২০২০ সাল নাগাদ বেসরকারি খাতে সাড়ে চার লাখকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েছে সৌদি আরব। একই সময়েতেল খাতের বাইরে থেকে আহরিত রাজস্বের পরিমাণ ৫৩হাজার কোটি রিয়ালে (১৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার) উন্নীতকরতে চায় দেশটি। সৌদি সরকারের জাতীয়
রূপান্তর পরিকল্পনায় (এনটিপি) এসব লক্ষ্যের কথা বলাহয়েছে।
সৌদি আরবের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পর্ষদ সোমবার এনটিপিঅনুমোদন করেছে। খবর রয়টার্স।
এনটিপির লক্ষ্য হিসেবে ‘সরকারি সেবার মান বৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধ আগামী ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।উচ্চাভিলাষী এ অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় পাঁচশর বেশি প্রকল্প রয়েছে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৭ হাজার কোটি রিয়াল(৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার)। এনটিপির কারণে সৌদি সরকারের ব্যয় পরিকল্পনা ব্যাহত হবে না বলে জানিয়েছেন দেশটিরঅর্থনৈতিক উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল মালিক আল–শেখ। উল্লিখিত ব্যয়ের বাইরে এনটিপি বিভিন্নউদ্যোগে সৌদি আরবের বেসরকারি খাত আরো ৩০ হাজার কোটি রিয়াল (৮ হাজার কোটি ডলার) জোগাবে বলে তিনি জানান।
সৌদি আরবের জনসংখ্যা বাড়ছে। এদিকে তেল রফতানির মতো প্রথাগত খাতের আয় কমছে। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক বাজারেঅপরিশোধিত জ্বালানির দাম হ্রাসের পর থেকে সৌদি আরবের রাজস্ব আয় হ্রাস পাচ্ছে। গত বছর দেশটি প্রায় ১০ হাজার কোটিডলার বাজেট ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে। এ অবস্থায় দেশজ অর্থনীতির চরিত্র পাল্টাতে এপ্রিলে একটি রূপকল্প প্রকাশ করেছেনডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। ভিশন ২০৩০ নামের ওই রূপকল্পের একটি অংশ এনটিপি।
সৌদি আরবের মোট দেশজ উত্পাদনে সরকারি ঋণের পরিমাণ ৭ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীতের কথাবলা হয়েছে এনটিপিতে। এছাড়া তেল খাতের বাইরে থেকে রাজস্ব আয় ও বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
সৌদি আরবের বাজেটের ৪৫ শতাংশই সরকারি কর্মীদের বেতন–ভাতা। এনটিপির আওতায় ২০২০ সাল নাগাদ বেতন–ভাতারপরিমাণ বাজেটের ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। এছাড়া পানি ও বিদ্যুত্ খাতে ভর্তুকি কমানো হবে ২০ হাজার কোটি রিয়াল (৫হাজার ৩৩০ কোটি ডলার)।
সৌদি সরকার জ্বালানি উত্পাদনে বিদ্যমান সক্ষমতা বজায় রাখবে বলে এনটিপিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দৈনিক সোয়া১ কোটি ব্যারেল তেল উত্পাদন সক্ষমতা বজায় রাখা হবে। এছাড়া গ্যাস উত্পাদন সক্ষমতা ১ হাজার ২০০ কোটি ঘনফুট থেকেবাড়িয়ে ১ হাজার ৭৮০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত করা হবে। সৌদি আরবের শোধনাগারগুলো বর্তমানে দৈনিক ২৯ লাখ ব্যারেল তেলশোধনের ক্ষমতা রাখে। এনটিপিতে শোধনক্ষমতা দৈনিক ৩৩ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে।
২০২০ সাল নাগাদ সৌদি আরব নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে ৩ দশমিক ৫ গিগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের লক্ষ্য স্থির করেছে।আণবিক বিদ্যুেকন্দ্রের স্থান নির্বাচন ও নির্মাণ প্রস্তুতির জন্য দেশটি ৩০ কোটি রিয়াল (৮ কোটি ডলার) ব্যয় করবে।
আগামী পাঁচ বছরে বিদ্যুত্ উত্পাদনের শতভাগ দায়িত্ব ‘কৌশলগত অংশীদারদের’ কাছে হস্তান্তর করতে চায় সৌদি আরব।পাশাপাশি পানি পরিশোধন খাতও বেসরকারি মালিকানায় হস্তান্তর করা হবে।
এছাড়া ডাক বিভাগ পুনর্গঠন, মেধাস্বত্ব নিবন্ধন দফতর প্রতিষ্ঠা এবং আমলাতন্ত্র ও মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বরাদ্দের কথাওএনটিপিতে বলা হয়েছে।