ভাসমান পদ্ধতিতে উত্পাদিত চারাগাছ উপকুলীয় এলাকায় রীতিমতো সবজি বিপ্লব ঘটাচ্ছে। চলমান মৌসুমে বিভিন্ন অঞ্চলে সবজির গাছ রোপণ করা হচ্ছে। যে গাছের অধিকাংশই ধাপ চাষের মাধ্যমে উত্পাদিত। ধাপ চাষ হচ্ছে ভাসমান চাষাবাদের একটি বিশেষ পদ্ধতি। জলাবদ্ধ জমির পানিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া উদ্ভিদকে স্তূপ করে ধাপ তৈরি করা হয়। পরে ওই ভাসমান ধাপের উপরে বিশেষ এ পদ্ধতিতে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজির চারা উত্পাদন করা হয়।
নির্দিষ্ট কয়েক উপজেলার উত্পাদিত চারাই দক্ষিণাঞ্চলের চারার চাহিদা পূরণ করছে। এ পদ্ধতিতে উত্পাদিত লাউ, কুমড়া, শশা, পেঁপে, পুঁই, ঝিঙ্গা, করলা, টমেট, সিম, বেগুনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি গাছের চারা উপকুলীয় এলাকায় দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। জানা যায়, পিরোজপুরের নাজিরপুর, স্বরূপকাঠি ও বরিশালের বানারীপাড়া, গৌরনদীসহ কয়েকটি উপজেলায় প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে এই পদ্ধতিতে সবজির চারা উত্পাদন করা হচ্ছে। যদিও নাজিরপুরের কৃষকরাই সর্বপ্রথম ভাসমান পদ্ধতির চাষাবাদ শুরু করেন। তাদের অনুসরণ করে গোপালগঞ্জ, যশোর, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, চাঁদপুর, মানিকগঞ্জ, সিলেটসহ পানিযুক্ত বিল এলাকায় ধাপ চাষ ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জিয়ানগরের উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ তৌহিদীন ভূইয়া জানান, উপকুলীয় অধিকাংশ গ্রামীণ হাটবাজারে ধাপ চাষে উত্পাদিত সবজির চারাগাছ বিক্রি হয় নিয়মিত। এ চারা রোপণের মাধ্যমে প্রচুর সবজি উত্পন্ন হচ্ছে, যার মাধ্যমে আমাদের চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি সবজি পাওয়া যাচ্ছে। ধাপ চাষের মাধ্যমে উত্পাদিত চারা বিক্রেতা নাজিরপুরের মামুন জানান, আমরা সবজি গাছের চারা বেশি উত্পাদন করে থাকি। আর সবজি গাছের চারার চাহিদাও অনেক বেশি। কারণ গ্রামের প্রায় প্রতি ঘরের আঙ্গিনায় সবজি গাছের চারা রোপণ করা হয়ে থাকে। আবার অনেকে বাণিজ্যিকভাবেও সবজির চাষাবাদ করছেন।