স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও শেখ হাসিনা

একটু দেরিতে জেগেছে আলসে সূর্যটা। পদ্মাকূলে তখনো পূর্ণরূপে কুয়াশা ভেদ করার সাহস দেখাতে পারেনি রৌদ্র আভা। শিরশির শীতল হাওয়ায় অথৈ পদ্মা অনেকটা নীরব-নিস্তব্ধ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হিম সকালের কুয়াশা চাপিয়ে সূর্যরশ্মি যখন পদ্মাবক্ষে পড়তে শুরু করেছে তখন আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠল প্রমত্মা তটিনী। চেয়ে দেখল চারপাশে সাজসাজ রব। দূর-দূরান্ত থেকে এসে জড়ো হচ্ছে হাজারো মানুষ। পদ্মাপার যেন উৎসবে রঙিন। তবে এমন বর্ণালি আয়োজন পদ্মামনে তুলতে পারেনি আনন্দ ঢেউ। উৎসবের বর্ণাঢ্যতা পুরোটাই অজানা তার কাছে। অবশেষে অভিমানী পদ্মা প্রকৃতি পত্রে জানতে পারল, স্বপ্নের খাঁচায় বন্দি নিজ নামের বৃহৎ পক্ষীটি উড়তে চলেছে নিজস্ব ডানায়। আর সেই বিহঙ্গের মুক্ত সাধ পূরণ করতে আসবেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুতনয়া। এবার উৎফুল্ল আমেজে গর্বিত পদ্মা বুক চেতিয়ে প্রস্তুত অতিথি বরণে। কখন আসবেন দেশরতœ শেখ হাসিনা। যার যোগ্য নেতৃত্ব, সাহসিকতা ও দৃঢ়চেতা মনোবল দীর্ঘদিনের বুননকৃত স্বপ্নটি অঙ্কুরিত হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে বলছে, একটু দেখ না আমায়। সব ষড়যন্ত্রের কঠিন জবাব হেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন স্বপ্ন সেতুর মূল কাজ। তাই পদ্মাকূলে সমবেত আবালবৃদ্ধবনিতা নেচে-গেয়ে আনন্দ উদযাপন করছে তার প্রতীক্ষায়। সকাল সাড়ে ১০টার পর প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি যখন শরীয়তপুরের জাজিরায় পৌঁছায় তখন পদ্মা ও পদ্মাপারে বইতে থাকে আনন্দ জোয়ার। অসংখ্য মানুষের আবেগ-অনুভূতির অভিবাদনে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে জাজিরায় প্রকল্পের নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করেন। পরে শেখ হাসিনা কর্তৃক মূল কাজের ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণ কর্মযজ্ঞ। তাও আবার নিজস্ব অর্থায়নে। এমন বাস্তবতায় যদি প্রশ্ন করা হয় কোনো সমালোচক বন্ধুকে তাহলে কী বলবেন তিনি। হয়তো কিছু একটা বলবেন। তবে যে যাই বলুক, আমি বলবÑ ‘এবার দেখবি যদি আয়রে তোরা, আয়রে চলে আয়; দুরন্ত পদ্মায় উড়ন্ত সেতু উড়ছে নিজের গায়।’
বিজয়ের এ মাসে পদ্মায় বিশাল কর্মপরিধির ফিতা কেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও প্রমাণ করলেন তার দূরদর্শী নেতৃত্ব বাঙালি ও বাংলাদেশকে কী দিতে পারে। পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধনীতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বীরের জাতি। আমরা আমাদের কথা রেখেছি। নিজেদের অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। কাজ হাতে নেওয়ার পর বিশ্বব্যাংক অর্থায়নের কথা বলে। হঠাৎ তারা অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেয়। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তবে তারা প্রমাণ দিতে পারেনি। তখন কিন্তু বলেছিলাম, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, নিজেদের অর্থায়নেই এ সেতু নির্মাণ করব।’ ঠিক তাই। পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়ে বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির যে বার্তা দিল বিশ্ববাসীকে তা নিশ্চয়ই গর্বের, অহঙ্কারের। তাই হাসিনায় আস্তা রেখে বাঙালি গর্বিতচিত্তেই বলতে পারেÑ আমরা বীরের জাতি, আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবা না।
এবার বিশ্বাস হলো তো, কেন তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা। পদ্মার বুক চিড়ে একদিন স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটবে এমনটি রূপকথার গল্পেই সীমাবদ্ধ ছিল। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলছিল সাধারণ মানুষ। আর ওদের কথা বলতে গেলে বলতে হয়Ñ যারা ভ্রু কুঁচকে নানা কথা বলেছিলেন দেশবাসীর সামনে তাদের আসল চেহারাটা এবার উপস্থাপিত হলো। একদিন পদ্মায় সেতু হবেÑ দীর্ঘদিন ধরে এমন স্বপ্নই দেখে আসছিল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। সেই আনন্দে পদ্মাপারের পঞ্চাশোর্ধ্ব এক বাসিন্দা বললেনÑ ‘আমার তিন বিঘা জমি গেছে। একটা বাড়ি গেছে। আমাগো থাকনের নাইগা জায়গা দিছে সরকার। অহন হেই জায়গায় থাকি। প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করি দিছে। আমাগো এলাকাডা উন্নত হইয়া যাইতাছে। আমাগো পোলাগো আর কামের নাইগা বিদেশ জাওন নাগবো না। দেশটা স্বাধীন হইছিল যহন তহনকার মতন আনন্দ নাকতাছে।’
