উন্নয়ন মহাসড়কে দেশ

উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বড় বড় মেগা প্রকল্প, চার লেন প্রকল্প, পদ্মা সেতু প্রকল্প, উড়াল সেতু, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ক্রমেই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে।

আর এর মূল কারিগর বঙ্গবন্ধুতনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সততা, সাহসিকতা আর দৃঢ়তার কারণেই সব বাধা উপেক্ষা করে দেশ কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার হাতছানিই বটে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রমতে, স্বাধীনতার পর বর্তমান সরকারের মতো কোনো সরকারই এত উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখাতে পারেনি। দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলায় শেখ হাসিনা সরকার মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিশ্বের অনুন্নত অনেক দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন পলিসি অনুসরণ করছে। সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষ পর্যায়ে। হাতে নেওয়া হয়েছে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা।

বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বে ৪৫তম এবং ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে ৩৩তম স্থান অধিকার করেছে। গ্যালোপের হোপ ইনডেক্সে এসেছে, সুইজারল্যান্ডের পরই বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে আশাবাদী মানুষের দেশ। মানুষ আশাবাদী হিসেবে প্রস্তুত করার সফল কারিগরও শেখ হাসিনা।

কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধাপরাধের বিচার : ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে বর্তমান সরকার। ইতোমধ্যে ৫ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে।

এর মধ্যে চারজনই স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী দল জামায়াতের শীর্ষ নেতা। তাঁরা হলেন দলটির আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা। অন্যজন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। বাকিদের বিচারের কাজও চলছে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের ওয়াদা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি, রায় কার্যকর করা হচ্ছে, কেউই বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। যারা দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করবে, তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।’

যোগাযোগ ব্যবস্থা : শেখ হাসিনা সরকার যোগাযোগ খাতে উন্নয়নের জোয়ার এনেছে। ঢাকায় হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোড বহুমুখী উড়াল সেতু, মিরপুর-বিমানবন্দর জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু, মগবাজার-মালিবাগ উড়াল সেতুর একাংশ, টঙ্গীতে আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু এবং চট্টগ্রামে বহদ্দারহাট উড়াল সেতু উদ্বোধনের পর যোগাযোগ খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। রাজধানী ঢাকার যানজট অনেকটা কমে এসেছে। ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ চলছে।

পদ্মা সেতু : বর্তমান সরকারের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প। কারণ পদ্মা নদীর ওপর স্বপ্নের সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করতে গিয়ে বর্তমান সরকারকে কম বেগ পেতে হয়নি। প্রথমে বিশ্বব্যাংক সেতু নির্মাণে সিংহভাগ অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে পরে কথিত দুর্নীতির অভিযোগে টাকা ছাড় করেনি।

সে অবস্থায় দেশ-বিদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে নিয়ে নানা কল্পকাহিনী প্রচার হতে থাকে। অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না সরকার। শুধু তাই নয়, সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিসহ দেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ, যাদের অর্থনীতি সম্পর্কে ‘পাণ্ডিত্য’ আছে বলে অনেকেই মনে করেন, তাঁরাও প্রচার করতে থাকেন কোনোভাবেই এ সরকার পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করতে পারবে না।

সে অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, তাঁর সরকারের আমলেই পদ্মা নদীর ওপর সেতু হবে এবং তা হবে নিজস্ব অর্থায়নেই। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে অবিরাম চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১২ ডিসেম্বর সকালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ও নদীশাসন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে স্বপ্নের এই সেতু দিয়ে ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে ১৯ জেলা। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনও চলবে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু বাংলাদেশ সরকারের এ যাবৎকালের নিজস্ব অর্থায়নে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। জানা গেছে, ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর ৩৩ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৮ সালে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুুলে দেওয়া হবে। প্রথম দিনই সেতু দিয়ে রেলগাড়ি চলবে।

পদ্মা সেতু জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ১.২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ শিল্প স্থাপনা বাড়বে। ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মাওয়া, শিবচর ও জাজিরাকে ঘিরে আধুনিক স্যাটেলাইট শহর গড়ে তোলা হবে। মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও কেরানীগঞ্জ জেগে উঠবে নতুন উদ্যমে।

এছাড়া নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ক এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম ও জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ কাজ শিগগিরই শুরু হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ মাইলফলক হয়ে থাকবে।

গণতন্ত্র ও মাতৃসূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ : দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে নানা মতবিরোধ থাকলেও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের চেয়ে গণতন্ত্র সূচকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। ইকোনমিস্টের ইনটেলিজেন্স ইউনিটের গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৫তম আর পাকিস্তানের অবস্থান ১০৮তম। সেভ দ্য চিলড্রেনের মাতৃসূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩০তম, ভারতের ১৪০ এবং পাকিস্তানের ১৪৯তম।

অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের বিশ্বশান্তি প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম, ভারতের ১৪৩তম এবং পাকিস্তানের ১৫৪তম। দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শীর্ষক তৃতীয় জাতিসংঘ বিশ্বসম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, ‘দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।’

