২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা; যা এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ দশমিক ২০ শতাংশ কম। একইসঙ্গে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায়ও এই খাতের রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) নভেম্বর মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চা পাতা তুলছেন এক শ্রমিক। এতে আরও জানানো হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৫৯ কোটি ৬০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে চা রপ্তানিতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে এ খাতে আয় হয়েছে ৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৭ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি।
জুলাই-অক্টোবর মাসে সবজি রপ্তানিতে ২ কোটি ৮১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এ সময়ে আয় হয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। তবে আগের অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসের তুলনায় এ খাতের রপ্তানি আয় ৫৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে তামাকজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৩ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার; যা এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ০৩ শতাংশ বেশি। তবে আগের অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসের চেয়ে এই খাতের আয় ২৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমেছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে ফল রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কম। আলোচ্য সময়ে মসলা জাতীয় পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ কোটি ৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। এই সময়ের মধ্যে এই খাতে আয় হয়েছে ৯২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। তবে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসের মসলা জাতীয় পণ্য রপ্তানি আয়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ৪ মাসের আয় ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে শুকনো খাবার রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। যা এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের একই সময়ের আয়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ কম।
অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৮ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার। যা এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ কম। তবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ খাতের আয় ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে অর্থবছরের প্রথম চার মাসে মাছ রপ্তানিতে মাছে (হিমায়িত ও জীবিত) আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার বা ১ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা। চলতি অর্ধবছরের অক্টোবর মাসে এ খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার বা ৪৬৯ কোটি টাকা।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে শুধু চিংড়ি রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। যা মোট মাছ রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) নভেম্বর মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। এতে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হিমায়িত ও জীবিত মাছ রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৫৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে মৎস্য রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে এ সময়ে আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর মেয়াদের তুলনায় এবার এ খাতের বৈদেশিক মুদ্রার আয় ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে হিমায়িত ও জীবিত মাছ রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১৭ কোটি ৮৮ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে জীবিত মাছ রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার; যা এই সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ খাতের আয় ৭৯ দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিতে এ খাতের আয় হয়েছিল ২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ কম বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে এ খাতে। একইসঙ্গে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও এ খাতের আয় ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ কমেছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে চিংড়ি রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ কোটি ৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ে চিংড়ি রপ্তানিতে আয় হয়েছিল আয় হয়েছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।