ঢাকার ধামরাই উপজেলাজুড়ে সরিষা ক্ষেতে ভ্রাম্যমাণ মৌমাছির খামার কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। আর তাই রবিশস্য সরিষার সঙ্গে মৌমাছি চাষ করে মধু সংগ্রহের এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ উপজেলায়। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় চলতি বছরে উপজেলায় সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহের চারটি বস্নকে ৭৮৬টি মৌ বাক্সে খামার গড়ে তোলা হয়েছে। এতে প্রায় আধা কিলোমিটার দুরের সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করে আনছে মাছিগুলো। এতে মধু বিক্রি করে কৃষকেরা অর্থনৈতিক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও পাবেন বেশি আশা এখানকার কৃষকদের।
জানা যায়, সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির খামার করে সহজেই মধু সংগ্রহ করা যায়। এতে মধু বিক্রি করে মৌ চাষীরা অর্থনৈতিক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও পাবেন বেশি কৃষকরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতায় উপজেলায় সরিষা ক্ষেতের পাশে মধু চাষের জন্য ৭’শ ৮৬টি বস্নকে ভ্রাম্যমাণ খামার গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষ ও মধু সংগ্রহে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। কোন দুর্যোগ না এলে সরিষায় বাম্পার ফলনের পাশাপাশি সরিষা থেকে সংগ্রহকৃত মধু বিক্রি করে লাভবান হবেন ভ্রাম্যমাণ মৌচাক খামারিরা। সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি খামার করে মধু চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। সরিষা জমির পাশে মৌ-বঙ্ ১০/১৫ দিন রেখে নিদিষ্ট সময় শেষে সেখান থেকে বঙ্টিকে তুলে নিয়ে মধু সংগ্রহে এভাবে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ-চাষীরা। বঙ্ প্রতি সংগ্রহ হচ্ছে ৪/৫ কেজি মধু। যা তিনশ’ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। খামারগুলো থেকে অনেকেই নগদ টাকা দিয় টাটকা মধু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ক্রেতারা জানালেন সরিষার মধু খুবই সুস্বদু। খেতে অনেক মজা। ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফর রহমান সিকদার জানিয়েছেন, এ বছর ধামরাই উপজেলায় পাঁচ হাজার আটশ’ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। বিসিক থেকে ট্রেনিং নিয়ে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ছোট-বড় ছোট খামারীরা মৌ-বঙ্ এর মাধ্যমে ফসলি জমি ঘিরে গড়ে তুলেছেন মধু সংগ্রহ বাঙ্। চলতি মৌসুমে ধামরাই থেকে ৮/১০টন মধু আহরণ করা সম্ভব হবে। সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি থাকলে তা স্বাভাবিকের চেয়ে ১৬ থেকে ২১ ভাগ ফলন বাড়ে। সরিষা ফুলে মৌমাছি যে পরাগায়ণ ঘটায় তাতে সরিষার দানা ভালো হয়। এতে সরিষার ফলনও বাড়বে। যেখানে সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি নেই সেখানে সরিষার ফলন কম হয়। সরিষা ক্ষেতে মধুর খামার গড়ে তোলার জন্য কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের উৎসাহ জুগিয়ে আসছে। এর ফলে কৃষক দুদিক থেকে লাভবান হবেন। সরিষা থেকে সংগ্রহকৃত মধু বিক্রি করে মৌ চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। পাশাপাশি সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি থাকায় সরিষার ফলন বৃদ্ধি পাবে চাষিরা। সরকারের পক্ষ থেকে আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা পেলে এ উপজেলায় বেশি করে সরিষা চাষ ও মৌ চাষ করতে পারবেন বলে মনে করেন ধামরাই উপজেলার কৃষকরা।