বাংলাদেশের উন্নয়ন

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনায় দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যার যার অবস্থান থেকে সঠিক দায়িত্ব পালন করেছে বলেই এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি এ অবদানের জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নীতিনির্ধারণে শেখ হাসিনার মতো দক্ষ প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসক বাংলাদেশ পেয়েছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটা প্রবাদ আছে_ ‘আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করে, তখনই দেশের প্রাপ্তি বাড়ে।’ প্রাপ্তি যে বেড়েই চলেছে তা কোনো বানানো গল্প নয়, বাস্তবতা।
ডা. এসএ মালেক
নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন ঘটেছে। দেশে প্রবৃদ্ধির হার বেড়েছে। যদিও বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের ঘরেই থাকবে। উন্নয়ন সহযোগীদের অভিমতও ছিল তাই। কিন্তু বিবিএসের হিসাবে ওদের অভিমত ভুল প্রমাণিত হয়েছে। দেশে এই প্রথমবারের মতো প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) ৭.০৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কয়েক বছর ধরে এ প্রবৃদ্ধির হার স্থিতিশীল অর্থাৎ ৬ ও এর ওপরে ওঠানামা করছিল। এবার সেই সীমাবদ্ধতা প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ অতিক্রম করেছে। গত বছর এটা ছিল ৬.৫৫ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এ হার বৃদ্ধির কারণেই মাথাপিছু গড়া আয় বেড়ে বর্তমানে ১ হাজার ৬৬৬ ডলার হয়েছে, যা গত বছরে ছিল ১ হাজার ৩১৬ ডলার। যারা বলেন যে শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পেঁৗছে দিয়েছেন, উৎপাদন ও উন্নয়ন বলতে কোনো কিছুই হয়নি, শুধু লুটপাট ও দুর্নীতি দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে চলেছে, টেলিভিশনের পর্দায় টকশোতে অবিরাম তো দেশের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। গণতন্ত্র নেই এই তো তাদের প্রথম কথা। আর সেই সঙ্গে তাদের মতে অর্থনীতির চরম দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু তাদের কথা কোনো ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারবে না। কোনো পরিসংখ্যান নেই। শুধু বলার জন্যই বলা, সমালোচনার জন্যই বলা। মাথাপিছু গড় আয় বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৬৬ ডলার। বিএনপি আমলে কোনো সময়ই এ গড় আয় সর্বোচ্চ ৮০০ ডলারের ওপরে ওঠেনি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৫০০ ডলারের মতো। যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন কী কারণে এ অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব হলো_ প্রথমত বলতে হবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দ্বিতীয়ত, সরকার পরিচালনায় দক্ষতা। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এমন সব যুগান্তকারী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, যা প্রবৃদ্ধির হার দ্রুত বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বের অর্থনীতি যখন সংকটের সম্মুখীন, সব দেশেই প্রবৃদ্ধির হার নিম্নগামী, বাংলাদেশ তখন কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ২০০৮-০৯ সাল থেকে প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ ধরে রেখেছে। এবার তা বেড়ে ৭ শতাংশের ওপরে উঠেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনায় দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যার যার অবস্থান থেকে সঠিক দায়িত্ব পালন করেছে বলেই এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি এ অবদানের জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নীতিনির্ধারণে শেখ হাসিনার মতো দক্ষ প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসক বাংলাদেশ পেয়েছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটা প্রবাদ আছে_ ‘আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করে, তখনই দেশের প্রাপ্তি বাড়ে।’ প্রাপ্তি যে বেড়েই চলেছে তা কোনো বানানো গল্প নয়, বাস্তবতা।
দেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় প্রবৃদ্ধির এ হার ধরে রাখা সম্ভব হবে না, এরূপ অভিমত কেউ কেউ ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু সরকার যে দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে, তাতে এটা শুধু ধরে রাখাই নয়, বরং বৃদ্ধি পাবে। সপ্তম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনায় ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। অবশ্যই এ প্রবৃদ্ধির হার বর্তমানে যে বোরো ধান উঠছে, তা বাদ দিয়েই হিসাব করা হয়েছে। যেহেতু এবার বোরোর বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এটা ধরলে প্রবৃদ্ধির হার আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রবৃদ্ধির কারণ শিল্প ও সেবা খাতও। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.১০%, যা গত বছরে ছিল ৯.৬৭%। সেবা খাতে বর্তমান প্রবৃদ্ধি ৬.৭%, যা গত বছর ছিল ৫.