তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরে ব্যাপক প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। প্রচুর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহায়তা আশা করছে বাংলাদেশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা চেয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। স্থানীয় মুদ্রায় যা ৮০ হাজার কোটি টাকা। একই সঙ্গে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট, দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং প্রকটি প্রকল্পে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করাতে চায় প্রেসিডেন্টের হাত দিয়ে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) চিঠি দিয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ। এ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। কেননা ইআরডি বলছে, তারা চুক্তি ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন নিয়ে কিছুই জানে না। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে যোগাযোগ করা হলে কোনো কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে আগামী ১৪-১৫ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক কর্মব্যবস্থা দিন পার করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই সফর বাধাহীন করতে দু’দিনের আশুরা ও পূজার ছুটি বাতিল করা হয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এশিয়া উইংয়ে কর্মরতদের। এ প্রসঙ্গে ইআরডির এক কর্মকর্তা যুগান্তরেক বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় ঘটনা। সবাই মিলে কাজ করার মাধ্যমে সফরকে সফল করতে চাই। আশা করা হচ্ছে তার সফরের মধ্য দিয়ে দেশের জন্য ভালো কিছুই হবে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৪ অক্টোবর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয় চীনের রাষ্ট্রপতির আসন্ন বাংলাদেশ সফরকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, চীন সরকারের সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন টিয়ার-আইভি ডাটা সেন্টার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার প্রস্তাব ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশস্থ চীনা দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩ অক্টোবর পররাষ্ট্র সচিবের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ বলছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশনের সঙ্গে একটি ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট হবে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চীন সরকার থেকে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছে। এছাড়া সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরে কথা টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজি কো-অপারেশন বিষয়ে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চীন সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত এবং আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই সমাপ্ত হয়েছে। সমঝেতা স্মারক সই হওয়া কথা স্ট্রেনদেনিং দ্য ডেভেলপমেন্ট ইনফরমেশন সিল্ক রোড ফর ইনফরমেশন কানেকটিভিটি। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, এ বিষয়টি চীন সরকার প্রস্তাবিত এবং আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই সম্পন্ন হয়েছে।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বর্তমানে৬ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্লাগশিপ প্রকল্প এস্টাবলিশমেন্ট অব টিয়ার আইভি ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারের পূর্ত কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সমঝোতা স্মারক এবং ভিত্তিপ্রস্তরের প্রস্তাব চীনের প্রেসিডেন্টের সফরসূচিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য ইআরডিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, চীনের প্রেসিডেন্টের সফর ঘিরে ব্যাপক প্রকল্প অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব আসছে ইআরডিতে। এর আগে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় ২২টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ জানায়। এছাড়া সার্বিকভাবে সব মন্ত্রণালয় মিলে ২৫টি প্রকল্পের জন্য সহায়তা চাওয়ার জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে ইআরডি।