অচিরেই দেশের ৫০টি উপজেলা ভূমি অফিসে ভূমি তথ্য ও সেবা কাঠামোর আওতায় ‘ই-নামজারি সিস্টেম, পাইলট প্রকল্প’ শুরু হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পিরোজপুর সদরসহ সাতটি উপজেলায় এ সেবা সুবিধা চালুর মধ্য দিয়ে পাইলট প্রকল্পের সূচনা ঘটবে। পরে আরো ৪৩টি উপজেলা অনুরূপ প্রকল্পভুক্ত করে ক্রমান্বয়ে দেশের সকল উপজেলা এ ডিজিটাল পদ্ধতির আওতাধীন হবে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এ টু আই প্রজেক্টের ন্যাশনাল সিস্টেম এনালিস্ট এনামুল হক গতকাল বুধবার পিরোজপুরে এ সংক্রান্ত ভূমি অফিসের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এ তথ্য জানান। পিরোজপুর সদর উপজেলায় গত অক্টোবর মাসে পাইলট অটোমেশন পদ্ধতি চালু হয়েছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত সকল তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে। পিরোজপুরে চালু হয়েছে নতুন ধারণার ‘ভূমিসেবাগৃহ’। পাশাপাশি জনবান্ধব ভূমি অফিস ইতোমধ্যে চালু হওয়ায় সেখানে ‘ওয়ানস্টপ সেবার’ মাধ্যমে নয়টি বিষয়ে সরাসরি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। বিষয়গুলো হচ্ছে: নামজারি ও জমা খারিজ এবং রেকর্ড হালনাগাদকরণ, ভূমিহীনদের মাঝে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান, পয়স্থিসৃষ্ট কৃষি খাস জমি ভূমিহীনদের মাঝে একসনা বন্দোবস্ত প্রদান, অর্পিত সম্পত্তির লিজ নবায়ন, হাট-বাজারে চান্দিনা ভিটি লিজ প্রদান, হাট-বাজারে চান্দিনা ভিটি লিজ নবায়ন, সহকারী কমিশনার ভূমি কর্তৃক সৃষ্ট রেকর্ডের সইমোহর নকল প্রদান, বিবিধ মামলার সেবা প্রদান এবং সর্বোপরি ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম ও পরামর্শ প্রদান।
জনবান্ধব ভূমি অফিসের সেবাগৃহ উদ্বোধনকালে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ খায়রুল আলম সেখ জানান, এ কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’ দেওয়া হবে। এ সার্ভিস দেওয়ার জন্য হেলপ ডেস্ক্ পরামর্শ প্রদানসহ সেবা গ্রহণকারীদের শুনানি কক্ষও স্থাপন করা হয়েছে। অনলাইন নামজারি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। মোবাইলের মাধ্যমে ভূমি অফিসের বিভিন্ন সেবা জানিয়ে দেওয়া হবে। এ অনলাইন সেবা ইউনিয়ন ভূমি অফিস পর্যন্ত বিকেন্দ্রীকরণ হবে। ভূমি সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণে সরকার সূচিত কাজের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে পিরোজপুর জেলার রেকর্ড রুমে এক লাখ পাঁচ হাজার দলিল এ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম সোহরাব হোসেন জানান, আরো চার লাখ দলিল একইভাবে সংরক্ষণ করার কাজ চলছে। এ কাজে ৩৫ জন আউটসোর্সিং কর্মী ব্যাপৃত রয়েছেন। ৬৪ জেলার মধ্যে পিরোজপুরে সর্বাধিকসংখ্যক রেকর্ড ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
পিরোজপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ তানভীর রহমান জানান, জনবান্ধব ভূমি অফিস ও সেবাকেন্দ্র চালু হওয়ায় জনগণের ভোগান্তি ও হয়রানি দ্রুত কমে যাবে। ভূমি অফিসে দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করতে হবে না। ওয়ানস্টপ সার্ভিস দিয়ে মানুষকে দ্রুত প্রতিকার ও দাবি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য থাকবে না।