৮%। অবশ্য কৃষি খাতে এবার প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। মধ্যম আয়ের দেশে পেঁৗছাবার চিন্তা নিয়েই যুক্তিবাদী পরিকল্পনা গ্রহণ করায় এ সাফল্য এসেছে। কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে অসাধারণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে। অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ করে বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে লক্ষণীয় সাফল্য এসেছে। সামাজিক নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামীতে মধ্যম আয়ের দেশে পেঁৗছাতে বেশি সময় লাগবে না। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে এ বছর প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫% হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে সে সীমা অতিক্রম করে ৭.০৫% হয়েছে। অনেকে মনে করেন চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি এ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মূল কারণ। সেবা ও শিল্প খাত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেছে। রেমিট্যান্স ও ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ তেমন বৃদ্ধি পায়নি। এডিবি বলেছিল এবার ৬.৭% প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এডিবির পূর্বাভাসও সীমা অতিক্রম করেছে। সুতরাং বিশ্বব্যাংক ও এডিবির ধ্যান-ধারণাকে অতিক্রম করে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি দ্রুত বেড়েই চলেছে। যে যাই বলুক না কেন, প্রবৃদ্ধির মূল কারণ অনেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে বলেই মনে করেন। তাই বিবেচনায় আসে এ স্থিতিশীলতা কীভাবে অর্জিত হলো। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চরম পদক্ষেপগুলো জামায়াত-শিবির চক্র ও বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে যা করছে, তাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সম্ভব ছিল কি?
কঠোর হাতে ও কুশলী হয়ে ওই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কৃতিত্ব শেখ হাসিনা ও তার সরকারের। আমরা দেখেছি স্বাধীনতার শত্রু ও স্বৈরাচারের সহযোগীরা সম্মিলিতভাবে হত্যা, ধর্ষণ, অগি্নসংযোগ, লুটপাট, সংখ্যালঘু নির্যাতন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য বিরোধী রাজনীতির নামে যে নৈরাজ্য ও অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল, ওই পরিস্থিতি দমন করতে না পারলে এ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হতো না। পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে আজ বাস্তবায়নের পথে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার মেগাওয়াট। সরকার কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বর্তমান সরকারের আমলেই উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ হবে ১১ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। খাদ্য উৎপাদনে দেশ আজ স্বনির্ভর। জনপ্রতি খাদ্য সরবরাহ ও গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিকাংশ মানুষ তিন বেলা খাবার পায়। খাদ্যের গুণগতমান বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রোটিন বৃদ্ধি, চিকিৎসাব্যবস্থায় অর্জিত হয়েছে বিরাট সাফল্য। কয়েকটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সেবার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। আগামীতে আর চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হতে হবে না। শিক্ষা খাতে যা ঘটেছে বলা যায় বিপ্লব। দেশের সব এলাকার জনগণ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের জনগণ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। শ্রমজীবীদের আয় বেড়েছে। একজন কৃষিশ্রমিক দৈনিক ৩-৪ ডলার আয় করেন। শিল্পশ্রমিকও ২-৩ ডলার আয় করেন। দেশের রপ্তানি আয় যেভাবে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, নতুন নতুন পণ্য রপ্তানি খাতে সংযোজিত হচ্ছে, এত আগামীতে আমদানিনির্ভরতা কমবে এবং রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশের বর্তমান বার্ষিক বাজেটের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে বাজেট বরাদ্দ থেকে বর্তমান বাজেট বরাদ্দ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই সময়ে মাত্র ১ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ ছিল। এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। এতেই বোঝা যায় উন্নয়নের গতিধারা কত তৎপর। এবার শেখ হাসিনার শাসনামল ও বিগত পাঁচ বছর মোট আট বছর তিনি একটানা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছন। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। এ ১৩ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ও উন্নয়নের হিসাব নিলে দেখা যায় বিগত ৩২ বছরে দেশের যে উন্নয়ন সম্ভব হয়নি, এ ১৩ বছরে তা সুনির্দিষ্ট সফলতা অর্জন করেছে, অর্থনীতির প্রায় সব ক্ষেত্রে।
