মিরাজকে বাড়ি বানিয়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রী

মেহেদী হাসান মিরাজ এখন বড় তারকা। দেশের গর্ব। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ১৯ উইকেট নিয়ে একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে। নিজের পারফরম্যান্স দিয়েই তিনি নাম ছড়িয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বে। কিন্তু এত কিছুর পরও খুলনার খালিশপুরের দক্ষিণ কাশিপুর এলাকায় ছোট্ট ভাড়া বাড়িটায় তার বাস, সেখানেই মা-বাবা আর ছোট বোনকে নিয়ে সাজানো-গোছানো সুখের সংসার।
খালিশপুরে টিনের চালের সেই বাড়িতে সুখ থাকলেও হয়তো স্বাচ্ছন্দ্য নেই। সে বাড়ি গ্রীষ্মের চড়া রোদে তেতে ওঠে, বৃষ্টি হলেই উঠোনে জমে যায় প্যাঁচ প্যাঁচে কাদা। দেশকে এত বড় গৌরব এনে দিলেন যিনি, তার ও তার পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী মিরাজ ও তার পরিবারের জন্য একটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ জন্য একটি উপযুক্ত স্থান খুঁজে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে আশরাফুল আলম খোকন নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবারের জন্য আবাসিক বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে খুলনার জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। বাড়ি করার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজে বের করে এই ব্যবস্থা নেবে স্থানীয় জেলা প্রশাসন।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে ১৯ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়া মিরাজকে মঙ্গলবার সংবর্ধনা দিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। খুলনা সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের কাছে মিরাজের পরিবারের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দেয়ার আবেদন জানানো হয়। একদিন যেতে না যেতেই সুখবরটা পেয়ে গেল মিরাজের পরিবার। এখন শুধু উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পাওয়ার অপেক্ষা।
মিরাজ এখন হালের সেনসেশন, বিশ্ব ক্রিকেটের বিস্ময়। কয়েক দিনের ব্যবধানেই এই অলরাউন্ডার এখন দেশের ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন। বিশ্ব দরবারে তিনি এখন দেশের গর্ব। বলতে গেলে তিনি একা হাতেই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটের জনক দেশ ইংল্যান্ডকে। ভবিষ্যতেও এমন সাফল্যের আলোয় দেশকে ভাসাবেন মিরাজ, ভাসবেন নিজেও; এমন প্রত্যাশা সবার।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়েই ৮-১০টা বিদেশ সফর হয়ে গেছে মিরাজের। দেশেও থাকা হয়েছে বহু নামীদামি হোটেলে। আর বিসিবি একাডেমি ভবন তো আছেই। তবে দক্ষিণ কাশিপুরের বাড়িতে এলে সমাপ্তি টেনে দিতে হয় সেই জীবনের। এতে অবশ্য বিন্দুমাত্র আফসোস নেই মিরাজের। ১৯ বছরের এই বিস্ময় বালক তাই বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন, খুলনা ছেড়ে আমি অন্য কোথায় যাব না।
খুলনার খালিশপুরের দক্ষিণ কাশিপুর এলাকায় ছোট্ট ভাড়া বাড়িটায় মিরাজের বাস। সেখানেই বাবা-মা আর ছোট বোনকে নিয়ে সাজানো-গোছানো সুখের সংসার। সুখ থাকলেও সেখানে স্বাচ্ছন্দ্য নেই। টিনের চালার ঘর, গ্রীষ্মের চড়া রোদে তেতে ওঠে। হোটেলের চাকচিক্য নেই, নেই বাড়াবাড়ি আলোর রোশনাই। বৃষ্টি হলেই উঠোনে জমে যায় প্যাঁচপ্যাঁচে কাদা।
দেশকে এত বড় গৌরব এনে দিলেন যিনি, সেই মিরাজ এবং তার পরিবারের এমন জীবন? তা কি করে হয়? বিষয়টা গোচর হতেই মিরাজের পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Loading…