চিরিরবন্দর উপজেলা সদর থেকে এক কি.মি দূরেই মিলপাড়া গ্রাম। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কল্পনা আর চিন্তা শক্তি বিকশিত করার লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয়েছে এবি শিশু বিকাশ কেন্দ্র। যেখানে শিশুদের কাঁধে নেই কোনো বইয়ের বোঝা, শ্রেণিকক্ষে নেই কোনো পাঠ্যপুস্তক, নেই পড়ার চাপ। শিক্ষক আছেন, কিন্তু নেই কোনো চোখ রাঙানি শাসনের বালাই। পুরোপুরি মাতৃস্নেহে ছড়া গান, গল্প আর নানা রকম খেলায় মাতিয়ে রাখা হয় শিশুদের। এতে বাড়ছে শিশুদের জ্ঞানের পরিধি আর কাটছে ভয় ও জড়তা।
সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের বিকশিত করার লক্ষ্যে ব্যক্তি উদ্যোগে উপজেলার মিলপাড়া এবি শিশু বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তুলে সেখানে শিশুদের বিকশিত করা হচ্ছে। এখানে শিশুর সংখ্যা ১৯ জন। এদের সবার বয়স তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। শুধু মিলপাড়া নয়, উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের হযরতপুর মন্ডলপাড়া, ঘোনাপাড়া, পালপাড়া, মাঝাপাড়া, থানাপাড়া, ফকিরপাড়া, শহিদ শাহজাহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাপাড়া ও হাজীপাড়ায় গড়ে তোলা হয়েছে আরো ১০টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র। এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উঠানের ফাঁকা স্থানে বাঁশের চাটাইয়ে ঘেরা বেড়াসহ টিনের ছাউনি দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এক একটি শ্রেণিকক্ষ। এর ভেতর বস্তা বিছিয়ে সেটির ওপর বসেই খেলাধুলার মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে শিশুরা।
শিশু বিকাশ কেন্দ্রের প্রকল্পের উপ-পরিচালক জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, উপজেলার ১১টি শিশু কেন্দ্রে ২০১ জন শিশু লেখা-পড়া করছে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে শিক্ষিকা রয়েছেন। তারাই শিশুদের দেখাশোনা করেন। এ পর্যন্ত ৮৮৩ জন শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে বিকশিত হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে শিশু বিকাশ কেন্দ্রগুলো খোলা থাকে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির আগে শিশুদের লেখাপড়ার মনোভাব সৃষ্টির জন্যই কাজ করছে শিশু কেন্দ্রগুলো।