বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ আগামী দিনের কৃষি বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ আগামী দিনের কৃষি
বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল বদ্বীপপ্রধান দেশ; যা প্রধানত পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীবাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ। নদী শাসিত এ দেশের ভূমিরূপ, ভৌগোলিক অবস্থান, পানিসম্পদ, ভূপ্রতিবেশ প্রভৃতি অনন্যবৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এ দেশে ৮০ শতাংশ এলাকা এসব নদীর প্লাবনভূমিতে অবস্থিত। দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা বিশেষত কৃষি ও অর্থনীতির চালিকাশক্তি এসব নদী ও তার প্লাবনভূমি। কারণ একদিকে বর্ষাকালে প্রচুর পানি ও পলি নদীগুলো দিয়ে বঙ্গোপসাগরে ধাবিত হয় এবং অসংখ্য চরের সৃষ্টি করে, অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করায় অর্থাৎ পানিসম্পদ ব্যবস্থায় মানবসৃষ্ট পরিবর্তন সংঘটিত হওয়ায় প্রাকৃতিক পানিচক্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে পানির গুণগত মান ও প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে, লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। মিঠা পানির স্বল্পতা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসবই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি এবং এখনো কৃষিনির্ভর দেশের অর্থনীতিকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে। এছাড়া ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন— খরা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদীভাঙন আমাদের নিত্যসঙ্গী। এর সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি তো রয়েছেই। আগামী দশকগুলোয় বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্তে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ইত্যাদির জন্য বন্যা, খরা, সাইক্লোন এগুলোর ঝুঁকি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছে (আইপিসিসি)। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করাও আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণে বাংলাদেশের জন্য সার্বিকভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে তৈরি করা হয়েছে বদ্বীপ পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনায় লক্ষ্য অর্জনে কৃষি, মত্স্য, শিল্প, বনায়ন, পানি ব্যবস্থাপনা, নৌ-যোগাযোগ, স্যানিটেশন— সব খাত বিবেচনায় রেখে একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়েছে। বদ্বীপ পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যই হলো— প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায় রেখে কৃষি, পানিসম্পদ, ভূমি, শিল্প, বনায়ন, মত্স্যসম্পদ প্রভৃতিকে গুরুত্ব প্রদানপূর্বক সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুষ্ঠু পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্যনিরাপত্তা ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং সে লক্ষ্যে ধাপে ধাপে বাস্তবসম্মত একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি (৫০ থেকে ১০০ বছর) মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নির্ধারণ করা।
সমন্বিত ও অভিযোজনমূলক এ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন-সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত, পানি ব্যবহারে অধিকতর দক্ষতা ও পানির পর্যাপ্ততা বৃদ্ধি, সমন্বিত, টেকসই নদী ও নদীমোহনা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণসহ এসবের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত, অন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও ন্যায়সঙ্গত সুশাসন গড়ে তোলা এবং ভূমি ও পানিসম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়গুলো সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের মোট জমির মধ্যে ৫৮ শতাংশ (৮.৫৩ মিলিয়ন হেক্টর) আবাদযোগ্য। দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪৭ শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত। ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৫ শতাংশ, যা ১৯৭৩ সালে ছিল ৫০ শতাংশ। ২০৪০ সাল নাগাদ জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদান হবে ৭ শতাংশ বা কিছু কম। মূলত দেশের জিডিপির পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জিডিপিতে শিল্প, সেবা ইত্যাদি খাতের অবদান ক্রমান্বয়ে বাড়ায় আনুপাতিক হারে কৃষির অবদান তুলনামূলকভাবে হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে ২০১৫ সালে কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য থেকে রফতানি আয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে মাত্র ৪১ হাজার বর্গকিলোমিটারের দেশ নেদারল্যান্ডস কৃষিপণ্য ও কৃষিজাত পণ্য রফতানি করে গত বছর ৫৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
