শিল্প খাতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি এন্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৫ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু গতকাল বুধবার প্রধান অতিথি হিসেবে রাজধানীর পূর্বাণী হোটেলে নির্বাচিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
নিজ নিজ শিল্প-কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও উৎপাদিত পণ্যে উৎকর্ষতা সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তৃতীয়বারের মতো এ পুরস্কার দেয়া হয়। ২০১৫ সালের জন্য ৬ ক্যাটাগরির প্রত্যেকটিতে ৩টি করে শিল্প-প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ঢাকার হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ঢাকার এথিক্স অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেড, ইরা ইনফোটেক লিমিটেড ও অলপ্লাস্ট বাংলাদেশ লিমিটেড। ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ঢাকার ডিভাইন আইটি লিমিটেড, পাবনার প্রিন্স কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড ও সাতক্ষীরার মেসার্স রনি এগ্রো ইঞ্জিনিয়ারিং। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে সিরাজগঞ্জের বন্ধন সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (বিএসইউএস), ঢাকার তারা মার্কা ও সিলেটের উইমেন্স ফ্যাশন ওয়াল্ড।
কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ঢাকার মেক্সিম ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি, গাজীপুরের অঙ্গনা বিউটি পার্লার এন্ড স্কিন কেয়ার ও ঢাকার প্রতিবেশী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও কুটির শিল্প উন্নয়ন। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্যাটাগরিতে জামালপুরের যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, চট্টগ্রামের প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড।
পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য সবুজ জ্বালানি ব্যবহার করে শিল্প-কারখানায় সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শিল্পায়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করছে। সরকারের শিল্পবান্ধব নীতি ও উদ্যোগের ফলে দেশে শিল্পায়নের ধারা জোরদার হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় আয়ের শিল্প খাতের অবদান ৩০.৪২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে বলে তিনি জানান।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাংক, বিমা, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানা পশ্চিম পাকিস্তানি ও বিহারিদের হাতে ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় আজ বাংলাদেশে বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। তিনি শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের ওপর গুরুত্ব দেন। এর মাধ্যমে কাক্সিক্ষত উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। উৎপাদনশীলতা আন্দোলনের প্রসার এবং পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের ধারা জোরদারে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি জানান। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্প উদ্যোক্তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুক‚লে এক বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেয়ার দাবি জানান।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, এফবিসিসিআইর সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, এনপিওর পরিচালক অজিত কুমার পাল, পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ আবু আবেদ সাহের, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান চৌধুরী ও উইমেন্স ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী স্বর্ণলতা রায় বক্তব্য রাখেন।