সাথী ফসলে দ্বিগুণ লাভ

টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার গজারিয়া গ্রামের স্বপ্নবাজ যুবক মোসলেম উদ্দিন। লেবু চাষ করে পেয়েছেন সফলতা। এ সফলতাকে কেন্দ্র করে মোসলেম এবার একই জমিতে মাল্টা, বরই ও মাষকলাই চাষ করেছেন। এতে একই খরচে দ্বিগুণ-তিনগুণ লাভ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এসব সাথী ফসলেই বদলে যাচ্ছে মোসলেমের ভাগ্য।
সরেজমিন জানা যায়, মোসলেম উপজেলার কীর্তনখোলা-ডাবাইলপাড়া সড়কের পাশে স্থানীয় কৃষকের কাছ থেকে প্রতি বছর ১ লাখ ৬ হাজার টাকা চুক্তিতে ১১ বছরের জন্য সাড়ে ৪ একর জমি লিজ নিয়ে একটি ফলের বাগান গড়ে তোলেন। সাথী ফসল হিসেবে প্রথমবারের মতো বাগানে বরই ও মাল্টা মাষকলাই চাষ করেছেন। তার এ উদ্যোগ অন্য কৃষকের মধ্যেও আগ্রহ জাগিয়েছে। মোসলেমের জমিতে মাষকলাইয়ের ক্রমবর্ধমান সবুজ পাতা, তার ফাঁকে মাল্টা গাছ, মাঝে মাঝে ফুলে ফুলে ভরা ছোট ছোট বরই গাছ। এ যেন এক মন ভরানো অপরূপ দৃশ্য।
মোসলেম জানান, এভাবে একই সময়ে অন্য ফসলের সঙ্গে সাথী ফসল চাষ করলে উৎপাদন খরচ কম লাগে এবং লাভ বেশি হয়। সাড়ে ৪ একর জমিতে ১৫০ থেকে ২০০ মণ মাষকলাই হবে বলে আশা করছেন মোসলেম। বাজার ভালো হলে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার মাষকলাই বিক্রি করা যাবে বলে তিনি জানান। মোসলেম আরও জানান, সাথী ফসল চাষে বাড়তি কোনো খরচ নেই। একই খরচে জমি তৈরি, পরিচর্যা, সার প্রয়োগ ও কীটনাশক প্রয়োগ করা যায়; লাভও পাওয়া যায় দ্বিগুণ-তিনগুণ। মোসলেম তার জমিতে আগাম জাতের ৮০০টি টক-মিষ্টি বরই গাছের পাশাপাশি ৮০০ মাল্টার চারা লাগিয়েছেন। এরই মধ্যে ছোট ছোট বরই গাছগুলোয় বরই ধরতে শুরু করেছে। দেশীয় বরই বাজারে আসার ২ মাস আগেই তিনি এ বরই বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান। এর আগে মোসলেম উদ্দিন উপজেলার গজারিয়া এলাকায় সাড়ে ৬ একর জমি লিজ নিয়ে সিটসেল জাতের লেবু চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। ওই জমি থেকে প্রতি বছর লেবু ও চারা কলম বিক্রি করেই ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আয় করেছেন। সফল চাষি মোসলেম বলেন, বরই ও মাল্টা বাগানে চাষ করা মাষকলাই থেকে বাম্পার ফলনের আশা করছি। আমার বাগান দেখে স্থানীয় কৃষক আগ্রহ নিয়ে এখন পরামর্শ চাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাইজুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, সখিপুরের মাটি চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী। সাথী ফসল চাষের যে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, মোসলেম তারই উদাহারণ। সাথী ফসল চাষে আমরা কৃষককে আরও উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।