রাসায়নিক পরীক্ষাগার হচ্ছে প্রতিটি বিভাগে

দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরেই স্থাপন করা হচ্ছে আধুনিক রাসায়নিক পরীক্ষাগার। মাদক মামলার আলামত কিংবা ভিসেরাসহ স্পর্শকাতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে এসব পরীক্ষাগারে। এতে মাদক সংক্রান্ত মামলার নমুনা যাচাইয়ে চাপ কমবে। এদিকে কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মাদকদ্রব নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) আওতায় রাসায়নিক পরীক্ষাগারগুলো পরিচালিত হবে। এরই মধ্যে ডিএনসির চট্টগ্রামের নবনির্মিত বিভাগীয় কার্যালয়ের চতুর্থ তলায় রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএনসির কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় একটি মাত্র কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারে সব সময়ই ব্যাপক নমুনা পরীক্ষার চাপ থাকে। এ কারণে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে রাজধানীর মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ভবনে স্থাপিত কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারের দুইটি ল্যাবরেটরি কক্ষ আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন হলে মাদক সংশ্লিষ্ট জটিল মামলাগুলোর সহজে সমাধান মিলবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন্স ও গোয়েন্দা) ডিআইজি সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারটি মাদক মামলায় জব্দকৃত আলামতের নমুনা রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য দেশের একমাত্র স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও দেশে মাদক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক জব্দকৃত মাদক আলামতের নমুনার রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট বিনা ফিতে সাত দিনের মধ্যেই দেয়া হয়। নতুন করে বিভাগীয় পর্যায়ে এ পরীক্ষাগার হলে আরও বেশি সুফল পাওয়া যাবে। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ঊর্মি দে জানান, প্রতিটি বিভাগীয় কার্যালয়ে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রস্তুতকৃত চট্টগ্রামের পরীক্ষাগারের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির ২১টি জনবলের পদ সৃষ্টিসহ তা পূরণের কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে অন্য বিভাগগুলোতে কাজ শুরু হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার মাদক মামলার নমুনার রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট দেয়ার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের জন্য একটি মাত্র কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার। এ কারণে বিপুল সংখ্যক মাদক মামলার রিপোর্ট যথাসময়ে দেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না সংশ্লিষ্টদের পক্ষে। এ কারণেই প্রতিটি বিভাগের একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রাসায়ানিক পরীক্ষাগারগুলোর জন্য এরই মধ্যে গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি-ম্যাস স্পেক্টোফটোমেটার (জিসি-এমএস), হাইপারফরমেন্স লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি (এইচপিএলসি), আল্ট্রা-ভাইয়োলেট স্পেক্টোফটোমেটার (ইউভি-ভিআইএস) এবং ফারিয়ার ট্রান্সফরম ইনফ্রা-রেড (এফটিআইআর) যন্ত্রপাতি কেনার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারে কর্মরত পরীক্ষকদের বিদেশে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।