সরকারবিরোধী বা তার সমালোচকরা যে যাই বলুন, রাজনৈতিক কারণে বলতেই পারেন; কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব ঘটে গেছে। আর এর নায়ক হিসেবে উঠে এসেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। দেশজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তির নেটওয়ার্ক যেভাবে দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে তাতে সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে তার এই সাফল্যের সুবিধা দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠী ভোগ করছেন। একুশ শতকের দুনিয়া শুধু কূট রাজনৈতিক কৌশলের নয়, বাগ্মিতারও নয়, মেধা-মননশীলতার সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভরও হয়ে উঠেছে। সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের রাজনীতির দুয়ার সেই দিকে খুলে দিয়েছেন। মেধাবী তারুণ্য আগামী দিনের রাজনীতিতে এই পথেই তাদের জায়গা করে নিতে পারবেন। মেধাবী প্রজন্মের রাজনীতিতে উঠে আসার পথ এখানেই তৈরি হয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেই বলেছেন, তার এলাকার মানুষ ও তার মা তাকে নির্বাচন করতে বলেছিলেন কিন্তু তিনি করেননি। দলীয় কোনো পদও নেননি। পদ-পদবির বাইরে নেপথ্যে থেকেও দেশের জন্য অনেক বড় স্বপ্ন অর্জনে কাজ করা যায় এবং সাফল্য আনা যায় সেটি তিনি প্রমাণ করেছেন।
হার্ভার্ডের উচ্চশিক্ষিত আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয় উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যদের মতো হয়তো এ দেশেও আগামী দিনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাল ধরবেন, তৃতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে। কিন্তু তার আগেই ২০০৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের সেøাগানটি দলের জন্য ছুড়ে দেন। গণরায় নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের সেøাগান তুলেছিল তখন অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছিলেন। তাদের মুখে কুলুপ এঁটে দিয়ে আজ ৭ বছরের মাথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের যে চিত্রপট তৈরি হয়েছে সেখানে প্রযুক্তির সাফল্য মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
তথ্য ও প্রযুক্তি বা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের কাছাকাছি এখন আমরা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয় ক্ষমতার দম্ভ নয়, দুর্নীতির বরপুত্র নয়, একজন উচ্চশিক্ষিত মেধাবী তরুণ হিসেবে আইটি সেক্টরে স্বপ্নের দুয়ার খুলে তারুণ্যের ভেতরে নিজের স্বপ্নকে সঞ্চালন করে নায়কের মতো আবির্ভূত হয়েছেন। তথ্য ও প্রযুক্তির বিস্ময়কর বিপ্লব ঘটিয়ে তিনি এখন আইডল।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। এই সেক্টরে জয়ের স্বপ্ন এখন তার হাতের মুঠোয়। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, সেটি কখনো স্বপ্ন নয়, যেটি মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, সেটিই স্বপ্ন যেটি মানুষের ঘুম কেড়ে নেয়। সজীব ওয়াজেদ ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখেননি।
