গরু ও মুরগির খামার করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অন্য যুবকদেরও পথ দেখাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নুরুন নবী। তিনি নিজে ভাগ্যবদলের পাশাপাশি আশপাশের কয়েকটি গ্রামের যুবকদেরও অনুপ্রাণিত করেছেন। নুরুন নবীর সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে উপজেলার কাজিরগাঁও, দুর্গাপ্রসাদ, দুধঘাটা, নোয়াগাঁওসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের যুবকরাও গড়ে তুলেছেন গরু-মুরগির খামার।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলেরগাঁও গ্রামের (বটতলা বাজার) রোস্তম আলীর ছেলে নুরুন নবী ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে বেশ কয়েক বছর আগে কাতারে পাড়ি জমিয়েছিলেন। এরপর আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। কিন্তু প্রবাস জীবন ভালো না লাগায় দেশে ফিরে চাকরির পেছনে অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করেও কোনো কাজ জোটাতে পারেননি। পরে স্বাবলম্বী হওয়ার অভিপ্রায়ে যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে নেন প্রশিক্ষণ। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় ৩ বছর আগে বাড়ির পাশের ১৫ শতাংশ জমিতে দুইটি টিনশেড ঘরে আলাদাভাবে গড়ে তোলেন গরু ও মুরগির খামার। প্রথম দিকে দেড় হাজার মুরগি নিয়ে রুস্তম আলী পোলট্রি ফার্মের (ব্রয়লার মুরগির খামার) যাত্রা শুরু করেন। একই সঙ্গে ১৭টি গরু মোটাতাজাকরণ শুরু করেন। ৩ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ঘুরেছে তার ভাগ্যের চাকা। বর্তমানে তার খামারে ব্রয়লার মুরগি রয়েছে ৫ হাজার এবং ষাঁড় রয়েছে প্রায় ৪০টি। খামারে বেকার দুই যুবককে চাকরিও দিয়েছেন। নুরুন নবীর সফলতায় উৎসাহিত হয়ে এখন অনেকেই গরুর খামার করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছেন। কাজিরগাঁও, দুর্গাপ্রসাদ, দুধঘাটা, নোয়াগাঁওসহ আশপাশের এলাকার যুবকরা শুরু করেছেন গরু-মুরুগির খামার।
নুরুন নবী জানান, সোনারগাঁয়ের অনেকেই শুধু মুরগির খামার নয়তো গরুর খামার করেছিলেন। বেশিরভাগ খামারিই মুরগির ডিম নয়তো গরুর দুধ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতেন। কিন্তু তিনি ওই পথে যাননি। তিনি গরু ও মুরগি খামার একসঙ্গে করার উদ্যোগ নেন। একসঙ্গে গরু ও মুরগির খামার করে নিজের পরিবারের সব চাহিদা মিটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আসছে ঈদুল আজহায় গরু বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা আয়ের টার্গেট রয়েছে তার। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন গরু-মুরগির খাদ্য বাবদ দেড় থেকে ২ হাজার টাকা খরচ হয়।
সোনারগাঁ উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল হামিদ বলেন, চাকরির পেছনে না ঘুরে যে স্বাবলম্বী হওয়া যায়, তা প্রমাণ করেছেন প্রবাসফেরত নুরুন নবী। তার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার অনেক বেকার যুবক গরু-মুরগির খামার করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করছেন।