প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান : গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬.৫ শতাংশ। এর আগের ৫ বছরে গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.২ শতাংশ। বিশ্বঅর্থনীতিতে অধিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশ। বিশ্বের খুব কম দেশই একটানা এত দীর্ঘ সময় ধরে ৬ শতাংশের ওপর প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে। অচিরেই প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটের আকার ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

বার্ষিক আয় বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার, ৬ বছর আগে যা ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্যম আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার কমিয়ে ৪১.৫ শতাংশ থেকে ২২.৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০০৬ সালে অতিদারিদ্র্যের হার ছিল ২৪.২ শতাংশ। তা এখন ৭.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। মানুষের আয় ও কর্মসংস্থান বেড়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

রেমিট্যান্স ও বিদ্যুতে সাফল্য : ২০০৬ সালে রেমিট্যান্স আয় ছিল মাত্র ৪.৮০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.২ বিলিয়ন ডলারে। একই সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩.৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। রফতানি আয় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এসে দাঁড়িয়েছে ৩২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৪ হাজার ৭৭ মেগাওয়াট।

১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১০০ অতিক্রম করেছে। ৪৪ লাখ সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। ২০০৬ সালে গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন ছিল মাত্র ১৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ২০১৫ সালে গ্যাস উৎপাদন গড়ে দৈনিক ২ হাজার ৭২৮ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। ১৬টির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ : ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। এজন্য বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে একের পর এক মহাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন কেন্দ্র করার উদ্যাগ নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ হাজার ৮৭ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। যার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত।

স্বাধীন গণমাধ্যম : বর্তমান সরকারের সময়ে মিডিয়া সবচেয়ে বেশি স্বাধীন। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে সরকারের সমালোচনা করতে পারছে। সরকার নতুন বেসরকারি ৩২টি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দিয়েছে।

জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালাসহ তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালাসহ তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। সাংবাদিকদের সহায়তায় এ পর্যন্ত ৪ কোটিরও বেশি টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র আরও জানায়, গত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে বাংলাদেশ ছিল খাদ্য ঘাটতির দেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দেশে বর্তমানে শিক্ষার হার ৭১ শতাংশ। যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল ও কলেজ নেই, সেখানে একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণ কাজ এগিয়ে চলেছে।

প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা ভাবা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায়। বাংলাদেশে এখন মোবাইল সিম গ্রাহকের সংখ্যা ১৩ কোটিরও বেশি। ইন্টারনেট গ্রাহক ৫ কোটি ৭ লাখ ৭ হাজারের বেশি। ২০১৬ সালেই মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হবে।

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর এবং যশোরে হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। বিভাগীয় শহরে সিলিকন সিটি স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। থ্রিজি সেবা চালু করা হয়েছে। ফোরজি চালু প্রক্রিয়াধীন।

বিশ্বপরিমন্ডলে বাংলাদেশ : বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়ন ও প্রশংসনীয় কর্মকান্ডে বিশ্বপরিমন্ডলে বাংলাদেশ এখন পরিচিত নাম। বাংলাদেশ অর্জন করেছে অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার। বাংলাদেশ এমডিজি অ্যাওয়ার্ড, সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড এবং আইটিইউর ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি’ পুরস্কার পেয়েছে।

প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করায় জাতিসংঘ পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারের জন্য আইটিইউ আমাদের ‘ÔICTs in Sustainable Development Award 2015’ প্রদান করেছে।

বাংলাদেশ জাতিসংঘে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছে। ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে ‘ইউনেস্কো ক্যাটাগরি-২ ইনস্টিটিউট’-এর মর্যাদা দিয়েছে। বাংলাদেশ ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার : ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ পররাষ্ট্রনীতির এই মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন পথ রচনায় সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৪৪ বছর পর ২০১৫ সালে ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমানা চুক্তি অনুমোদিত হয়েছে।

এর মাধ্যমে ৫২ হাজার ছিটমহলবাসীর ৬৮ বছরের মানবেতর জীবনের অবসান হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান এই চার দেশের মধ্যে মোটর ভেহিক্যাল চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ এখন একটি ‘ব্র্যান্ড নেম’।

তবে এত উন্নয়নের পরও থেমে নেই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ৪৫ বছরেও অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। তারা গুপ্তহত্যা, গুম, খুন, চোরা হামলা, বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা, আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত করার অপচেষ্টা করছে।

সম্প্রতি এক বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়ন বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্ব সহ্য করতে পারে না। মানুষ শান্তিতে থাকবে, হাসিমুখে জীবনযাপন করবে- তা ওদের সহ্য হয় না।

আমাদের সবার মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ যখন উন্নয়নের সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির দোসররা আবারও অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি আমরা। কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবই।’

গভীর সমুদ্রবন্দর : দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর করার ব্যাপারে দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এতদিন তা আলোর মুখ দেখেনি।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছা আর আগ্রহে কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে জাপানের প্যাসিফিক কনসালট্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক টেকনো ইকোনমিক স্টাডি করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দর করার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব দিয়েছে জাপান। আশা করা যাচ্ছে, খুব সহসাই গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।