বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মানবকণ্ঠসহ সহযোগী দৈনিকগুলোতে প্রকাশ, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে। এর আগেরবার র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০৭তম। এবার উঠে এসেছে ১০৬-এ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকের তথ্য প্রকাশ করে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সংগঠনটির অংশীদার হিসেবে ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকের তথ্য প্রকাশ করে আসছে। এবারের প্রতিবেদনে শীর্ষে রয়েছে সুইজারল্যান্ড আর এবার নিচে অবস্থান করছে ইয়েমেন।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে রাজধানীর তোপখানা রোডের সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সিপিডি। ব্যবসায়ীদের মতামতের ভিত্তিতে ১৩৮টি দেশ থেকে একযোগে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ৩৯তম অবস্থানে রয়েছে। শ্রীলঙ্কা ৭১তম, ভুটান ৯৭তম, নেপাল ৯৮তম এবং সব নিচে ১২২তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। ১২টি স্তম্ভের স্কোরের ভিত্তিতে সামগ্রিকভাবে তালিকা তৈরি করা হয়। এ বছর ৩ দশমিক ৮ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ তালিকার ১০৬তম স্থানে উঠে এসেছে। তবে এখনো দুর্বলতা রয়েছে উদ্ভাবন ও ব্যবসায়ী কার্যক্রম পরিচালনায় জটিলতা দূরীকরণের ক্ষেত্রে। বৈশ্বিক বাণিজ্য বা বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে দেশের এমন ৮৯ জন ব্যবসায়ী এই জরিপে অংশ নেন। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি, শিল্প, সেবা ও অন্যান্য খাত। সুইজারল্যান্ড এবারসহ টানা অষ্টমবার শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। বাংলাদেশের এই উন্নতির পেছনে সরকারের নানাবিধ প্রচেষ্টারই ইতিবাচক প্রভাব কাজ করেছে। অবকাঠামো, সামষ্টিক অর্থনীতি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ব্যাপক কাজ করেছে বিগত মহাজোট ও বর্তমান সরকার। তাছাড়া বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও। তারপরও আর্থিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান এখনো নি¤œ সারির দেশগুলোর কাতারে। এ থেকে বের হয়ে আসতে হলে আরো দূরদর্শী কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।
কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নে আরো গভীর দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের যেসব খাতের সম্ভাবনা রয়েছে ব্যাপক সেসব খাতে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশ নানাদিকে এত উন্নয়ন-অগ্রগতি সাধন করার পরও আর্থিক খাতের দক্ষতা এবং উৎকর্ষে কেন এখনো এত পিছিয়ে রয়েছে তাও বিশেষ পর্যালোচনার দাবি রাখে। সুশাসন ব্যবস্থা যদি নিশ্চিত করা যায় তাহলে আমাদের অর্জনের খতিয়ান ক্রমান্বয়ে দীর্ঘ হওয়ার ব্যাপক অবকাশ রয়েছে। আর্থিক খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির অনেক দরজা যেহেতু চিহ্নিত করা গেছে সেহেতু এর সুফল প্রাপ্তির বিষয়টি দুরূহ নয় বলেও আমরা মনে করি। তবে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমাদের পথ এখনো কণ্টকাকীর্ণ। অগ্রগতির জন্য পথের এসব কাঁটা সরানোর কোনোই বিকল্প নেই।