আউশের দামে কৃষকের মুখে হাসি

আউশের দামে কৃষকের মুখে হাসি আউশের দামে কৃষকের মুখে হাসি নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন জেলায় আউশ কাটা শুরু হয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকা ছাড়া অন্য অঞ্চলের ধানের ফলনও তুলনামূলক ভালো হয়েছে। প্রতি মণ নতুন ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। সেচ ও বাড়তি পরিচর্যা ছাড়া উত্পাদন হওয়া খরচ কম হয়েছে আউশে। সেই তুলনায় ধানের লাভজনক দাম আছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মার চরের নারায়ণপুর গ্রামের চাষি আলী হোসেন জানান, পদ্মার চরে প্রতি বছর দেশি জাতের আউশের চাষ করছি। ফলন কম হলেও উত্পাদন খরচ তেমন নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) হিসেবে, চলতি আউশ মৌসুমে ১০ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ২৪ লাখ ৭৮ হাজার টন চাল উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ডিজি মো. হামিদুর রহমান জানান, ৫০ শতাংশ আউশ ধান কাটা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সব ধান কাটা হলে তারপর মোট উত্পাদন জানানো সম্ভব হবে। তবে এ বছর নেরিকা ১০ ও ব্রি ধান ৪৮ ফলন ভালো হয়েছে। এ জাতের ধানের হেক্টর প্রতি ৪ টনের বেশি ফলন হয়েছে এ বছর। সরকারের পক্ষ
থেকে আউশ মৌসুমে নতুন নতুন আউশের জাত নিয়ে আসতে পারলে উত্পাদন বেড়ে যাবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে কম সেচের ও ভূগর্ভের পানি কম ব্যবহার করা আউশ উত্পাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধানের পরিবর্তনে গম, ভুট্টা, ডাল, তেল ও অন্য ফসল উত্পাদন বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বন্যায় আউশের ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্যদুর্গত এলাকাগুলো আউশপ্রবণ এলাকা নয়। তাই আউশ উত্পাদনে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। দ্বিতীয় এ বছর পাট উত্পাদন বেশি হওয়ায় পাটের জমিতে আমন ধান রোপণ করবেন চাষিরা। ফলে মোট চাল উত্পাদনে বন্যার প্রভাব পড়বে না।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বন্যায় উত্তর ও মধ্য অঞ্চলের আউশ ধান তলিয়ে যাওয়ায় মোট উত্পাদন কমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, ১৮ হাজার হেক্টরের আউশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। অর্ধ শতাব্দীর অবহেলায় আউশ চাষের আবাদি জমি তিন ভাগের দুই ভাগ কমে আসে। বাড়তে থাকে সেচনির্ভর বোরো ধান উত্পাদনের প্রবণতা। বোরো চাষের জন্য মাটির তলা থেকে অতিরিক্ত পানি তোলার ফলে ভূগর্ভের পানির স্তর আশঙ্কাজনক হারে নিচে নেমে যায়। বেড়েছে আর্সেনিক দূষণ। ধান উত্পাদনে সেচের ব্যয়ও বেড়েছে। পরিবেশগত বিপর্যয় রোধে আউশ আবাদে উত্সাহিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে প্রণোদনা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে মোট চালের প্রায় ৭ শতাংশ আউশ মৌসুমে উত্পাদিত হয়।