গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপ। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক গাজরই চীনদেশে উৎপাদিত হয়।
নানা ধরনের তরকারিতে গাজর ব্যবহৃত হয়। গাজর কাঁচা খেতেও বেশ ভালো লাগে। সালাদ তৈরিতে শশার সঙ্গে গাজর ব্যবহার করা হয়। গাজরের সুস্বাদু হালুয়াও তৈরি করা যায়। গাজর শীতকালীন সাধারণ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সব চাইতে ভালো সবজি। গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলে সর্দি-ঠান্ডা ও কাশি কমে যায়।
এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ বা ফাইবার, যা রক্তের কোলেস্টরল কমায়। গাজর দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহযোগিতা করে ও স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার গতি কমিয়ে দেয়। ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সহায়ক। মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গাজর চাষিদের অনেকে ভরা মৌসুমের আগে বাজার ধরতে আগাম গাজর চাষ সম্পন্ন করে জমিতে বাড়তি পরিচর্যা শুরু করেন। এবার প্রায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে আগাম গাজর চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার জয়মন্টপ, বায়রা, রামনগর, বাহাদিয়া, ছয়ানী, খান বানিয়ারা, গোয়াল বাথান, দশানী, দেওলী, ভাকুম, দুর্গাপুর, মিরেরচর, আজিমপুর, কিটিংচর, ভুমদক্ষিণ, ধল্লা-বাস্তা, কানাই নগর, বেগুনটিউরী, নিলটেক, কাংসাসহ বেশ কিছু এলাকার প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার কৃষক এই গাজর চাষের আওতায় রয়েছে। সারা উপজেলায় এবার প্রায় সাড়ে ১২শ’ হেক্টর জমিতে গাজর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বেসরকারিভাবে এর লক্ষ্যমাত্রা আরও অনেক বেশি বলে চাষিরা জানান। উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়ন গাজর চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে।
সেখানকার মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষিকর্মী দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, এ উপজেলার মধ্যে একমাত্র জয়মন্টপ ইউনিয়নেই প্রায় ৬শ’ হেক্টর জমিতে গাজর চাষ হয়।
ওই ইউনিয়নের বাহাদিয়া গ্রামের গাজর চাষি মনু সিকদার বলেন, চলতি মৌসুমে নিজের ও বর্গা জমিসহ ৩০ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ইতোমধ্যে ১৫ বিঘা জমিতে আগাম গাজর চাষ সম্পন্ন হয়েছে। মনু সিকদারের জমির আশপাশেও এ রকম চিত্র আরও দেখা গেছে। সায়েস্তা ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার রাজিব মোল্লা নিজস্ব ১১ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেন। উপজেলার কাংশা, মিরেরচর, ভাকুম, বাহাদিয়া, ছয়ানী, এলাকাতেও ঘুরে দেখা গেছে চাষিরা আগাম গাজর চাষ করে নিয়মিত পরিচর্যা করে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, সিংগাইরের গাজর চাষের জন্য খুবই খ্যাতি রয়েছে। গাজর চাষে বীজ সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় সার ও কীটনাশকের যেন কোনো ঘাটতি না হয় এবং চাষিরা নির্বিঘ্ন পেতে পারে সংশ্লিষ্টদের সে ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।