তিন লাখ হাওরবাসীর ঘরে জ্বলবে বিদ্যুতের আলো

সিলেট বিভাগের পল্লী এলাকায় ৩ লাখ ২০৬ হাজার নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিলেট জেলার হাওর এলাকায় এই সংযোগ দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে সিলেট বিভাগ পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং বিআরইবির সদর দপ্তরের ভৌত সুবিধাদির উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ সাল পর্যন্ত।

সিলেট বিভাগের ৪টি জেলার যে ৬টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে সেগুলো হচ্ছে- হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট-১, সিলেট-২ ও নেত্রকোনা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আহমদ হোসেন খান জানান, সিলেট বিভাগের পল্লী এলাকায় সুলভ মূল্যে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন ও দারিদ্র্য বিমোচন প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অবদান রাখবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছে। পল্লী এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বৃহত্তর গ্রামীণ জীবনের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর জন্য বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩ লাখ ১০ হাজার কিলোমিটার লাইনের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করেছে। সিলেট বিভাগীয় অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ১ হাজার ৩৯৪ কোটি ২৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়-সংবলিত ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ সিলেট বিভাগীয় কার্যক্রম এই প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করে। প্রকল্পটির ওপর ২০১৬ সালের ৭ জুলাই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ পিইসি সভার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলা নতুন করে অন্তর্ভুক্তির কারণে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়-সংবলিত সিলেট বিভাগ পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং বিআরইবির সদর দপ্তরের ভৌত সুবিধাদির উন্নয়ন শিরোনামে পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করেছে। প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে ৭ হাজার ৩০০ কিলোমিটার ৩৩ কেভি অথবা নিম্নতর ভোল্টেজ লাইন নির্মাণ, ১২টি নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ, ১৯টি উপকেন্দ্র অগমেন্টেশন, ৩টি সুইচিং স্টেশন নির্মাণ, ৭ দশমিক ৬৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ৩ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক সংযোগ এবং বাপবি বোর্ডের সদর দপ্তরে ১০ তলা ভিত্তিসহ একটি ৬ তলা অফিস ভবন ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।