কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে

অর্থবছরের শুরুর দিকে ব্যাংকগুলোর তেমন আগ্রহ না দেখালেও এখন কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণ করেছে লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ দশমিক ১২ শতাংশ। সামগ্রিক ব্যাংক খাতে সুদহার কমে আসায় এখন ব্যাংকগুলো কৃষিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানা গেছে।

কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জোর তত্পরতা এবং ব্যাংক গুলোর উদ্যোগের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। অগ্রাধিকার খাত হিসেবে এ খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকগুলোর প্রতি নির্দেশনা দিয়ে আসছে। আর ব্যাংকগুলোর দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ না হলে জরিমানারও ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব কারণেই কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে।

চলতি অর্থবছর ব্যাংক খাতে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষমাত্রা রয়েছে। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ হয়েছে ১২ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। বিতরণের পরিমাণ বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ দশমিক ১২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কৃষি খাতে বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ সুদ নিতে পারে ব্যাংক। একটি সময় ব্যাংকগুলো গড় সুদহারের তুলনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত সুদহারে বেশি ব্যবধান ছিল। বর্তমান সামগ্রিক ব্যাংক খাতের সুদহার নেমে এসেছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশে। এক বছর আগে যা সাড়ে ১২ শতাংশ ছিল। পাশাপাশি কৃষি খাতে ঋণ বিতরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপ রয়েছে।

চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে নয় হাজার ২৯০ কোটি টাকা। মার্চ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ছয় হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। এ ঋণ পুরো বছরের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এদিকে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে আলাদা আলাদা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলো। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য নির্ধারিত সাত হাজার ১১০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ হয়েছে ছয় হাজার ২৬৯ কোটি টাকা বা লক্ষ্যমাত্রার ৮৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থাত্ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ১০ শতাংশ এগিয়ে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে খাদ্য শস্য উত্পাদনে। এতে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। এর পরে কৃষকরা বেশি ঋণ নিয়েছে মুরগী পালন ও মাছ চাষের জন্য। মুরগি পালনের জন্য ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৮৩২ কোটি টাকা এবং মাছ চাষে মোট ঋণ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৪০৪ কোটি টাকা।