বটিয়াঘাটায় দেশিজাতের সঙ্গে পরাগায়ণ ঘটিয়ে নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন
আব্দুল হামিদ, বটিয়াঘাটা (খুলনা) সংবাদদাতা২৭ জুলাই, ২০১৬ ইং
উপজেলার গঙ্গারামপুর ও সুরখালী ইউনিয়নে কৃষক নেতৃত্বে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম তিন বছর পর শেষ হলো। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই ইউনিয়নে গঠিত হয়েছে ১৯৯ জন কৃষক কৃষাণী নিয়ে ১০টি সংগঠন। এ সংগঠনের কৃষকদের সংগৃহীত বিলুপ্ত প্রায় ৮০টি আমন জাত এবং ২৫ প্রকার সবজি জাত গোটা উপজেলায় কৃষিজীবীদের নতুন করে অনুপ্রাণীত করে তুলেছে।
চাষিরা এখন হারিয়ে যাওয়া জাতের ধান ও সবজি চাষ করছে। কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প জৈব পদ্ধতিতে স্থানীয় ধান ও সবজির বীজ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৮৮০ জন কৃষকের মধ্যে ১১৩ কেজি স্থানীয় জাতের আমন ধানের বীজ বিনিময় করেছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশি জাতের ধানের একের সাথে অন্যের পরাগায়ণ ঘটিয়ে এখন নতুন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ফলন অধিক হওয়ায় চাষিরা এ দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।
গঙ্গারামপুরে তিন বছর ধরে একটি নির্দিষ্ট জমিতে এ সব বীজ রোপণ করে ধানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কৃষকদের ধারণা—সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে তারাই এই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দেশি প্রজাতির ধান ফলিয়ে কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হবে। তারা যে সব বিলুপ্ত প্রায় ধান বীজ সংগ্রহ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে সিলেট বালাম, কলমীলতা, চিনিকানাই, বাঁশফুলবালাম, জটাইবালাম, চরোবালাম, বেনাপোল, হলদে গোটাল, কাচড়া, ময়নামতি, বজ্রমুড়ি, মরিচশাইল, জামাইনাড়ু, চাপশাইল, সাহেবকচি, কুমড়াগোড়, রানীসালট, নোনাকচি, মঘাইবালাম, একটি ধানে দুটি চাল (সতীন), বেনাপোল, বৌসোহাগী প্রভৃতি।
সুরখালী ইউনিয়নের কৃষক রুহুল আমীন, গঙ্গারপুরের কৃষক মৃত্যুঞ্জয় রায়, কৃষাণী নীপা কবিরাজসহ অনেকেই জানান—এ কার্যক্রম আরো দুই বছর অব্যাহত রাখলে নিজেরাই কৃষিতে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতেন।
এ প্রসঙ্গে লোকজের নির্বাহী পরিচালক দেবপ্রসাদ সরকার বলেন, ‘কৃষকের দাবির কারণে নতুন করে ফান্ড পেলে এ কার্যক্রম আরো কিছু দিন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।’