লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৪০০ কোটি টাকা বেশি রপ্তানি বেপজার

বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নির্ধারিত রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ৪৮ হাজার কোটি টাকা। তবে বছর শেষে সেই লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে ছয় হাজার ৬৭৬ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে বেপজা নিয়ন্ত্রিত দেশের আটটি ইপিজেড থেকে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ইপিজেডগুলো থেকে ৬৭৬ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি পণ্য বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১.২৬ শতাংশ বেশি। দেশের জাতীয় রপ্তানিতে বেপজার অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন অর্থবছরের জন্য সাড়ে ছয় বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে বেপজাকে।

এই অর্জনে বরাবরের মতো সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে চট্টগ্রাম ইপিজেড। এই ইপিজেডের ১৭১টি শিল্প-কারখানা থেকে সর্বমোট ২৪১৯ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২১৮৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে এর পরেই আছে ঢাকা ইপিজেড। এ ছাড়া কর্ণফুলী ইপিজেডে ৮২৩ দশমিক ২৮ মিলিয়ন ডলার, আদমজী ইপিজেডে ৫৬২ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ইপিজেডে ৩০৮ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার, উত্তরা ইপিজেডে ১৮৮ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার, ঈশ্বরদী ইপিজেডে ১১৪ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার এবং মংলা ইপিজেডে ৭৪ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই সময়ে ৩৩ হাজার ৫৫১ জন বাংলাদেশির কর্মসংস্থান হয়েছে ইপিজেডগুলোতে। আট ইপিজেডের ৪৪৫টি কারখানায় বর্তমানে চার লাখ ৫৩ হাজার ৬৫২ জন বাংলাদেশি কর্মরত আছে বলে বেপজা সূত্র জানায়।

সূত্রে আরো জানা যায়, দেশের আটটি সরকারি ইপিজেডের চালু থাকা ৪৪৫টি কারখানা থেকে ৬৬৭৬ দশমিক ৩২ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৬১১৩ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার। এ ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রপ্তানি শতকরা ৯ দশমিক ২১ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর বলেন, ‘বেপজা থেকে সব সময় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রপ্তানি হয়ে আসছে। অতীতের ধারাবাহিকতা এবারেও অব্যাহত রয়েছে। ইপিজেডগুলোতে অবস্থিত কারখানাগুলো যাতে নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারে সে জন্য বেপজা সব সময় সচেষ্ট থাকে।’

এদিকে বেপজা গত অর্থবছরে ৬.৭৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করলেও নতুন লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে সাড়ে ছয় বিলিয়ন ডলার। অর্জনের চেয়ে লক্ষ্যমাত্রা কম দেওয়া হয়েছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমা বিনতে আলমগীর বলেন, ‘নতুন যেমন অনেক কম্পানি উৎপাদনে আসবে, তেমনি কিছু কম্পানি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সময় এমনভাবে হিসাব করা হয় যাতে কোনোভাবে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত না হয়। এ কারণে সক্ষমতার চেয়ে একটু কমিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।’

এই ইপিজেডগুলোতে আরো ১২১টি কারখানা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে বলে বেপজা সূত্র জানায়। এই কারখানাগুলো উৎপাদনে এলে জাতীয় অর্থনীতিতে বেপজার অবদান আরো বাড়বে। এই ইপিজেডগুলোতে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের আরো ৩৬টি দেশের বিনিয়োগ রয়েছে।