মালটা চাষে সাফল্য

মালটা চাষে সফল হয়ে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর এলাকার ধনাঢ্য কৃষক আবুবক্কর সিদ্দিক। তার বাগনে গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মালটা। শুধু তাই নয়, মালটাসহ তার বাগানে রয়েছে প্রায় অর্ধশত জাতের ফলের গাছ। এসব গাছের ফল আত্মীয়স্বজন ও দরিদ্রদের মাঝে বিলি করে একদিকে যেমন তিনি আত্মতৃপ্তি পাচ্ছেন অন্যদিকে বাড়ছে সবুজের সমারহ। আবুবক্করের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার বেকার যুবকরাও ঝুঁকছেন ফল বাগান গড়ে তোলার দিকে। জানা যায়, পাশের মিরাপুর নার্সারি থেকে মালটার চারা সংগ্রহ করে ২০১২ সালে আবুবক্কর বাগানে রোপণ করেন। চাকরি ও সংসারের কাজের ফাঁকে যতœ নিতে থাকেন মালটা গাছের। ৩ বছর পর মালটা গাছে ফল ধরে। এতে তার ব্যাপক আগ্রহ বাড়ে। এরপর কলমের মাধ্যমে বাড়তে থাকে মালটা গাছ। বাড়তে থাকে বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ। বর্তমানে তার বাগানে মালটা, আপেল, আঙুর, কমলা, চেরিফল, কামরাঙা, লিচু, আম, জাম, আমড়া, পেঁপে, কাঁঠাল, কলা, বেদানা, পেয়ারা, গোলাপজাম, জামরুল, সফেদা, নারিকেল গাছসহ প্রায় অর্ধশত ফলের গাছ রয়েছে। এছাড়া নানারকম বনজ ঔষধি, পাম ফলের গাছও রয়েছে। চারদিকে যেন মনোরম বাগান সবুজের বিশাল সমারহ।
সরেজমিন উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আবুবক্করের বাগানে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন সাইজের মালটা। সবুজ পাতার আড়ালে কিংবা পাতাঝরা ডালেও ঝুলছে থোকা থোকা মালটা। এ নিয়ে আবুবক্করের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথম গাছে মালটা ধরার পর থেকে ফল চাষের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্বপ্ন জাগে তার। এখন চলছে স্বপ্ন পূরণের পালা। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ধনী ও মাঝারি কৃষক এসব ফলমূল চাষে এগিয়ে এলে দেশে মালটাসহ বিভিন্ন ফলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হতো। এছাড়া ফল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব হতো।
ভবানীপুর ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফি উদ্দিন আহম্মেদ জানান, নওগাঁ এলাকায় এটাই প্রথম মালটা চাষ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবুবক্করের সাফল্য দেখে এলাকার বেকার যুবকসহ কৃষক এ ফল উৎপাদনে আরও উদ্বুদ্ধ হবেন।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাউছার বলেন, এ অঞ্চলে মালটা চাষ হয় এবং সাফল্য পাওয়া যায় এটা আবুবক্কর প্রমাণ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে তার এ সাফল্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করা হবে। এ উপজেলার মাটি মালটা চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী এবং এখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মালটা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।