দেশের কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ, যা বদ্বীপ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে— (১) উৎপাদন ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা হ্রাস। (২) সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং খাদ্যনিরাপত্তা ও গুণগত মান নিশ্চিত করা। (৩) যথোপযুক্ত প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিতে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি, যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকায়ন ও ফসলে বৈচিত্র্য আনয়ন। (৪) উৎপাদন/ফলন ঘাটতি কমানো। (৫) জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাত মোকাবেলায় জনগণের সক্রিয়তা বৃদ্ধি। (৬) কৃষি খাতে কম উৎপাদনশীলতা মোকাবেলা এবং এ খাতের আধুনিকীকরণ। (৭) যথোপযুক্ত মার্কেট লিংকেজ ও ভ্যালু চেইন সৃষ্টি। (৮) কৃষি খাতে শ্রমশক্তির অভাব মোকাবেলা এবং (৯) ক্রমবর্ধমান পরিবেশগত অবনমন ও জীবন-জীবিকার বিপর্যয়।
বাংলাদেশ বদ্বীপ পরকিল্পনা ২১০০-তে কৃষির জন্য চারটি মূল কৌশলগত পন্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে—
১. উন্নয়ন অভিযাত্রায় ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া—
ক) জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজনমাত্রা এবং পরিমাণ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা দূর। খ) কৃষিতে আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনয়নে জ্ঞানচর্চা ও গবেষণায় গুরুত্বারোপ।
২. টেকসই, ক্রমবর্ধমান পরিবেশবান্ধব কৃষি উৎপাদন পদ্ধতি গ্রহণ—
ক) ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্য কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ। খ) একই পরিমাণ জমিতে তুলনামূলকভাবে অধিক ফসল উৎপাদন। গ) পরিবেশগত পরিষেবার উন্নয়নের মাধ্যমে ঘাত-সংনমনতা বৃদ্ধি করে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনয়ন। ঘ) কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় দক্ষতা বৃদ্ধি। ঙ) উদ্ভাবনী উদ্ভিদ প্রজনন প্রযুক্তি, জৈব নীতি, স্থানীয় আদিবাসীদের লোকজ জ্ঞান কাজে লাগানো ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৩. কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির স্থিতিস্থাপকতা/ঘাত-সংনমনতা বৃদ্ধি—
ক) মাটি ও এর গুণাগুণের যথোপযুক্ত ব্যবস্থাপনা। খ) প্রাকৃতিকভাবে নাইট্রোজেন সংবন্ধনের জন্য ডালজাতীয় ফসলের চাষ বৃদ্ধি, যা একই সঙ্গে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরতা কমানোসহ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস করবে। গ) ক্রমহ্রাসমান/ক্রমবৃদ্ধিমান বৃষ্টিপাতে ক্ষেতের পানি আহরণ জলাধার নির্মাণ, সংরক্ষণ ও ধারণক্ষমতার উন্নয়ন। ঘ) পরিবর্তিত জলবায়ুতে আগাছা ও রোগবালাইয়ের প্রকোপ বাড়বে, যা মোকাবেলায় এ বিষয়ে অধিকতর জ্ঞান ও উন্নত গবেষণা পরিচালনা।
৪. কৃষি উৎপাদন এবং জীবন-জীবিকায় বৈচিত্র্য আনয়ন—
ক) প্রাকৃতিক ভূদৃশ্য ও জীবন-জীবিকার বৈচিত্র্য আনয়ন। খ) সরকারি পণ্য ও সেবা কৃষকদের কাছে সহজলভ্য করে তাদের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি। গ) উপকূলীয় ও সামুদ্রিক সম্পদ খাতের উন্নয়নের জন্য সমন্বিত উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন। ঘ) পরিবেশগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোয় জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা আনয়নের মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মঙ্গলসাধন এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্থিতিস্থাপকতা/ঘাত-সংনমনতা বৃদ্ধি পদক্ষেপ। ঙ) প্রতিবেশে জীববৈচিত্র্য পরিবর্তন ও এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ এবং কৃষিজমি থেকে কার্বন গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনা। চ) উপকূলীয় এলাকা, জলাভূমি, বসতবাড়ি ও সামাজিক বনায়ন জোরদার করা এবং সবুজবেষ্টনী গড়ে তোলা। ছ) বনায়ন সেক্টরে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ জোরদার করা।