‘পদ্মার ঢেউ রে, মোর শূন্য হৃদয় নিয়ে যা, যা রে…’ মরমি শিল্পী আব্বাস উদ্দীনের গাওয়া গানের সেই পদ্মার কথাই বলতে চাচ্ছি। পদ্মা কিনারের মানুষের হৃদয় আজ শূন্য নয়, যার বক্ষে উড়াল দিচ্ছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু। পদ্মার বিশালতা সেখানকার পরিবেশকে যেমন সাজিয়ে রেখেছে তেমনি তার উত্তাল ঢেউ আর নিস্তব্ধ নীরবতা মানুষকে শিহরিত করে তোলে। এ নদীর তীরবর্তী মানুষগুলো অনেকটা নিরুপায় তার ভয়াবহ আগ্রাসনের কাছে। পদ্মা যেমন একটি বৃহৎ নদী তেমনি দেশ তথা বিশ্বের কাছে পদ্মাই আজ গর্বিত একটি নাম। পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণে সেখানকার স্থানীয় মানুষজনসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে এক ধরনের উৎফুল্ল ও আশা জাগানিয়া বাড়তি স্বপ্ন রূপ লাভ করেছে। এই সেতুটি নির্মিত হলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনই ঘটবে না, বহির্বিশ্বের কাছে দেশকে নিয়ে যাবে অনন্য এক উচ্চতার আসনে। এককালের তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ পাওয়া দেশটি পদ্মা সেতু নামক বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়ে অপবাদকারীদের মুখে ছাই ঢেলে উচিত জবাব দেওয়ার সর্বোৎকৃষ্ট কর্মপন্থা হিসেবে দেশ ও জাতির মুখে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে বলেই প্রতীয়মান হয়। বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-কে বাধাগ্রস্ত করতে দেশ ও দেশের বাইরের পদ্মা সেতু বিরোধী সব শক্তি একাট্টা হয়ে মুখ ফুলিয়ে বুক ভাসিয়ে সভা-সেমিনারে যেভাবে কথার ফুলকি ছড়িয়েছিলেন তারা যেন আজ নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শাড়ির আঁচলে মুখ ঢাকার চেষ্টা করছেন আর লজ্জায় অবনত শিরে মাথা ছাপড়াচ্ছেন। বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাংকসহ সমালোচক দেশ ও অপবাদকারীদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বৃহৎ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী সব গোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাচ্ছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ।
১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে শুরু হয় পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর উদ্বোধন করেন তখনই পদ্মায় সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাব দিতে বলা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৯৮ সালেই পদ্মা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। সেই থেকে শুরু পদ্মা সেতুর পথচলা। ওই মেয়াদেই ২০০১ সালের ৪ জুলাই প্রকল্পের মাওয়া অংশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতায় এলে স্থবির হয়ে পড়ে সবকিছু। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ফের সেতুটি নির্মাণে মনোযোগী হন। স্বপ্ন দেখান দেশবাসী ও পদ্মাপারের মানুষজনকে। আর এতে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও আইডিবি। ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ২০১২ সালের ২৯ জুন তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগে আকস্মিকভাবে ১২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বাতিল করে এ প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা। এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ। অবশেষে দেশি-বিদেশি নানা প্রতিবন্ধকতা, বিরোধিতা ও সমালোচনাকে উপেক্ষা করে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়েই নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার অংশ হিসেবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ১৪ বছর পর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মায় ঘটতে যাচ্ছে স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফলন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু হবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু। মোট ৪২টি পিলারের ওপর সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকবে। এর মধ্যে ৪০টি নদীর ভেতর এবং দুটি সংযোগ সেতুর জন্য। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ২৭ শতাংশ, মূল সেতুর অগ্রগতি ১৬ শতাংশ, নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ১২ শতাংশ এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ। সব ঠিকঠাক মতো চললে আগামী ২০১৮ সালেই বহুল আকাক্সিক্ষত এ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যেমন নতুন দ্বারা উন্মোচিত হবে তেমনি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সূচিত হবে নবইতিহাস। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, দেশের দীর্ঘতম এ সেতুটি নির্মিত হলে, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়বে এক দশমিক দুই শতাংশ। তবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে, তার মূল্য অর্থনৈতিক হিসাবের চেয়েও অনেক বেশি। প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘কারিগরি ও অর্থায়নÑ উভয় দিক থেকেই বড় ধরনের এই প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হচ্ছে এটা যেমন সত্য, তেমনি এটাও সত্য যে, আমরা সক্ষমতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের আরও প্রকল্প করতে পারব। এটা একটা উদাহরণ।’ স্বপ্নের এই সেতুটি নির্মিত হলে বিরাট একটি মাইলফলক স্পর্শ করবে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকার। শুধু তাই নয়, নিজস্ব অর্থায়নের এই বৃহৎ প্রকল্পটি ষড়যন্ত্রকারীদের চিন্তার বাড়তি একটা কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘সাপরূপে কামড় ওঝারূপে ঝাড়া’ এবং ‘চোরকে চুরি করার সাহস আর গৃহস্থকে সজাগ থাকার উপদেশ’ গ্রাম্য প্রবাদে প্রচলিত দুটি উক্তি প্রায় সবারই জানা। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা বিশ্বব্যাংকের অবস্থাটা অনেকটা এ রকমই। তারা আজ আমাদের পরম বন্ধুরূপে সৎ উপদেশ দিচ্ছেন। দুর্নীতির অভিযোগে দুই বছর ঝুলিয়ে রেখে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণকে হতাশা করে পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় বিশ্বব্যাংক। অনেক টানাপড়েনের পর বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়েই সরকার ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্যোগে পদ্মায় স্বপ্নের সেতু বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাংকের ঘুম হারাম হয়ে যায়। বিশ্বব্যাংক যেন আজ এগিয়ে এসে বাংলাদেশ সরকারকে পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে নিজেদের দায়িত্ববোধের পরিচয় দিচ্ছেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে বিশ্বব্যাংকসহ বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বব্যাংক মনে করেছিল বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশ এত বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার সাহস দেখাতে পারবে না। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের কাছে ধরনা দিয়ে যাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুতনয়া যে ধরনা দেওয়ার পাত্র নন। সে হিসেবেই দেশকে পরিচালিত করছেন তিনি। পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তা পেছনে ফেলে বাংলাদেশের সঙ্গে এবার ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর বৈঠকে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন প্রসঙ্গ সরিয়ে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে উভয় পক্ষ। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী কৌশিক বসুকে স্পষ্টতই বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যে ঝগড়া হয়েছিল, সেটি এখন অতীত। আমরা বিশ্বব্যাংককে পার্টনার বলেই মনে করি।’
স্বপ্নের এই সেতুকে নিয়ে বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে এ দেশের দলবাজ সুযোগসন্ধানী কিছু মানুষ ও সরকারের মধ্যে একসময় যে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছিল তা নিয়ে দুরাশায় ছিল এ দেশের মানুষ। সবকিছু ছাপিয়ে এবার সফল পরিণতির দিকে এগোচ্ছে স্বপ্নের সেতু। প্রকল্প বাস্তবায়নে আর কোনো সন্দেহ নেই, নেই কোনো দ্বিধা। শুরু হয়েছে, শেষও হবে। নদীশাসন ও প্রকল্প কাজের উদ্বোধনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘দাবি লাগবে না, আমরা জানি কোথায় কী লাগবে, নিজেরাই করে দেব। যা যা করণীয় তা আওয়ামী লীগ সরকার করে দেবে। আওয়ামী লীগ অন্তর থেকে এ দেশের মানুষকে ভালবাসে। সেই ভালবাসা থেকেই উন্নয়ন করবে। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছেন, তাই তো উন্নয়ন করতে পারছি, সেবা করতে পারছি, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারছি।’ শেখ হাসিনার এই বক্তব্য কোটি মানুষকে আশা জাগিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তারই কন্যা। নিজ সামর্থ্যে পদ্মায় সেতু নির্মাণ তারই একটি উদাহরণ। – See