জাতীয় নেতৃত্ব থেকে বিশ্বনেতৃত্বের প্রতীক শেখ হাসিনাঅগণতান্ত্রিক শক্তি ও অপশক্তির মোকাবেলায় বিভিন্ন বাহিনী সদাসচেষ্ট ও তৎপর রয়েছে তার নির্দেশনায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলি, সাফল্য ও দৃঢ়তা ক্রমাগত বেড়েছে। জাতীয় নেতৃত্বের দৃঢ়তা থেকে বিশ্বনেতৃত্বে শেখ হাসিনার অবস্থান দৃঢ় হয়েছে।রতনতনু ঘোষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশোন্নয়নে তার আন্তরিক পদক্ষেপ, দৃঢ়চেতা মনোভাব ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার সংমিশ্রণে জাতীয় নেতৃত্বের পর্যায় থেকে বিশ্বনেতৃত্বে সুনিশ্চিত অবস্থান করে নিতে পেরেছেন। ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী ‘ফরেন পলিসি’র ২০১৫ সালে শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক চিন্তাবিদের ১০০ তালিকায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নাম ১৩ নাম্বারে স্থান পেয়েছে। এ সংবাদটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কালো অধ্যায় থেকে এবং যুদ্ধাপরাধের কলঙ্ক থেকে জাতিকে মুক্তির জন্য যেভাবে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা দিয়েছেন এবং জীবনের ঝুঁকি দিয়ে নির্ভয়ে দেশ শাসন করছেন সে পরিপ্রেক্ষিতে এ পুরস্কার তাৎপর্যপূর্ণ বিশেষত বিগত সংসদ নির্বাচনের মাঝে ও পরে বিএনপি-জামায়াত জোট তথা হেফাজতে ইসলামের হুমকি ও সহিংস তাৎপরতার বিরুদ্ধে সক্রিয় মোকাবেলায় সরকার গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় সফল হওয়ায় এ পুরস্কার তার ন্যায্য পাওনা। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য বিমোচন, নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার সরকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। দক্ষিণ এশীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বহু চ্যালেঞ্জে মোকাবেলা করে তিনি এশিয়ার উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও শান্তিতে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ, বৈঠক, চুক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সংশোধিত হয়েছে। বিশেষত চীন, ভারত, রাশিয়া, জাপানসহ উন্নত দেশগুলোর সরকার, ব্যক্তি এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ইতিবাচক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনে। বিশ্বনেতা হিসেবে জোটে শেখ হাসিনার স্বীকৃতি ও সমর্থন। তিনি নাশকতা, অগি্নসংযোগ ও হত্যার রাজনীতি দমনে যে প্রজ্ঞা ও কৌশলের পরিচয় দিয়েছেন তাতে দেশের জনগণের সমর্থন বেড়েছে। সর্বশেষ বিএনপি নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আটক, বিচার ও ফাঁসির রায়ে জনগণ সন্তুষ্ট। এ ছাড়া জামায়াত নেতা ও সাবেক মন্ত্রী কুখ্যাত আলী আহসান মুজাহিদের গ্রেপ্তার, বিচার ও ফাঁসির রায় কার্যকরে স্বাধীনতাপ্রিয়, গণতন্ত্রপ্রিয় ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসিক্ত জনগণের আস্থা ও ভরসা বেড়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। বিগত নির্বাচনে অঙ্গীকার ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনঃপ্রতিষ্ঠা। সে অঙ্গীকার পূরণে শেখ হাসিনার সরকার এগিয়ে চলেছে সাফল্যের সঙ্গে। বর্তমানে দেশে-বিদেশে আইএসের হামলা এবং জঙ্গিত্রাস নিয়ে জনমনে আতঙ্ক বিদ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার খুনি ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে কৃতিত্ব দেখিয়েছে সারা দেশে। জঙ্গিরা চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে এবং বিদেশি নাগরিক, ধর্মযাজক, মুয়াজ্জিন, সংখ্যালঘু ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোকদের নৃশংসভাবে খুন করলেও গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় তারা ধরা পড়েছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিতে গণজাগরণ মঞ্চসহ আওয়ামী লীগ, সামাজিক-সংস্কৃতিক সংগঠন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতিনিধিত্বকারীদের দাবি, সমাবেশ ও আন্দোলন সক্রিয় রয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ সন্ত্রাস ও চোরাগোপ্তা হামলা মোকাবেলা করতে চায় সরকার। ইতোমধ্যে লেখক-বস্নগার, প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক, ধর্মযাজক ও পীরের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার, তদন্ত ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পাওয়া গেছে। জামায়াত-শিবিরের তৎপরতা অনেকাংশে কমেছে। এসব সংগঠন সন্ত্রাসী রূপে চিহ্নিত এবং সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধের অপেক্ষায়। যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি ঘোষণা আর রায় কার্যকরের আগে-পরে দেশকে আস্থাশীল, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এবং দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য সক্রিয় তৎপরতা চলে। সরকার সতর্ক থেকে জরুরি উদ্যোগে এসব অপতৎপরতা ও গণবিরোধী কার্যক্রম রোধে তৎপর হয়েছে। সন্ত্রাসী, খুনি ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর দমন ও নিয়ন্ত্রণে সরকার পূর্বাপেক্ষা অনেক নিপুণ ও কুশলী হয়েছে নিঃসন্দেহে। পদ্মা সেতুর কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদীয় ভাষণে