয়েছে, এর মধ্যে চারটি কোম্পানি আলু থেকে উৎপাদিত চিপস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বিদেশেও রপ্তানি করছে। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত আলুর জাত কৃষকেরা চাষাবাদ শুরু করেন। আশির দশকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা নেদারল্যান্ডসের জাতগুলোকে উন্নত করে দেশের আবহাওয়া উপযোগী করা শুরু করেন। দেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত তিন মাসে ফলন হয় এমন আলুর জাত উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে। বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা ছাড়া দেশের সব স্থানেই আলুর চাষ হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলু ফলে মুন্সীগঞ্জ, বগুড়া ও রংপুর জেলায়।

আলু উৎপাদনে বিশ্বে ৭ম বাংলাদেশ
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ২০১৩ সালের সর্বশেষ আলুর উৎপাদন-বিষয়ক পরিসংখ্যান বলছে, আলু উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম বাংলাদেশ। বাংলাদেশে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন এবং কৃষকদের প্রচেষ্টায় আলু চাষের সফলতা এসেছে। মূলত ২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশে আলু উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে। ইউরোপে যেখানে আলু পরিণত হতে পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগে, সেখানে বাংলাদেশে আলু হতে তিন মাস লাগে। গত একযুগে আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা ৭৩টি আলুর জাত উদ্ভাবন করেছেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) আলুর নতুন জাত উদ্ভাবনে বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। দেশের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত জাতগুলো থেকে দেশের ৭৫ শতাংশ আলু উৎপাদিত হচ্ছে বলে বারি থেকে জানানো হয়েছে। বারি আলু-৪৬ ও বারি আলু-৫৩ নামে নতুন দুটি জাত উদ্ভাবন করেছেন আলু গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা, যাতে ব্যাকটেরিয়া (লেট বস্নাইট) আক্রমণ হবে না।

আলুর জনপ্রিয় জাতগুলো
বিশ্বে কয়েকশ জাতের আলু চাষ হয়। এগুলোর পার্থক্য বাহ্যিকরূপ, কন্দের গঠন, আকার ও বর্ণ, পরিপক্বতার সময়, রান্না ও বাজারজাতকরণ গুণাবলি, ফলন এবং রোগ ও পোকা-মাকড় প্রতিরোধ ক্ষমতায়। একটি এলাকার জন্য উপযোগী একটি জাত অন্য এলাকায় উপযোগী নাও হতে পারে। বাংলাদেশে চাষকৃত আলুর জাতগুলোকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়, যেমন_ স্থানীয় ও উচ্চফলনশীল (উফশী)। দেশের বিভিন্ন অংশে স্থানীয় আলুর প্রায় ২৭টি জাত আবাদ করা হয়। এগুলোর পরিচিত স্থানীয় নাম রয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, পরিচিত স্থানীয় জাতগুলো হচ্ছে (ক) শীলবিলাতী যা প্রধানত রংপুরে চাষ করা হয়। এর কন্দ আয়তাকার ও লালচে। প্রতি কন্দের ওজন প্রায় ৩০ গ্রাম। (খ) লালশীল_ প্রধানত বগুড়ায় চাষ করা হয়। এর কন্দ গোলাকৃতির, লালচে, প্রত্যেকটির ওজন হয় প্রায় ৫৫ গ্রাম। এ জাতটি লালমাদ্যা বা বোগরাই নামেও পরিচিত। (গ) লালপাকরী_ দিনাজপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ব্যাপকভাবে চাষ করা হয় যার কন্দ লালচে, গোলাকার, প্রত্যেকটির ওজন প্রায় ৩০ গ্রাম। (ঘ) দোহাজারী- প্রধানত চট্টগ্রাম এলাকায় চাষ হয়। দেখতে গোলাকার ও ফ্যাকাসে, প্রত্যেকটির ওজন প্রায় ২৫ গ্রাম। অন্যান্য দেশি জাতগুলোর মধ্যে ঝাউবিলাতী ও সূর্যমুখী উল্লেখযোগ্য। উল্লেখযোগ্য অন্যান্য উন্নত জাতগুলোর মধ্যে আছে পেট্রোনিস, মুলটা, হীরা, মরিন, ওরিগো, আইলসা, গ্রানুলা, ফেলসিনা, রাজা, ডুরা, অ্যাস্টারিক্স প্রভৃতি।

বাড়ছে রপ্তানি সম্ভাবনা
বিদেশে আলু রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। ১৯৯১ সালের আগে বিশ্বের ২০টি দেশ থেকে আলু আমদানি করতে হতো। আর বর্তমানে ২৭টি দেশে আলু রপ্তানি হয়। আলু উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে আলু রপ্তানির সুযোগ অবারিত হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে মাত্র ৩২ কোটি ২২ লাখ টাকার আলু রপ্তানি করেছিল। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা ২৫০ কোটি ছাড়িয়েছে। জানা গেছে, দেশে বছরে গড়ে ৮০ লাখ টনের বেশি আলু উৎপাদিত হচ্ছে, রপ্তানি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন। এর সঙ্গে আবার যোগ হয় আগের বছরের উদ্বৃত্ত আলু। ফলে প্রতিবছর অন্তত ১৬ লাখ টন আলু রপ্তানি করা সম্ভব। ৪০ হাজার টন আলু রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ব্রুনাইয়ে আলু রপ্তানি শুরু করছে বহুজাতিক কোম্পানি প্রাণ। সৌদি আরব, দুবাই, ওমান, কুয়েত, কাতার, হংকং, নেপাল ও শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশে প্রাণের প্যাকেটজাত আলু পাওয়া যাবে। কুড়িগ্রামের আলু যাচ্ছে রাশিয়ায়। বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রোবেন গ্রানুলা ও কার্ডিনাল জাতের আলু মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলংকা যাচ্ছে।

