ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে

আফরোজা গুল নাহার। গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে যোগদান করেছেন বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে (বিএইচবিএফসি)। গতকাল আমাদের সময়ের সঙ্গে তিনি কথা বলেন দেশের আর্থিক খাতসহ বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের নানা বিষয় নিয়ে।

আফরোজা গুল নাহার বলেন, গৃহায়ণ খাতে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সহায়তা দিতে ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন। পরবর্তীকালে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি) হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই নিয়মেই চলছে প্রতিষ্ঠানটি। আইনটি ভালো। তবে সময় পরিবর্তনের সঙ্গে-সঙ্গে আইনটিও পরিবর্তন করা দরকার। ১৯৯০ সাল থেকে আইনটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিএইচবিএফসিকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ঋণ বিতরণের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে। এ ছাড়া ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাহক যেন তার অবস্থান পরিষ্কার হতে পারেন, সে উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আইন কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, ডেস্ক কর্মকর্তা এবং জোনাল অফিসার ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাহককে তার আবেদনের অবস্থান জানাবেন। আমরা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণ করি, তাই অনেক সময় গ্রাহকের কাগজ ফেরত দিতে বেশ ঝামেলা হয়। এজন্য ফাইল আর্কাইভ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্রাহকদের ঋণের অবস্থান জানাতে এসএমএস অ্যালার্ট চালু করা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এ প্রতিষ্ঠান সরল সুদে ঋণ দেয়, সেজন্য চাহিদাও বেশি। তবে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ স্বল্পতার কারণে সব গ্রাহককে সন্তুষ্ট করা যাচ্ছে না। গত ৩০ জুন ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। এ সংকট কাটাতে সরকার শিগগির আরও ২০০ কোটি টাকা ছাড় করবে। অপেক্ষায় আছি ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ১০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার। এ ছাড়া আমরা জেনারেল ব্যাংকিংয়ের অনুমতি চেয়েছি। যেন গ্রাহককে আরও সেবা দেওয়া যায়।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আফরোজা বলেন, জেনারেল ম্যানেজার থাকাকালে বিএইচবিএফসির অর্গানোগ্রাম অনুমোদন করা হয়। মডেল সার্ভিস রুলও হয়েছে। এ ছাড়া অডিট আপত্তি ছিল, সেগুলোও মেটানো হয়েছে। গাড়ি নিয়ে জটিলতা ছিল, তাও সমাধান করা হয়েছে। পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা ছিল। বিশেষ করে আইন কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের পদোন্নতি নিয়ে সমস্যা ছিল। সেটিও নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

আফরোজা গুল নাহার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতির ওপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ১৯৮৩ সালে কৃষি ব্যাংকের শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি প্রধান কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে রাজশাহী কৃষি ব্যাংকের (রাকাব) ঢাকা কার্যালয়ের শাখাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে (বিএইচবিএফসি) যোগদান করেন জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে। প্রায় চার বছর দায়িত্ব পালন শেষে পদোন্নতি পেয়ে জনতা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে যোগদান করেন। সর্বশেষ পদোন্নতি পেয়ে তিনি বিএইচবিএফসির এমডি হিসেবে যোগদান করেন।