জাতিকে সংশয়মুক্ত করে বিশ্ববাসীকে সুস্পষ্ট ধারণা দিয়ে রেকর্ড করেছেন। পদ্মা সেতু দেশের অর্থায়নে সম্পন্ন করার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি না দেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং তুরস্ক, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের তৎপরতা সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের ধারাবাহিকতায় দেশকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট জাতির জনক ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস খুনের পর দীর্ঘ একুশ বছর পর ক্ষমতাসীন হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিন মেয়াদে দক্ষতা, নৈপুণ্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্র, হুমকি ও চাপ মোকাবেলা করেছেন। এ জন্য গণআস্থা বেড়েছে, সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক সংসদীয় পদক্ষেপ এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সন্ত্রাস ও দুর্নীতি মোকাবেলার জন্য সরকারদলীয় লোক এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত রেহাই পায়নি। দুদকের কার্যক্রম শক্তিশালী করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটি কার্যকর হয়েছে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং পার্বত্য শান্তিচুক্তির অধিকাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। সংসদীয় রাজনীতিতে শান্তি-শৃঙ্খলা, সহযোগিতা বেড়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে এবং নির্ঝঞ্ঝাটে সম্পন্ন হচ্ছে। গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী হচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেড়েছে। সম্প্রচার নীতিমালা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে সরকার। তথ্য কমিশন সাধারণভাবে কাজ করছে। সংখ্যালঘুর সমস্যা ও পার্বত্যবাসীদের সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা রয়েছে। পরপর কয়েক বছর ঈদ ও পূজা শান্তিপূর্ণ ও সাধারণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সরকার সহনশীলতার মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমায় বিরোধীদলীয় হরতালের মধ্যেও সুসম্পন্ন করার সুব্যবস্থা নিয়েছে। বিশ্ব ক্রিকেট খেলার সময় বিএনপি-জামায়াতের হরতালের বিপরীতে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। জলবায়ু ও পরিবেশ সম্মেলনসহ আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফ্রান্স, আমেরিকা, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশে আইএস হামলা করেছে। সেসব দেশের সরকার তা স্বীকার করে মোকাবেলা করছে। যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকরে পাকিস্তানের অকাম্য মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশে জঙ্গি-সন্ত্রাস থাকলেও আইএসের অস্তিত্ব নেই বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী পরপর ঘোষণা দিয়েছেন। ফেসবুকে আইএসের ঘোষণার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে সরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠনের প্রচারণার ভিত্তি খুঁজে পেয়ে এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দান। সংবাদ সম্মেলন এবং সরকারের অবস্থান সুস্পষ্ট করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের চেয়ে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা ও ভরসা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বের শত চিন্তাবিদের তালিকায় শেখ হাসিনার নাম আসায় যথার্থই স্বীকৃত হয়েছে। শীর্ষ ১২ জন বিশ্বনেতা ও চিন্তাবিদের তালিকায় রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর ভাই মোদি, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটসহ অন্যদের নাম। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে। দেশ ও গণতন্ত্র ও সংবিধান সুরক্ষায় শেখ হাসিনার স্বীকৃতি জুটেছে। এ ছাড়া জাতিসংঘে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিক সুনাম নিশ্চিত হয়েছে। জলবায়ু সংকট মোকাবেলা শেখ হাসিনার প্রস্তাবনা ও নির্দেশনা, শান্তি প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার উন্নয়ন মডেল উপস্থাপন এবং গণতন্ত্র-সংবিধান রক্ষায় অঙ্গীকার বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। এ জন্য শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে নেতৃত্বের অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তার ঐতিহাসিক অবস্থান তিনি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে দেশ মধ্য আয় থেকে দ্রুতই উন্নত দেশের কাতারে চলে আসবে। তার প্রতি জনগণের শুধু আস্থা ও ভরসাই বাড়েনি, বেড়েছে আকাঙ্ক্ষা ও সম্মান। প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা তিনি বাড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের বেতন স্কেল বাড়িয়েছেন।
অগণতান্ত্রিক শক্তি ও অপশক্তির মোকাবেলায় বিভিন্ন বাহিনী সদাসচেষ্ট ও তৎপর রয়েছে তার নির্দেশনায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলি, সাফল্য ও দৃঢ়তা ক্রমাগত বেড়েছে। জাতীয় নেতৃত্বের দৃঢ়তা থেকে বিশ্বনেতৃত্বে শেখ হাসিনার অবস্থান দৃঢ় হয়েছে।