উৎপাদনের কারিগর কৃষক
আলু উৎপাদনের এ সাফল্যের মূল কারিগর কৃষকই। মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নীলফামারী, রংপুরের বদরগঞ্জ, পঞ্চগড়, যশোর, বগুড়া, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ ও লালমনিরহাট জেলায় প্রায় প্রতিবছর আলুর বাম্পার ফলন হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪০টি জাতের উন্নত আলুর চাষাবাদ হচ্ছে কৃষকপর্যায়ে। উচ্চফলনশীল জাতের আলুবীজ সম্প্রসারিত হয়েছে শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি আবাদি এলাকায়। এক দশক আগেও উৎপাদন ছিল ৫০ হাজার টনের নিচে। এখন তা এগোচ্ছে কোটি টনের দিকে। সরকারও আলুর উৎপাদন বাড়াতে নানাভাবে উৎসাহিত করেছে কৃষককে দেয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহায়তা। দেশে আলু উৎপাদন কয়েক বছর ধরে ৮২-৮৯ লাখ টনের ঘরে ওঠানামা করছিল। প্রথমবারের মতো তা ৯০ লাখ টন ছাড়াল। প্রাথমিক হিসাবে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯২ লাখ ৫৪ হাজার টন। প্রতি কেজি গড়ে ১২ টাকা হিসাবে উৎপাদিত এ আলুর মূল্য ছাড়িয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।

উদ্ভাবিত নতুন জাত
আলুচাষির এ সংকট মোচনে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বারি)। বারি ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক উচ্চফলনশীল গোল আলুর জাত উদ্ভাবন করেছে_ ‘বারি আলু_১(হিরা), বারি আলু_৪(আইলসা), বারি আলু_৭(ডায়মন্ড), বারি আলু_৮(কার্ডিনাল), বারি আলু_১১(চমক), বারি আলু_১২(ধীরা), বারি আলু_১৩(গ্রানলা), বারি আলু_১৫(বিনেলা), বারি টিপিএস_১ ও বারি টিপিএস-২’ নামের একাধিক জাতের উচ্চফলনশীল বীজ উদ্ভাবন করেছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের কাছে এখনো কার্ডিনাল ও ডায়মন্ড আলুই বেশি জনপ্রিয়। প্রক্রিয়াজাত সুবিধাসংবলিত তিনটিসহ নতুন পাঁচটি জাত উদ্ভাবন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বারি-৩৫, বারি-৩৬, বারি-৩৭, বারি-৪০ ও বারি-৪১। নতুন পাঁচটি জাতের প্রতিটিরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। বারি-৩৫ জাতটি ৯০-৯৫ দিনের মধ্যে ফলন দিতে সক্ষম। প্রতি হেক্টরে ফলন পাওয়া যাবে প্রায় ৪০ টন। বারি-৩৬ জাতের আলু ফলন হবে প্রতি হেক্টরে ৩৫ টন। পরিপক্ব হতে সময় লাগবে ৯০-৯৫ দিন। বারি-৩৭ জাতটি ৯০-৯৫ দিনে পরিপক্ব হবে। প্রতি হেক্টরে ফলন হবে ৩৫ টন। জাত দুটি ৯০-৯৫ দিনে পরিপক্ব হবে ও হেক্টরপ্রতি ফলন হবে প্রায় ৪০ টন।

আলু থেকে বিদ্যুৎ
আলু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বাতি জ্বালিয়ে বিজ্ঞান মেলায় সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে মিরসরাইয়ের ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞান মেলায় আলু থেকে বিদ্যুৎ আবিষ্কারক মঘাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় স্কুলের ক্ষুদে বিজ্ঞানী ইমন, আসিফ বিশ্বনাথ, সাকিব ও প্রসেনজিত জানিয়েছেন, আলুর ভেতরে থাকে প্রচুর পরিমাণে সৌরশক্তি যেটি কাজে লাগিয়ে অনায়াসে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। আলু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে একটি এলইডি বাল্ব জ্বালাতে ১০টি আলু, জিংকের পাত, ১০টি তামার পাত ও সামান্য তার ও দুটি আলাদা ধাতব দ- ব্যবহার করা হয়েছে। ধাতব দ-ের মধ্যে একটি অ্যানোড বা (নেগেটিভ) এবং অন্যটি ক্যাথোড বা পজিটিভ। এরপর দ- আলুর দুই প্রান্তে গেঁথে আর দ-ের অন্য প্রান্তের সঙ্গে দুটি পরিবাহী লাগানো হয়েছে। পরে এসিডিক পদার্থকে সংশ্লেষণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়েছে। যা এর আগে কেউ ভাবেনি।

আলু হোক আশার আলো
ভাতের বিকল্প হিসেবে আলুর বিভিন্ন ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলা প্রয়োজন। খাবারের মধ্যে আলুর বিচিত্র ব্যবহার বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া দরকার। আলুর বিভিন্ন প্রকার খাবার পরিবেশন বাধ্যতামূলক করা উচিত সব হোটেল ও রেস্তোরাঁয়। আলুর বিদ্যমান জাতগুলোয় জলীয় অংশ বেশি থাকায় তা সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। হিমাগার সংকটের কারণেও পণ্যটির কাঙ্ক্ষিত মজুদ গড়ে তোলা যাচ্ছে না। তাই উৎপাদনে শীর্ষ দশের এ অবস্থান স্বপ্ন যেমন দেখাচ্ছে, তেমনি বাড়াচ্ছে ঝুঁকিও। আলু উৎপাদনে বেশি কিছু প্রতিবন্ধকতাও মোকাবেলা করতে হচ্ছে কৃষককে।

লেখকগণ : কৃষি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক