রফতানিতে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত

রফতানি আয়ে ইতিবাচক ধারা বজায় রয়েছে। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসেও রফতানি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। সব মিলে চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় নয় শতাংশ। এ সময়ে উভয় হিসাবেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় বেশি হয়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মাসে মোট আয় এসেছে দুই হাজার ২১২ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৩১ কোটি ১৮ লাখ ডলার, যা ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা থেকে রফতানি বেড়েছে প্রায় আড়াই শতাংশ। অন্যদিকে একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে রফতানি হয়েছে ২৮৫ কোটি ৪২ লাখ ডলারের পণ্য। গত অর্থবছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ২৫১ কোটি ২৪ লাখ ডলার। আর এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় বেড়েছে ৫ শতাংশ।

রফতানিতে বরাবরের মতো তৈরি পোশাকের আধিপত্য ছিল এ সময়েও। চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ ও কাঁচাপাট থেকেও ভালো আয় এসেছে। তবে চিংড়ি, চা, প্লাস্টিক পণ্যের আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে। এসব পণ্য থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আয়ও আসেনি।

রফতানিকারকদের মতে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই ইতিবাচক অবস্থা বজায় রয়েছে। তারা বলেন, পোশাক খাতে চলমান সংস্কারের ফলে ‘বাংলাদেশ ব্র্যান্ড’ নিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা আগের চেয়ে বেড়েছে। এর সুফল মিলতে শুরু করেছে। প্রধান পণ্য পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান অবশ্য এ আয় নিয়ে খুব সন্তুষ্ট নন। তার মতে, বাংলাদেশের সামর্থ্যের তুলনায় এ আয় খুব বেশি উল্লেখযোগ্য নয়। তিনি বলেন, পোশাক খাতে আরও ভালো করার সামর্থ্য রয়েছে। খুব সহজেই বিশ্ব বাজারের অতিরিক্ত ৩ শতাংশ বাজার দখলে নেওয়া সম্ভব। কেননা এ দেশের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে ও নতুন বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের বর্তমান অংশীদারিত্ব ৫ থেকে ৮ শতাংশে উন্নীত করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে কিছু নীতি সহায়তা পেলে সে প্রমাণ দিতে প্রস্তুত আছেন তারা। তিনি বলেন, প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৮ দেশের অভিন্ন মুদ্রা ইউরোর দর আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে কমেছে ২০ শতাংশ। গত কয়েক বছর ধরে এ পরিস্থিতে মুনাফা হারাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। একটি আপদকালীন সময়ের জন্য ইইউতে রফতানিতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হলে উদ্যোক্তারা ক্ষতি পুষিয়ে সেখানে রফতানি আরও বাড়াতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মোট রফতানির ৬১ শতাংশ আসে ইইউ থেকে। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের সমাধানসহ সহায়ক অবকাঠামোও প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

ইপিবির প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সর্বশেষ আট মাসে পোশাাক থেকে আয় এসেছে এক হাজার ৮১৩ কাটি ডলার।