পোশাক খাতে সংস্কার কর্মসংস্থান বাড়াবে

তৈরি পোশাক খাতের চলমান সংস্কার সফলভাবে শেষ করতে পারলে রফতানি এবং কর্মসংস্থান আরও বাড়বে। চীনের ছেড়ে দেওয়া বাজারের একটা বড় অংশও আয়ত্তে আনা সম্ভব হবে।

‘সেলাই থেকে সমৃদ্ধি? দক্ষিণ এশিয়ার তৈরি পোশাক খাতে কর্মসংস্থান, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর বিআইডিএস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিশ্বব্যংকের প্রতিবেদনটি যৌথভাবে সম্পাদনা করেন সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার লিড ইকোনমিষ্ট গ্গ্নেডস লোপেজ এসিভেডো ও টেক্সাস এন্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক রেমন্ড রবার্টসন। প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন গ্গ্নেডস লোপেজ। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে পোশাক শিল্পে বিশ্বের গড় রফতানির তুলনায় ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যায়ক্রমে চীনের ছেড়ে দেওয়া পোশাক বাজারের সুবিধা নিতে ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সামনে যে সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগাতে ক্রেতাদের পছন্দের বিবেচনায় বাংলাদেশকে উৎপাদনে আরও সাশ্রয়ী হতে হবে। সফলভাবে চলমান সংস্কার শেষ করতে হবে। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পোশাকের দর ১০ শতাংশ বাড়লে বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা বাড়বে প্রায় ১৪ শতাংশ। এতে অন্তত ৪ দশমিক ২২ শতাংশ নতুন কর্মসংস্থান হবে। তবে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, পোশাকপণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের উন্নয়নসহ কমপ্লায়েন্স শর্ত প্রতিপালন করতে হবে বাংলাদেশকে।

ন্যায্য দরের বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে ক্রেতাদের : প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, শিল্প উন্নয়নের স্বার্থে অবকাঠামো উন্নয়ন, আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট সেবার প্রক্রিয়া আরও সহজ করা প্রয়োজন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ব পোশাক বাজারে চীনের ছেড়ে দেওয়া বাজারের সুযোগ নিচ্ছে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াসহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো। এটা বাংলাদেশের জন্য সতর্ক সংকেত। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সংস্কারের বিশাল উদ্যোগ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহল অবগত। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটই এ মুহূর্তে পোশাক শিল্পের বড় সমস্যা। এ বিষয়ে গবেষণা করতে বিশ্বব্যাংক এবং বিআইডিএসকে অনুরোধ করেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান। সে হিসেবে পোশাক খাত এ দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিল্ডের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক খাতের উন্নয়নে জাতীয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কাজ করছেন উদ্যেক্তারা। এখন ক্রেতাদের উচিত, পোশাকের ন্যায্য দরের বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হওয়া। এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি সালাহউদ্দিন কাশেম খান বলেন, শ্রমিকদের দক্ষতার সংকট একটা বড় সমস্যা। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. কে এ এস মুরশিদ বলেন, পরিবর্তিত বাজার ব্যবস্থার সুযোগ কাজে লাগাতে নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।