নয় রাউন্ডের খেলা। হারেনি একটিতেও। সাত রাউন্ড জয়ের সঙ্গে ড্র করেছে দুটি রাউন্ডে। এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কারটাও পেয়ে গেছে বাংলাদেশের খুদে দাবাড়ূ ফাহাদ রহমান। দুবাই জুনিয়র (অনূর্ধ্ব-১৪) চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফাহাদ। গতকাল শেষ রাউন্ডের খেলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হোসনী ওমরানকে ১-০-তে হারিয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দুবাই জয় করে শেখ রাসেলের এ দাবাড়ূ। ১২টি দেশের ১৪ বছর ও এর নিচের ১১০ দাবাড়ূ এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সবাইকে পেছনে ফেলে সেরা হওয়া ফাহাদ এক লাখ ৫৭ হাজার টাকা (দুই হাজার ইউএস ডলার) জয়ের সঙ্গে শেখ মাখতুম বিন হামদান আল মাখতুম কাপ ও স্বর্ণ পদক জেতে। দুবাই জয় করা ফাহাদের আজ রাতেই দেশে ফেরার কথা।
বয়স মাত্র ১৩। এই অল্প বয়সেই দেশে-বিদেশে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে বাংলাদেশের খুদে দাবাড়ূ ফাহাদ রহমান। প্রতিভা ও মেধার জোরে দ্রুতই ফিদেমাস্টার খেতাব অর্জন করে ফাহাদ। দুবাইয়ে অষ্টম রাউন্ডের পরই ফাহাদের শিরোপাটা চলে আসে হাতের মুঠোয়। অষ্টম রাউন্ডে প্রতিযোগিতার টপ সিডেড প্রাপ্ত খেলোয়াড় ইউক্রেনের ফিদেমাস্টার মেটভিসেন ভিক্টরের সঙ্গে ড্র করে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে ফাহাদ। মূলত সপ্তম রাউন্ডে ভারতের রাহুল শ্রীবাস্তবকে হারিয়ে ১০ হাজার ডলার প্রাইজমানির এ আসরে শীর্ষে উঠে আসে ফরিদপুরের মধুখালীতে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ এ দাবাড়ূ। সাড়ে সাত পয়েন্ট করে নিয়ে ভারতের রাহুল শ্রীবাস্তব দ্বিতীয় ও ইউক্রেনের মেটভিসেন ভিক্টর তৃতীয় হয়। টুর্নামেন্টে ফাহাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে মাহিন্দ্র কমভিবা।
দেশের মতো বিদেশেও সাফল্যের রঙে রঙিন হয়েছে ফাহাদ। দুবাই ওপেন নিয়ে এ পর্যন্ত বিদেশের মাটিতে পাঁচটি স্বর্ণ জিতেছে এ ১৩ বছর বয়সী এ খুদে দাবাড়ূ। আরও ছয়টি টুর্নামেন্টে খেললেও তিনটিতে রৌপ্য ও বাকি তিনটিতে জিতেছিল ব্রোঞ্জ। ছেলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ফাহাদের পুরো পরিবার। বাবার হাতেই ফাহাদের দাবায় আসায়। ছেলের কোচও তিনি। বাবা নজরুল ইসলাম ছেলের সঙ্গে দুবাইয়ে। মা হামিদা খান ছেলের এমন সাফল্যে খুবই খুশি। টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘ছেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এটা অবশ্যই আমাদের জন্য আনন্দের।’ ফাহাদও নাকি অনেক খুশি দুবাই জয় করতে পারায়। ‘বয়স কম; তাই ওভাবে আনন্দটা প্রকাশ করতে পারে না। তবে ও খুব খুশি’_ ছেলের সঙ্গে স্কাইপিতে কথা বলার পর জানালেন মা হামিদা খান।