গতকাল ‘প্রায়োগিক গবেষণাকেন্দ্র’ স্থাপনে কৃষি ভবনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন চায়না ন্যাশনাল সিড গ্রুপ কম্পানির পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট বিংচুয়ান তিয়ান এবং বিএডিসির পক্ষে চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান
অ- অ অ+
কৃষি উন্নয়নে দেশে ‘প্রায়োগিক গবেষণাকেন্দ্র’ স্থাপন করা হচ্ছে। চীন সরকারের অর্থায়নে গবেষণাকেন্দ্রটি পরিচালিত হবে।
এতে সহায়তা দেবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও ‘নিশ্চিত’ খাদ্য নিরাপত্তা বিধানে অন্যতম সহায়কের ভূমিকা পালন করবে এই গবেষণাকেন্দ্র। গতকাল সোমবার রাজধানীর বিএডিসি কৃষি ভবনে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এতে চীন সরকারের চায়না ন্যাশনাল সিড গ্রুপ কম্পানি লিমিটেডের পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট বিংচুয়ান তিয়ান এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) পক্ষে চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান স্বাক্ষর করেন।
বিএডিসির কর্মকর্তারা জানান, প্রায়োগিক গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য দর্শনার অদূরে দত্তনগর ফার্মে এ কেন্দ্রের প্রধান কার্যালয় স্থাপিত হবে। থাকবে কেন্দ্রসংলগ্ন গবেষণা মাঠও। এ জন্য এ খামারে ৩৭ বিঘা জমি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে এ কাজে আগামী দুই বছরে ১৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে চীন সরকার। এই বিনিয়োগের ফলে খরা ও লবণাক্ত জমিতে ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত জাত উদ্ভাবন, দেশীয় গবেষক ও কৃষকদের ট্রেনিং, ফসলের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকাসহ নানা খাতে কার্যকরী সহায়তা মিলবে।
চুক্তিসংক্রান্ত অনুষ্ঠানে জানানো হয়, খরাপ্রবণ উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততার কারণে প্রায় ১০ লাখ হেক্টর ফসলি জমিতে আশানুরূপ ফলন মিলছে না। কিন্তু বিস্তৃত এ এলাকায় উন্নতমানের খরা ও লবণাক্ত সহিষ্ণু জাতের চারা রোপণের মাধ্যমে ফসল চাষ করতে পারলে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরো নিশ্চিত হবে। জনবহুল বাংলাদেশ অল্প জমিতে অধিক ফলন উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বে নজির সৃষ্টি করবে।
কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে দেশের খরাপ্রবণ এক বিঘা জমিতে সাত থেকে ১০ মণ এবং লবণাক্ত জমিতে পাঁচ থেকে আট মণের বেশি ধান উৎপাদন হয় না। সে ক্ষেত্রে খরা ও লবণ সহিষ্ণু উন্নত জাত চাষ করা হলে শুধু ধানের ক্ষেত্রে বিঘাপ্রতি গড়ে ২০ থেকে ৩৫ মণ উৎপাদন সম্ভব। জানা যায়, এরই মধ্যে উন্নতমানের ৫৬টি জাতের শস্য গত দেড় বছর ধরে মাঠ পরীক্ষায় সফল হয়েছে।
চায়না ন্যাশনাল সিড গ্রুপ কম্পানির বাংলাদেশি কো-পার্টনার গোল্ডেন বার্ন কিংডম প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক শাহদাব আকবর বলেন, ‘প্রায়োগিক গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি আরো সমৃদ্ধ হবে। এ উদ্যোগ কৃষির উন্নয়ন, স্থিতিশীল খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনসহ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও কৃষিক্ষেত্রে নানাবিধ ঝুঁকি ও হুমকি মোকাবিলা করবে।