অনেককে বলতে শোনা যায় অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে, তবে গণতন্ত্রের নয়। কথাটা এ বক্তব্যের সঙ্গে ১০০ ভাগ দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ নেই। কেননা এ দেশে গণতন্ত্র এখনো সীমাবদ্ধতার গ-িতে আবদ্ধ। কিন্তু এর জন্য দায়ী কারা? বলা হয় বঙ্গবন্ধু নাকি চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা কী? ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু সংবিধান প্রণয়ন করেন, ‘৭৩ সালের নির্বাচন ও প্রথম সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সাড়ে তিন বছর সংসদীয় ধারায় দেশ পরিচালনা করে বঙ্গবন্ধুই এ দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু গণতন্ত্রবিরোধী স্বাধীনতার শত্রুরা সেই গণতন্ত্রকে সংকুচিত করার জন্য প্রায় বঙ্গবন্ধুকে বাধ্য করেছিল। ‘৭৫ থেকে ‘৯০_ এ ১৫ বছর দেশে দুই সামরিক শাসক পর্যায়ক্রমে দেশ শাসন করেছেন। তারা কখনো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশ শাসন করেননি ও পারেননি। ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেগম জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনায় তিন জোটের রূপরেখা উপেক্ষা করে স্বৈরাচারী কায়দায় অবতীর্ণ হন এবং তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য যেসব কৌশল অবলম্বন করেন, তা ছিল দেশের জন্য চরম ক্ষতিকর। তিনি নির্বাচনব্যবস্থাকে বিতর্কিত করেন। ‘৯১ থেকে ‘৯৬_ এই সময়ে বেগম জিয়া জেনারেল জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে চরম স্বৈরাচারী মূর্তি ধারণ করেন। ‘৭৫-এর পর ‘৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। ‘৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনাামল ছিল সত্যিকার গণতান্ত্রিক ও জনকল্যাণমুখী। ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে শেখ হাসিনা হাসিমুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসেন। এবার তিনি ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনাকে শুধু ক্ষমতা থেকে দূরে রাখাই নয়, বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য তিনিসহ তার দলের উচ্চপর্যায়ের সব নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন, ২১ আগস্টের মতো মর্মান্তিক গ্রেনেড হামলা চালান। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ও পরামর্শে বিগত তিন দশকে কতবার যে শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে, তা দেশবাসী জানে। তাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও স্বাধীনতার শত্রুদের শুধু মোকাবেলা করতে হয়নি, মোকাবেলা করতে হয়েছে খুনি, মৌলবাদী শক্তিকে। এটা করতে গিয়ে রাষ্ট্র প্রশাসনকে কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। খুনিদের তো আর আদর করে মোকাবেলা করা যায় না। খুনি, জঙ্গি ও মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা শুধু গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সম্ভব নয়। এটা তো আজ ধ্রুবসত্য। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বিশ্বজঙ্গি মোকাবেলা করার জন্য যেসব চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটাচ্ছেন ও পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন, তা কি গণতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? তা ছাড়া বিশ্বের সেসব দেশে ওইসব নেতৃত্বের অধীনই দ্রুত অগ্রগতি ও উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। তার সব ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের সীমিতকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাদের সবাইকে কিছুটা সংশ্লিষ্ট হতে হয়েছে। একই মাত্রায় গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বাস্তবতা তাই। ‘৭৫-এর ১৫ আগস্টে চরম হত্যাকা- ঘটিয়ে যারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন এনেছিল, তারা যদি বর্তমানে গণতন্ত্র নেই বলে চিৎকার করে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? ২০০১ সালে যে মনমানসিকতা নিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন, যদি বেগম জিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই মন নিয়ে রাজনীতি করতেন, তাহলে তো দেশে ১/১১ সৃষ্টি হতো না। তার পর তাদের অনুসৃত নীতি হচ্ছে জোর করে ক্ষমতা দখল। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী রাজনীতি। এর সঙ্গে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত কি? এখন যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে চান, তবে তা কার কাছে? যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না তাদের কাছে? যারা ক্ষমতায় গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত করে তাদের কাছে? স্বাধীনতার সপক্ষের বৃহত্তর শক্তি কি স্বাধীনতাবিরোধীদের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারে? তারা স্বাধীনতা বিপন্ন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, তাদের কাছে যদি গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর অসম্ভব হয়ে থাকে তবে করছেন কে? নিশ্চয়ই উত্তর বেগম জিয়া। তিনি আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে দেশের কী অবস্থা হবে, জনগণ তা জানে। সদ্যসমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট নৌকায় পড়েছে।
একেবারেই গণতান্ত্রিকভাবে সবকিছু হচ্ছে এটা বলা যাবে না। নির্বাচন হলে কিছু কিছু সন্ত্রাস, অনিয়ম ও ব্যত্যয় ঘটে। যাকে গণতান্ত্রিক বলে অভিহিত করা যায়। এ পরিস্থিতির জন্য যারা দায়ী সামগ্রিকভাবে তারা শুধু সরকারি দলের নয়, মূলত দায়ী বিরোধী দলও।