হাওড় অঞ্চলের কৃষির জন্য করণীয় কিছু প্রস্তাব—
উন্নয়ন কৌশল: ক) উন্নত পানি সরবরাহ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় পদক্ষেপ। খ) কৃষি উন্নয়নের সঙ্গে খাদ্যনিরাপত্তা সংহত করা। গ) জীববৈচিত্র্য ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে প্রয়োজনে ড্রেজিং। ঘ) সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর প্রসার এবং জীবনমানের উন্নতি। ঙ) বর্ষায় জলে ডোবা উন্নত ভৌত অবকাঠামো। চ) কৃষি ব্যতীত অন্যান্য নিম্ন জীবন-জীবিকার উৎস তৈরিতে বিশেষায়িত এন্টারপ্রাইজ ও কারিগরি উন্নয়ন।
উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষির জন্য করণীয় কিছু প্রস্তাব—
উন্নয়ন কৌশল: ক) পানিসম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নতি ও পোল্ডারগুলোর উচ্চতা বাড়ানো। খ) পোল্ডারসহ অন্যান্য পানিসম্পদ অবকাঠামোর প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন এবং তাদের যথা প্রয়োজন রক্ষণাবেক্ষণ। গ) বিশেষত উন্নততর খামার প্রযুক্তিতে লবণাক্ততার সঙ্গে খাপ খাইয়ে উপকূলীয় কৃষিতে উন্নততর খামার প্রযুক্তির ব্যবহার। ঘ) কৃষি/শস্য নির্ভরতা থেকে সরে এসে পর্যটন, সামুদ্রিক মত্স্য আহরণ, বন্দর ইত্যাদি বিকল্প জীবন-জীবিকা গ্রহণে উত্সাহ প্রদান। ঙ) স্থানীয় ম্যানুফ্যাকচারিং খাতকে জোরদার করে এ অঞ্চল থেকে জীবিকার সন্ধানে স্থানীয় জনগণের গমন প্রবণতা হ্রাস করা।
পার্বত্য চট্টগ্রামের কৃষির জন্য করণীয় কিছু প্রস্তাব
উন্নয়ন কৌশল: ক) সার্বিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির প্রয়াস; জনতাত্ত্বিক সম্পদ সংরক্ষণ। খ) জুম চাষে টেকসই ও উন্নত অভিযোজনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। গ) প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নিরবচ্ছিন্ন কৃষি উপকরণ, অন্যান্য সহায়তা প্রদান এবং বাজার ব্যবস্থা ও ভ্যালু চেইনের উন্নয়ন।
বরেন্দ্র ও খরাপ্রবণ অঞ্চলের কৃষির জন্য করণীয় কিছু প্রস্তাব
উন্নয়ন কৌশল: ক) তুলনামূলক কম সময়ে তোলা যায় এমন খরাসহিষ্ণু ধানের প্রজাতি উদ্ভাবন ও উচ্চফলনশীল রোগবালাইমুক্ত রবিশস্য চাষ। খ) শুষ্ক মৌসুমে পানিস্বল্পতা নিরসনের লক্ষ্যে যৌথভাবে গঙ্গা অববাহিকাভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ। গ) পানি সংরক্ষণ জলাধার তৈরি, যা শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানি সরবরাহসহ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ঘ) তুলনামূলকভাবে কম পানি ব্যবহার করে এমন খাদ্যশস্যের জাত উদ্ভাবন, বোরো চাষ সম্ভাব্য স্থানে আগাম আউশ চাষে উত্সাহ প্রদান।
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত অন্যান্য খাতের তুলনায় বাংলাদেশের কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও জীবন-জীবিকা সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করে তুলবে। আর এজন্যই জলবায়ু পরিবর্তন ও এর অভিঘাতকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার একটি দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। এ অভিঘাত মোকাবেলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। ‘বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’সহ দেশের সব উন্নয়ন পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করে উন্নয়ন অভিযাত্রার মূলধারায় সম্পৃক্ত করার চেষ্টা নেয়া হয়েছে।
জলবায়ু অভিযোজন মূল বিষয় হলেও পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব প্রশমনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে স্বল্প কার্বন নিঃসরণকারী উন্নয়ন প্রক্রিয়া ও উন্নয়ন ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন প্রশমন এবং কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও জীবন-জীবিকাকে এক করে দেখতে হবে। আর এজন্যই প্রয়োজন বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০, যা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশে বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত অভিযোজনমূলক পরিকল্পনা, যা একটি দীর্ঘ রূপকল্পের আওতায় দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রার বিপরীত কৌশল এবং এ কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ।
লেখক: অর্থনীতিবিদ এবং সদস্য (সিনিয়র সচিব)