শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছে গুরুদাসপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

শিক্ষার দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছে গুরুদাসপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। ১১ জন ছাত্র-ছাত্রী, খোলা মাঠ, দুর্বাঘাস, চক, ডাস্টার-ব্লাকবোর্ডেই শুরু। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার শতবছরে বদলেছে চিত্র। পরিবর্তন এসেছে শিক্ষা কার্যক্রমে। শিক্ষার মানোন্নয়নে আধুনিক ভবন, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট কানেকশন সবই স্থাপন করা হয়েছে বিদ্যালয়ে।

১৯১৭ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী কর্মকারের পূর্বসূরী ও ভোলানাথ কুন্ডুর উদ্যোগে উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে সময় ভোলানাথ কুন্ডু, গোপীনাথ কুন্ু্ভ্র, গোবিন্দ কুন্ডু, দেবনাথ কর্মকার মিলিতভাবে বেশ কয়েক একর জমি দান করেন। সেখানে টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। সে সময় বিদ্যালয়টির নাম ছিল ‘জিসি স্কুল’ (গুরুদাসপুর-চাঁচকৈড়)। যাত্রা শুরু হয় ১১ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে। তখন বিরেশ্বর মজুমদার নামে এক ব্যক্তি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪১ সালে এটি মাইনর স্কুল থেকে উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে স্বীকৃতি পায়। আশপাশের একটি মাত্র বিদ্যালয় হওয়ায় চলনবিলের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে-মেয়ে এখানে ভর্তি হয়। ওই সময় কলকাতা বোর্ডের অধীনে এখানে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরে চাহিদা অনুযায়ী ২০০ ফিট দৈর্ঘ্যের একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ের ভোগ করা জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮৬ শতাংশে। এর মধ্যে ১৯৩ শতাংশ আয়তনের একটি সুবিশাল খেলার মাঠ রয়েছে। বর্তমানে মাঠের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণে রয়েছে প্রশাসনিকসহ তিনটি একাডেমিক ভবন। পূর্বে ছাত্রনিবাস আর পশ্চিমে রয়েছে গুরুদাসপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ে দুটি আইসিটি ল্যাব, আটটি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ এবং ২ হাজার বই সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার রয়েছে। বিদ্যালয়ের জেনারেল শাখায় ১৭ জন শিক্ষক, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পাঁচজন এবং ভোকেশনাল শাখায় শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ১৩ জন। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ৮৯১ জন। শত বছরের বিদ্যালয়টি চলনবিলের ঐতিহ্য ধারণ করে।

ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়ের অনেক কৃতী শিক্ষার্থী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফলাফলের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পরে সরকারিকরণ হচ্ছে এটি। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নিদের্শনা ও কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন ও সরকারিকরণের নেপথ্যে রয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুসের সক্রিয় সহায়তা।

প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সরকারের প্রচেষ্টায় প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. আবুল কাসেম বলেন, নিয়মানুবর্তিতা ও শিক্ষার গুণগতমান ধরে রাখাসহ আধুনিক শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টা আর পরিচালনা কমিটির তদারকিতে বিদ্যালয়টিতে ভালো ফলাফল নিশ্চিত হয়েছে।

সংসদ সদস্য আবদুল কুদ্দুস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই আলোকে গুরুদাসপুর পাইলট মডেল বিদ্যালয়কে বেছে নেওয়া হয়েছে।