এক সময় ডাক বিভাগের সেøাগান ছিল ‘চিঠি লিখুন ইহাই স্থায়ী’ সেটিকে বাসি করে দিয়ে মানুষ এখন ইমেইল পাঠায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মুঠোফোনে পাঠায় খুদে বার্তা। টেলিগ্রাফ ও ডাকঘর অফিস বাড়ির পাশে থাকলেও মানুষ ভুলে গেছে। কাগজের ব্যবহার কমে আসায় পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠেছে মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম। কাগজের সময় বৃক্ষ নিধন ছিল রমরমা। সেটি বাসি হয়ে যাচ্ছে। হাতের মুঠোয় সবকিছু দ্রুত এবং সহজলভ্য করে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাফল্য। কম্পিউটার ল্যাপটপের ওপর শুল্ক উঠিয়ে দিয়ে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার ভেতরে এনে দেওয়া হয়েছে। মানুষের হাতে হাতে এখন ল্যাপটপ, ঘরে ঘরে কম্পিউটার সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ। হাতে হাতে মোবাইল; গৃহকর্মী থেকে দিনমজুর সবাই ভোগ করছেন প্রযুক্তির এই সেবা। টাকা পাঠানোর জন্য এখন আর মানি অর্ডার করা লাগে না, বিকাশ নিশ্চিত করেছে মানুষের তাৎক্ষণিক টাকার প্রয়োজনীয়তা। এখন ইন্টারনেটের সুবাদে ঘরে বসে কেনাকাটা, হোটেল বুকিং, বাস, বিমানের ই-টিকিট সংগ্রহ করা যাচ্ছে। তথ্য সংরক্ষণের আর্কাইভ হয়ে উঠেছে কম্পিউটার। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগের পর বদলে যাচ্ছে অফিসের ইন্টেরিয়র। পুরনো ফাইলের স্তূপ আর গাদা গাদা কাগজের গোডাউন নয় সব তথ্য-উপাত্ত আর দরকারি সব প্রমাণাদি এখন কম্পিউটারে সংরক্ষিত হচ্ছে। ব্যাংক-বীমা সব এখন কম্পিউটারের আওতাধীন। কেউ ভাবতে পারেননি ইউনিয়ন অফিসে ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করবেন গ্রামের মানুষ। ডিজিটাল পাসপোর্ট এখন মানুষের হাতে হাতে। এর জন্য ভোগান্তি বা দালালের কাছে বাড়তি খরচ করতে হয়নি। ঘরে বসে পাচ্ছেন ভোটার আইডি কার্ড। পাচ্ছেন ব্যাংক স্টেটমেন্ট। পাচ্ছেন পুরো পুঁজি বাজারের খবরাখবর। এক সময় বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটত বিভিন্ন প্রকৌশল দপ্তরে। হুমকির মুখে টেন্ডার ড্রপ করতে পারতেন না ব্যবসায়ীরা। ই-টেন্ডার জালিয়াতি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করেছে ব্যবসায়ীদের। করের আওতায় আনা হয়েছে নাগরিকদের। অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের কারণে নাগরিকরা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্য পাচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সার্কুলার, গেজেট, ই-সেবা সরকারি ফরমসমূহ, সিটিজেন চার্টার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের তালিকা ৭ লাখের বেশি ই-ডিরেক্টরি, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা, উন্নয়ন কর্মকা-ের তথ্য, জনপ্রতিনিধি, জাতীয় ই-সেবা বিভিন্ন প্রকল্পের দরকারি তথ্যসহ ২০ লাখেরও বেশি রয়েছে তথ্য বাতায়নে।
জয় নিজেও বলেছেন, শুরুতে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনায় নেমেছিলেন তখন অনেকের আশঙ্কা ছিল, এর ফলে দেশে কি ডিজিটাল ডিভাইডস গড়ে উঠতে পারে! যারা ধনী, যাদের কাছে কম্পিউটার আছে, ইন্টারনেট কানেকশন নিতে পারে তারাই এই ডিজিটাল বাংলাদেশে লাভবান হবে। দেশের সাধারণ গ্রামের মানুষ বাদ পড়বে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এটি হতে দেবে না। তাদের উদ্দেশ্য ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবন আরও সহজ করে দেওয়া। তার ভাষায়, শুরুতে জেলা প্রশাসনের ওয়েব পোর্টাল দিয়ে যে ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয় সেটিই আজকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়। একমাত্র বাংলাদেশেই ২৫ হাজার ওয়েবসাইট এক জায়গায় আছে যা বিশ্বের কোথাও নেই।
ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪ হাজার ৫৫০টি, উপজেলা পর্যায়ে ১৪ হাজার ৬৪০টি, জেলা পর্যায়ে ৪ হাজার ৩২টি, বিভাগ পর্যায়ে ৪৫৫টি, জেলা পরিষদ পর্যায়ে ৬৪টি, উপজেলা পরিষদ পর্যায়ে ৪৮৮টি, মন্ত্রণালয়-বিভাগ পর্যায়ের ৫৫টি, অধিদপ্তর পর্যায়ের ৩৪৫টি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা পর্যায়ের ৪১৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে এক সূত্রে গেঁথে এ জাতীয় তথ্য বাতায়নটি তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হয়েছে জাতীয় তথ্য বাতায়ন পোর্টাল গড়ার কাজ। যে কোনো নাগরিক জাতীয় তথ্য বাতায়নে প্রবেশ করে পুরো বাতায়নের সবকটি ওয়েবসাইট ভ্রমণ করতে পারছেন।
চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু, সবার জন্য বাধাহীন ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা, এবং নিরবচ্ছিন্ন সাইবার নিরাপত্তা এই তিন চ্যালেঞ্জ সজীব ওয়াজেদ জয়ের।
সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন সরকার ইন্টারনেট ফ্রি করে দেবে। স্বদেশের আকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে। সেদিন থেকেই দেশের মানুষ যেখানেই থাকুন হাতের মুঠোয় তথ্য পেয়ে যাবেন। দেশের খবর বিদেশের খবর। পশ্চিমা দুনিয়ায় প্রিন্ট মিডিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টালের দাপট শুরু হয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খুব শিগগিরই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে মোবাইল টেলিভিশন। রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাসস্টপেজ সর্বত্র হাতের মুঠোয় খবর।
বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের সুবাদে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫ কোটি ৭ লাখ মানুষ, মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন ১৩ কোটি মানুষ আর ফেসবুক ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি মানুষ। বিপ্লব এভাবেই হয়, বদলে যায় সমাজ, দেশ, পৃথিবী। একুশ শতকের দুনিয়ায় পাল্লা দিতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যে বিপ্লব ঘটে গেছে তার নায়ক জয়। বঙ্গবন্ধু এই নাম রেখেছিলেন। তখন মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি। ইয়াহিয়া খান তার কবর খুঁড়ছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিবার ছিল বন্দি। সেই সময় জয় মায়ের কোল আলো করে পৃথিবীতে এসেছিলেন। নানার মতো উচ্চতা নিয়ে হার্ভার্ড থেকে উঠে আসা এই তরুণ দেশের তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে যে স্বপ্ন নিয়ে হাঁটা শুরু করেছিলেন সেটি এখন আকাশ ছুঁতে চলেছে। তার এই স্বপ্নপূরণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ ও মানুষ। আমরা সুবিধাভোগী নাগরিক। জয় হোক তারুণ্যের। এই অগ্রযাত্রাকে অভিবাদন জানাই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেই বলেছেন, তার এলাকার মানুষ ও তার মা তাকে নির্বাচন করতে বলেছিলেন কিন্তু তিনি করেননি। দলীয় কোনো পদও নেননি। পদ-পদবির বাইরে নেপথ্যে থেকেও দেশের জন্য অনেক বড় স্বপ্ন অর্জনে কাজ করা যায় এবং সাফল্য আনা যায় সেটি তিনি প্রমাণ করেছেন।
হার্ভার্ডের উচ্চশিক্ষিত আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয় উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যদের মতো হয়তো এ দেশেও আগামী দিনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাল ধরবেন, তৃতীয় প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে। কিন্তু তার আগেই ২০০৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের সেøাগানটি দলের জন্য ছুড়ে দেন। গণরায় নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের সেøাগান তুলেছিল তখন অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছিলেন। তাদের মুখে কুলুপ এঁটে দিয়ে আজ ৭ বছরের মাথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের যে চিত্রপট তৈরি হয়েছে সেখানে প্রযুক্তির সাফল্য মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
তথ্য ও প্রযুক্তি বা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের কাছাকাছি এখন আমরা। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয় ক্ষমতার দম্ভ নয়, দুর্নীতির বরপুত্র নয়, একজন উচ্চশিক্ষিত মেধাবী তরুণ হিসেবে আইটি সেক্টরে স্বপ্নের দুয়ার খুলে তারুণ্যের ভেতরে নিজের স্বপ্নকে সঞ্চালন করে নায়কের মতো আবির্ভূত হয়েছেন। তথ্য ও প্রযুক্তির বিস্ময়কর বিপ্লব ঘটিয়ে তিনি এখন আইডল।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। এই সেক্টরে জয়ের স্বপ্ন এখন তার হাতের মুঠোয়। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম বলেছিলেন, সেটি কখনো স্বপ্ন নয়, যেটি মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, সেটিই স্বপ্ন যেটি মানুষের ঘুম কেড়ে নেয়। সজীব ওয়াজেদ ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখেননি।
এক সময় ডাক বিভাগের সেøাগান ছিল ‘চিঠি লিখুন ইহাই স্থায়ী’ সেটিকে বাসি করে দিয়ে মানুষ এখন ইমেইল পাঠায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মুঠোফোনে পাঠায় খুদে বার্তা। টেলিগ্রাফ ও ডাকঘর অফিস বাড়ির পাশে থাকলেও মানুষ ভুলে গেছে। কাগজের ব্যবহার কমে আসায় পরিবেশবান্ধব হয়ে উঠেছে মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম। কাগজের সময় বৃক্ষ নিধন ছিল রমরমা। সেটি বাসি হয়ে যাচ্ছে। হাতের মুঠোয় সবকিছু দ্রুত এবং সহজলভ্য করে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাফল্য। কম্পিউটার ল্যাপটপের ওপর শুল্ক উঠিয়ে দিয়ে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার ভেতরে এনে দেওয়া হয়েছে। মানুষের হাতে হাতে এখন ল্যাপটপ, ঘরে ঘরে কম্পিউটার সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ। হাতে হাতে মোবাইল; গৃহকর্মী থেকে দিনমজুর সবাই ভোগ করছেন প্রযুক্তির এই সেবা। টাকা পাঠানোর জন্য এখন আর মানি অর্ডার করা লাগে না, বিকাশ নিশ্চিত করেছে মানুষের তাৎক্ষণিক টাকার প্রয়োজনীয়তা। এখন ইন্টারনেটের সুবাদে ঘরে বসে কেনাকাটা, হোটেল বুকিং, বাস, বিমানের ই-টিকিট সংগ্রহ করা যাচ্ছে। তথ্য সংরক্ষণের আর্কাইভ হয়ে উঠেছে কম্পিউটার। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগের পর বদলে যাচ্ছে অফিসের ইন্টেরিয়র। পুরনো ফাইলের স্তূপ আর গাদা গাদা কাগজের গোডাউন নয় সব তথ্য-উপাত্ত আর দরকারি সব প্রমাণাদি এখন কম্পিউটারে সংরক্ষিত হচ্ছে। ব্যাংক-বীমা সব এখন কম্পিউটারের আওতাধীন। কেউ ভাবতে পারেননি ইউনিয়ন অফিসে ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করবেন গ্রামের মানুষ। ডিজিটাল পাসপোর্ট এখন মানুষের হাতে হাতে। এর জন্য ভোগান্তি বা দালালের কাছে বাড়তি খরচ করতে হয়নি। ঘরে বসে পাচ্ছেন ভোটার আইডি কার্ড। পাচ্ছেন ব্যাংক স্টেটমেন্ট। পাচ্ছেন পুরো পুঁজি বাজারের খবরাখবর। এক সময় বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটত বিভিন্ন প্রকৌশল দপ্তরে। হুমকির মুখে টেন্ডার ড্রপ করতে পারতেন না ব্যবসায়ীরা। ই-টেন্ডার জালিয়াতি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করেছে ব্যবসায়ীদের। করের আওতায় আনা হয়েছে নাগরিকদের। অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের কারণে নাগরিকরা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্য পাচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সার্কুলার, গেজেট, ই-সেবা সরকারি ফরমসমূহ, সিটিজেন চার্টার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের তালিকা ৭ লাখের বেশি ই-ডিরেক্টরি, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা, উন্নয়ন কর্মকা-ের তথ্য, জনপ্রতিনিধি, জাতীয় ই-সেবা বিভিন্ন প্রকল্পের দরকারি তথ্যসহ ২০ লাখেরও বেশি রয়েছে তথ্য বাতায়নে।
