তথ্যপ্রযুক্তি বিতর্ক উৎসবে চ্যাম্পিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাতীয় পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিতর্ক উৎসবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রানার আপ হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় পর্যায়ে সারা দেশের ১৬টি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও রানার্স আপ ৩২টি দল অংশগ্রহণ করে। শনিবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে দিনব্যাপী প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যরা হলেন এহসানুর রহমান আবীর, মাহবুবুল ইসলাম, সৈকত ও ইথার আদিব রহমান। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হন চ্যাম্পিয়ন দলের মাহবুবুল ইসলাম। পুরস্কার বিতরণী পর্বে ১৬টি আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ী ১৬টি দলের সদস্যরা ৪৮টি ল্যাপটপ এবং রানার্স আপ ৪৮ জন পান স্মার্টফোন। জাতীয় পর্বে বিজয়ীরা পান ৩টি ম্যাকবুক এবং রানার্সআপ ৩ জন পান ৩টি আইফোন ৬ প্লাস। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী, বীরবিক্রম। তিনি উপস্থিত তরুণ বিতার্কিকদের উদ্দেশে বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি যুক্তির মধ্য দিয়ে। মহান মুক্তিযুদ্ধে জয় হয়েছিল যুক্তির। যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি সেই স্বপ্ন শুধু তরুণরাই বাস্তব করতে পারে। সমাজের সর্বস্তরে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে তোমাদেরই নেতৃত্ব দিতে হবে। অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন কিছু উদ্ভাবনের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তরুণদের আছে অদম্য সাহস। সমাধানের সাহস নিয়ে এগিয়ে আসে তরুণেরাই। তথ্য-যুক্তি-প্রযুক্তি নির্ভর এমন এক দক্ষ তরুণ প্রজন্ম আমাদের বিনির্মাণ করতে হবে যারা ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত করতে পারবে। আইসিটি খাতে ২০০ মিলিয়ন তরুনের কর্মসংস্থানের করতে চাই আমরা। তরুণরাই গড়বে নতুন দেশ, ডিজিটাল হবে বাংলাদেশ; যার নেতৃত্ব দেবে তরুণ বিতার্কিকরাই।’ নাহিম রাজ্জাক তার বক্তব্যে বলেন, ‘দেশের তরুণদের নীতিনির্ধারণে যুক্ত করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। দেশের আনুমানিক ৬৪% জনগোষ্ঠী তরুণ। এই তরুণদের হাতে প্রযুক্তি এবং সেই প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে বাংলাদেশ।’ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক এমপি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী সম্পাদক রোবায়েত ফেরদৌস মিডিয়া আইনজীবী ও প্রাক্তন বিতার্কিক প্রশান্ত ভূষন বড়ুয়া, সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন এর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির বিন শামস, বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি বুলবুল হাসান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বুয়েটের অধ্যাপক কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের (বিডিএফ) সভাপতি সঞ্জীব সাহা, ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ারের এডিটর ফিরোজ জামান চৌধুরী, বিডিএফের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শুকরানা, অক্সফামের আইটি ডিরেক্টর তাপস রঞ্জন চক্রবর্তী, র‌্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান। সভাপতির বক্তব্যে শ্যামসুন্দর সিকদার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া এখন জীবন অচিন্তনীয়। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের পর থেকে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের প্রতিক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে, এর মূলে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে তথ্যপ্রযুক্তি। তথ্য এবং প্রযুক্তি সবাইকে একই প্ল্যাটফরমে আনতে সক্ষম হয়েছে। ‘তথ্য-জুক্তি-প্রযুক্তি’ স্লোগানে আইসিটি ডিভিশন জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিতর্ক উৎসবের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন এবং ক্যা¤পাস টু ক্যারিয়ার (www.campus2career24.com)। সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে সিআরআই। এছাড়া এই আয়োজনে পার্টনার হিসেবে রয়েছে মনাশ ইউনিভার্সিটি, অক্সফাম, র‌্যাকটিক্যাল অ্যাকশন, টেকশহর, একাত্তর টিভি ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি