কনটেইনার ওঠানামায় রেকর্ড চট্টগ্রাম বন্দরের

এক মাসে কনটেইনার ওঠানামায় নতুন রেকর্ড করল চট্টগ্রাম বন্দর। সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে সোয়া দুই লাখ একক কনটেইনার ওঠানামা করেই এই রেকর্ড দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরটির। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এক লাখ ৯৭ হাজার একক কনটেইনার ওঠানামার সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছিল বন্দর। কনটেইনার ওঠানামায় প্রবৃদ্ধি প্রতি মাসেই বাড়ছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এই বাড়ার সূচকই প্রমাণ করে দেশে আমদানি-রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ক্রমাগত বাড়ছে। যে হারে কনটেইনার ওঠানামা বাড়ছে তাতে করে বছর শেষে চট্টগ্রাম বন্দরের বিদ্যমান মাস্টারপ্ল্যানের পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে বন্দর ব্যবহারকারীরা। কেন এত কনটেইনার ওঠানামা বাড়ছে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম খালিদ ইকবাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির গতিপ্রবাহ বাড়ার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে বন্দরের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি। প্রতি মাসে নিত্যনতুন রেকর্ড করছে এই বন্দর। আমরা চাইছি বিদ্যমান সক্ষমতা দিয়েই দ্রুত সেবা দিতে।’ একই সঙ্গে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যৎ নতুন কর্মপরিকল্পনা নিয়েও এগোচ্ছেন বলে খালিদ ইকবাল মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম বন্দরের ৩০ বছর মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নকারী জার্মানির এইচপিসি হামবুর্গের হিসাবে, বন্দরের বর্তমান প্রবৃদ্ধি ঠিক থাকলে বর্তমান জেটি-টার্মিনাল দিয়ে সর্বোচ্চ ২০১৬ সাল পর্যন্ত পণ্য ওঠানামা করা সম্ভব। তবে এরই মধ্যে গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা করা গেলে এক লাখ একক কনটেইনার বাড়তি হ্যান্ডলিং সম্ভব। সেটি যোগ হলে ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের মোট সক্ষমতা হবে ২৩ লাখ ৬০ হাজার একক, আর পণ্য ওঠানামা হবে ২১ লাখ ৬৮ হাজার একক। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসেও এনসিটি পুরোদমে চালু করা যায়নি, এ বছর শেষ নাগাদ যন্ত্রপাতি সংযোজনের সম্ভাবনাও কম। ফলে ২০১৬ সালেই বন্দরের ওঠানামার সক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক গতি পেয়েছে। এতে করে পণ্য ওঠানামায় নতুন রেকর্ড গড়ছে চট্টগ্রাম বন্দর।’ মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর আরো বলেন, যে হারে পণ্য ওঠানামার প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তা মাস্টারপ্ল্যানের পূর্বাভাসকেও ইতিমধ্যে ছাড়িয়ে গেছে, আগামীতেও ছাড়াবে নিশ্চিত। ফলে এই প্রবৃদ্ধির সঙ্গে মিল রেখে আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্রুত সংযোজন, মাস্টারপ্ল্যানের পরামর্শ অনুযায়ী জেটি টার্মিনাল নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন করতে না পারলে সামনে বিপদে পড়তে হবে।’ জানা গেছে, মাস্টারপ্ল্যানের ২০১৫ সালের পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গেছে বন্দরের পণ্য ওঠানামা। ২০১৫ সালে পূর্বাভাস ছিল ১৭ লাখ ৬৪ হাজার একক, কিন্তু ওঠানামা হয়েছে ২০ লাখ এককের বেশি। এতে করে বোঝা যায় ২০১৬ সালের পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে যাবে চট্টগ্রাম বন্দর। – See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/industry-business/2016/09/04/401500#sthash.n0J7l6SI.dpuf