জয় নিজেও বলেছেন, শুরুতে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনায় নেমেছিলেন তখন অনেকের আশঙ্কা ছিল, এর ফলে দেশে কি ডিজিটাল ডিভাইডস গড়ে উঠতে পারে! যারা ধনী, যাদের কাছে কম্পিউটার আছে, ইন্টারনেট কানেকশন নিতে পারে তারাই এই ডিজিটাল বাংলাদেশে লাভবান হবে। দেশের সাধারণ গ্রামের মানুষ বাদ পড়বে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এটি হতে দেবে না। তাদের উদ্দেশ্য ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবন আরও সহজ করে দেওয়া। তার ভাষায়, শুরুতে জেলা প্রশাসনের ওয়েব পোর্টাল দিয়ে যে ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হয় সেটিই আজকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়। একমাত্র বাংলাদেশেই ২৫ হাজার ওয়েবসাইট এক জায়গায় আছে যা বিশ্বের কোথাও নেই।
ইউনিয়ন পর্যায়ে ৪ হাজার ৫৫০টি, উপজেলা পর্যায়ে ১৪ হাজার ৬৪০টি, জেলা পর্যায়ে ৪ হাজার ৩২টি, বিভাগ পর্যায়ে ৪৫৫টি, জেলা পরিষদ পর্যায়ে ৬৪টি, উপজেলা পরিষদ পর্যায়ে ৪৮৮টি, মন্ত্রণালয়-বিভাগ পর্যায়ের ৫৫টি, অধিদপ্তর পর্যায়ের ৩৪৫টি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা পর্যায়ের ৪১৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে এক সূত্রে গেঁথে এ জাতীয় তথ্য বাতায়নটি তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হয়েছে জাতীয় তথ্য বাতায়ন পোর্টাল গড়ার কাজ। যে কোনো নাগরিক জাতীয় তথ্য বাতায়নে প্রবেশ করে পুরো বাতায়নের সবকটি ওয়েবসাইট ভ্রমণ করতে পারছেন।
চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু, সবার জন্য বাধাহীন ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা, এবং নিরবচ্ছিন্ন সাইবার নিরাপত্তা এই তিন চ্যালেঞ্জ সজীব ওয়াজেদ জয়ের।
সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন সরকার ইন্টারনেট ফ্রি করে দেবে। স্বদেশের আকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে। সেদিন থেকেই দেশের মানুষ যেখানেই থাকুন হাতের মুঠোয় তথ্য পেয়ে যাবেন। দেশের খবর বিদেশের খবর। পশ্চিমা দুনিয়ায় প্রিন্ট মিডিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টালের দাপট শুরু হয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খুব শিগগিরই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে মোবাইল টেলিভিশন। রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাসস্টপেজ সর্বত্র হাতের মুঠোয় খবর।
বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের সুবাদে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫ কোটি ৭ লাখ মানুষ, মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন ১৩ কোটি মানুষ আর ফেসবুক ব্যবহার করে প্রায় ২ কোটি মানুষ। বিপ্লব এভাবেই হয়, বদলে যায় সমাজ, দেশ, পৃথিবী। একুশ শতকের দুনিয়ায় পাল্লা দিতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যে বিপ্লব ঘটে গেছে তার নায়ক জয়। বঙ্গবন্ধু এই নাম রেখেছিলেন। তখন মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি। ইয়াহিয়া খান তার কবর খুঁড়ছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিবার ছিল বন্দি। সেই সময় জয় মায়ের কোল আলো করে পৃথিবীতে এসেছিলেন। নানার মতো উচ্চতা নিয়ে হার্ভার্ড থেকে উঠে আসা এই তরুণ দেশের তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে যে স্বপ্ন নিয়ে হাঁটা শুরু করেছিলেন সেটি এখন আকাশ ছুঁতে চলেছে। তার এই স্বপ্নপূরণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ ও মানুষ। আমরা সুবিধাভোগী নাগরিক। জয় হোক তারুণ্যের। এই অগ্রযাত্রাকে অভিবাদন জানাই।