নেপাল, ভুটান ও ভারতকে ট্রানজিট (পণ্য পরিবহন) দিতে মংলা বন্দর এখন প্রস্তুত রয়েছে। এ লক্ষ্যে বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বন্দর জেটিতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বন্দরের ৩ এবং ৪ নম্বর জেটি নির্মাণ ও ১০ ও ১১ নম্বর দুটি কার পার্কি ইয়ার্ড নির্মাণ। এগুলো নির্মিত হলে মংলা বন্দর থেকে পণ্য ওঠানামা করে বছরে ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দীন আহম্মেদ জানান, আগ্রহী দেশসগুলোকে পণ্য পরিবহন সুবিধা দিতে মংলা বন্দর এখনই প্রস্তুত। তিনি বলেন, মংলা বন্দর এখন যে পরিমাণ পণ্য হ্যান্ডলিং (খালাস বোঝাই) করছে, তার দ্বিগুণ পরিমাণ পণ্য খালাসের সক্ষমতা বন্দরের রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ট্রানজিটের পণ্য নিয়ে আসা জাহাজগুলো বন্দর জেটিতে ভেড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি মেগা মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বন্দরের ৩ এবং ৪ নম্বর জেটি নির্মাণ। এ লক্ষ্যে পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় সিঙ্গাপুরের একটি কম্পানির সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে শিগগিরই কাজ শুরু হচ্ছে। খরচ পড়ছে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। জেটি দুটি থেকে অর্জিত মুনাফা ৩০ বছর চুক্তি অনুসারে বন্দর ও অর্থলগ্নি দাতা সংস্থার মধ্যে ভাগাভাগি হবে। এ ছাড়া বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বন্দর সংরক্ষিত এলাকায় মংলা পোর্ট ট্রেড ফেসিনেশন (এম পি টি এফ পি) প্রজেক্টের আদলে ১০ ও ১১ নম্বর দুটি কার পার্কি ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। জেটি চারটি নির্মাণ হলে ট্রানজিট দিলে মংলা বন্দরের কোনো সমস্যাই হবে না। এ খাত থেকে বন্দর পণ্যের ওপর নির্ভর করে কম করে হলেও বছরে ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করবে। এ ছাড়া বন্দর জেটিতে নির্মাণ হচ্ছে বহুতলবিশিষ্ট কার পার্কিং ইয়ার্ড।
এত কিছুর পরও পদ্মা সেতু, ফয়লায় বিমান বন্দর ও মংলা-খুলনা রেল নির্মাণ হলে মংলা বন্দরের গুরুত্ব বাড়বে বলে জানান বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স সুন সিং-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী পাশা ও দুবাই বাংলাদেশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নির্বাহী পরিচালক মো. শামীম আহম্মেদ। এই দুই ব্যবসায়ী আরো বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ হলে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে মংলা বন্দরের দূরত্ব কমবে ৯০ কিলোমিটার। সে ক্ষেত্রে ঢাকার ব্যবসায়ীরা সময় ও অর্থ বাঁচাতে মংলা বন্দরের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়বেন। তখন মংলা বন্দর হবে আরো প্রাণবন্ত ও দৃশ্যমান গতিশীল। এর সঙ্গে মংলা বন্দরের পণ্য পরিবহনে মংলা-মাওয়া সড়ক চার লেনে রূপান্তর করা জরুরি হয়ে পড়বে।