বাংলাদেশের অটিজমবিষয়ক পরামর্শক কমিটির চেয়ারপারসন ও মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ডাব্লিউএইচও এক্সপার্ট অ্যাডভাইজরি প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, বিশ্বব্যাপী অটিজম ও অন্যান্য নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা ও তাদের জীবনমানে দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সৃষ্টিশীল, সুলভ ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সাত বছর ধরে একটি বহুমুখী ও বহুপক্ষীয় মডেল বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের এই অনন্য মডেল অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। গত শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘে ‘অটিজম মোকাবিলা : এসডিজির আলোকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কৌশল’ শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।
অটিজম সচেতনতা দিবস ২০১৬ উদ্যাপন উপলক্ষে জাতিসংঘের দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র এবং অটিজম স্পিকস যৌথভাবে এ ইভেন্টের আয়োজন করে।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন ও কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি আলিয়া আল-থানির সঞ্চালনায় এ উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের পত্নী বান সুন-টেক, অটিজম স্পিকসের সুজানা রাইটস এবং ভারত, কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি ও ইকোসকের প্রতিনিধি বক্তৃতা করেন।
প্রত্যেক বক্তাই দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি ও তাদের অধিকার রক্ষায় অনন্য সাফল্য অর্জন করায় সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অটিজমসহ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের উল্লেখ করে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক আইন গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রণী দেশ। বাংলাদেশ এর প্রটোকলও স্বাক্ষর করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও বিশিষ্ট স্কুল মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধীসহ সব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। সরকারের প্রায় সব উন্নয়ন-সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার নিয়মিত কর্মকাণ্ডে অটিজমে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের সৃষ্টিশীল কর্মের বিকাশ নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে অটিস্টিক শিশুদের আঁকা চিত্রকর্ম ব্যবহার করেন।
দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে সকালে জাতিসংঘের উদ্বোধনী অধিবেশনেও সায়মা ওয়াজেদ হোসেন অংশগ্রহণ করেন। এ অধিবেশনে বৈষম্য হ্রাস (এমডিজি১০) বিষয়ক এক প্যানেল আলোচনায় সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, অটিস্টিকদের অধিকার রক্ষা এবং শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও অন্যান্য আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশে এখন ১৪টি মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
এর আগে নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে নেমেই উষ্ণ অভ্যর্থনা পান সায়মা। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে জেএফকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীও এতে উপস্থিত ছিল।