পটোলের বাম্পার ফলনে ভাগ্য খুলেছে শেরপুরের নকলা উপজেলার ২০০ পরিবারের। এ সবজি চাষের মধ্য দিয়ে আত্মনির্ভশীলতার পথ খুঁজে পেয়েছেন তারা। পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা। করেছেন দিন বদল। নকলায় উৎপাদিত পটোল রাজধানী ঢাকাসহ পাশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
পটোল বিক্রি করে ভাগ্য পরিবর্তনকারীদের একজন হলেন ছোট মোজার এলাকার ফেরদৌস। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়ায় লেখাপড়া খুব বেশি একটা করতে পারেননি ফেরদৌস। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত না হতে পারলেও পটোল চাষে তিনি মডেলে পরিণত হয়েছেন; দেখিয়েছেন চমক। ফেরদৌস প্রথমে বর্গা জমিতে পটোলসহ বিভিন্ন সবজি চাষ শুরু করেন। তবে পটোল চাষে তিনি সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেন। তারপর বর্গা জমি বৃদ্ধি করে পটোল চাষ বাড়াতে থাকেন। ফেরদৌসের সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক পটোল চাষ শুরু করেন। বর্তমানে উপজেলায় দুই শতাধিক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে পটোল চাষ করছেন।
কথা হয় পটোল চাষে সফল কৃষক মোজার এলাকার ফেরদৌস, আরফোজ, মানিক; বানেশ্বর্দীর হাসমত, সোহাগ, কেনু, কাজল; কান্দাপাড়ার আজিজল, গেন্দা, ফরিদ, ফরহাদ, ফারুক; ধুকুরিয়ার হাশেম, হারুন, নজরুল; বাছুর আলগার মোক্তার, আজিম, মেকছেদসহ অনেকের সঙ্গে। তারা জানান, পটোলের ক্ষেত তৈরি থেকে শুরু করে মাচা দেয়া পর্যন্ত প্রতি কাঠা (৫ শতাংশ) জমিতে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা খরচ হয়। সপ্তাহে প্রতি কাঠা জমি থেকে ২৫ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন হয়Ñ যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৭৫ থেকে ৮০০ টাকা। পটোল চাষি ফেরদৌস জানান, তার ৬০ শতাংশ জমি থেকে সপ্তাহে ১ থেকে দেড় হাজার টাকার পটোল বিক্রি করছেন। চলতি মৌসুমে পটোল বিক্রি করে তিনি এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি আরও জানান, নকলা উপজেলায় এ বছর ৬৭৫ একর জমিতে পটোল চাষ হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার পটোল বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদিত পটোল যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
নকলা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ বলেন, নকলার মাটি পটোল উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। এ উপজেলায় প্রতি বছর পটোল চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, এ বছর উপজেলায় ৬৭৫ একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পটোল চাষ করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, পটোল চাষ অধিক লাভজনক। একবার রোপণ করলে এক মাচাতেই ২ থেকে ৩ বছর উৎপাদন করা যায়।