ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের ৭টি গ্রামে বিনা চাষে ধান ক্ষেতে খিরাই ও কুমড়া ফলিয়ে লাভবান হয়েছে কৃষকরা। নারী পুরুষ মিলে বিনা চাষে ধানের জমিতে এ অসাধ্য সাধন করেছে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুরাও কাজ করছে। তারাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পিতা মাতার সঙ্গে। সচ্ছলতা ফিরে এসেছে তাদের পরিবারে। পুরুষদের পাশাপাশি শিশু ও নারীরাও শ্রম দিচ্ছে। ধানের চেয়ে লাভবান হওয়ায় খিরাই ও কুমড়া চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে দিন দিন। ফাগুনের শিশির ঝড়া সকালে মাঠে নেমে পড়ছে আবাল বৃদ্ধ বণিতা সবাই। কেউ কুমাড় শাক কাটছে, কেউবা ব্যস্ত কুমড়া ফুল কেটে আঁটি করতে অথবা গাছ থেকে খিরাই তুলে প্যাকেট করছে। এভাবেই শুরু হয় এ এলাকার কৃষকদের সকাল।
বাড়ির আঙ্গিনা ও কান্দি ছাপিয়ে ঝালকাঠিতে এখন ধানি জমিতে ব্যাপক ভাবে খিরাই ও কুমড়া উৎপাদন শুরু হয়েছে। কুমড়া ফুল ও শাক বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করছে কৃষকরা। মনের আনন্দে ক্ষেতে কাজ করছে তারা। এসব গ্রামের যে দিকে চোখ যায় খিরাই ও কুমড়া ক্ষেত চোখে পড়ার মত। উপর থেকে এসব ক্ষেতের শাক আর ফুল দেখে বোঝার উপায় নেই ফলে ভরা মাঠ। ফাগুনের এই ভোরের শিশির ভেজা মাঠ থেকে কুমড়া ফুল নিয়ে বাজারে ছুটে চলাই কৃষকের কষ্টের কথা ভূলিয়ে দেয়। ধানের ক্ষেতে গর্ত করে কোন চাষ ছাড়াই এ ফসল ফলানো হচ্ছে। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যেই ফলন পাচ্ছে কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্র জানায় চলতি বছর ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের ৭ গ্রামে প্রায় ১শ একরে খিরাই, ২২৫ একরে কুমাড়ার আবাদ হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে দিয়াকুল, আতাকাঠি, পণ্ডিম ভাওতিতা, দেউড়ি, রাজাপুর, নাগপাড়া ও পোনাবালিয়া। এসব গ্রামের প্রায় ৭শ চাষী এ ফসল ফলাচ্ছে। মাত্র ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১ একরে প্রায় ২শ মেঃটন কুমার পাইকারি বিক্রি করে ১ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার টাকা খরচ করে ১ একরে প্রায় ৪০ মেঃটন খিরাই পাইকারি বিক্রি করে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আসিফ ইকবাল জানান, আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ ও সহযোগিতায় কৃষকদের এই পরিশ্রম সফল হয়েছে।