নবায়নযোগ্য শক্তি উত্পাদনে বিনিয়োগের ক্ষেত্র বাংলাদেশ

দেশে নবায়নযোগ্য শক্তির গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌরশক্তি উত্পাদনে বিনিয়োগের জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। নবায়নযোগ্য শক্তি উত্পাদনের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগের আদর্শ ক্ষেত্র।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বাংলাদেশে সৌরপার্কের রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। চীনের সোলারল্যান্ড-হুয়াই ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শক্তি ইনস্টিটিউট এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেমিনারে চীনা কোম্পানি হাওয়াই ফিউশন সোলার বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ ও চট্টগ্রামে ২২৫ কিলোওয়াট শক্তি সম্পন্ন দুটি অনগ্রিড প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। উত্তরবঙ্গে ইনগ্রিণ সরিষাবাড়ি সোলার প্লান্ট লিমিটেডের সঙ্গে ফিউশন সোলার ২৫ মেগাওয়াট অনগ্রীড প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। আর চট্টগ্রামে মোস্তফা রিনিউএবল এনার্জি লিমিটেডের সঙ্গে ২০০ কিলোওয়াট শক্তিসম্পন্ন সৌর প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। আর দুই প্রকল্পেই টেকনিক্যাল সহায়তা করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শক্তি ইনস্টিটিউট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম, স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম এমপি, অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, চীনের সোলারল্যান্ড, হুয়াই’র জেনারেল ম্যানেজার মার্টিন ই. থাম চি অন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ঢাবি শক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুল হক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ড. তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তি ও সৌরশক্তির উত্পাদন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সরকার ব্যাপক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বে বিদ্যুত্ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তি বিষয়ে সরকার বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও গবেষণায় সহায়তার কেন্দ্র চালু করেছে। এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের হুয়াই কর্তৃপক্ষ আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।

আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির গুরুত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের সাথে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের মধুর সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে সৌরশক্তির উন্নয়ন ও প্রসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হুয়াই এর উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

উপাচার্য বলেন, দেশের সীমারেখা থাকে কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোনো সীমারেখা নেই। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সীমারেখা অতিক্রম করে ঢাবি’র সাথে সৌরশক্তি বিষয়ক আধুনিক প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করায় সোলারল্যান্ড, হুয়াই কর্তৃপক্ষকে তিনি ধন্যবাদ জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নবায়ণযোগ্য শক্তি বিষয়ে দক্ষ জনবল তৈরিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মূল প্রবন্ধে ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশের শক্তির ৬৪ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস ও ২ শতাংশ অন্যান্য উত্স থেকে যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। বর্তমানে ১০ হাজার কিলোওয়াট শক্তির চাহিদা থাকলেও উত্পাদিত হচ্ছে ৬ হাজার কিলোওয়াট। ২০২০ সালে এই চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ১৮ হাজার কিলোওয়াট। তখন উত্পাদন সম্ভব হবে মাত্র ১০ হাজার কিলোওয়াট। বিদ্যুতের এই ঘাটতি মেটাতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।