পাঁচ বছর ধরে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে পুরান ঢাকার কলতাবাজার পঞ্চায়েত কমিটির ‘আল মঈন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র’। শুধু ব্যবস্থাপত্রই নয়, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ওষুধও দিয়ে থাকে বিনা মূল্যে। সপ্তাহে এক দিন শুক্রবার এ সুযোগ পান কলতাবাজারের বাসিন্দারা।
এলাকাবাসী জানান, গরিব ও দুস্থ মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে কলতাবাজার পঞ্চায়েত কমিটি ‘দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পের অধীনে’ ২০১১ সালের ২৫ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা করে আল মঈন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। কলতাবাজার পঞ্চায়েত কমিটি এর তত্ত্বাবধান করে৷ মেডিসিন, কার্ডিওলজি, গাইনি ও চক্ষু বিভাগ নামে চারটি আলাদা বিভাগ আছে। পরীক্ষার জন্য আছে ইসিজি, নেবুলাইজার ও ডায়াবেটিক পরীক্ষার যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের টাকা দিয়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের বড় ধরনের যেকোনো পরীক্ষা, অপারেশন করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সেলিম কলতাবাজার পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি৷
মোহাম্মদ সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, সরকার সহযোগিতা করলে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যাবে। তিনি বলেন, প্রতি মাসে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রায় এক লাখ টাকার ওষুধের দরকার। এই টাকা কলতাবাজার পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য ও মহল্লার ধনী বাসিন্দারা দেন। এ ছাড়া জাকাত, কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয়। গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, কলতাবাজারের কাজী আবদুর রউফ সড়কের ৩০-৩০/ক নম্বরে একটি দোতলা বাড়ির নিচতলার আটটি কক্ষ নিয়ে আল মঈন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। সকাল সাতটা থেকেই রোগীরা সেখানে আসেন। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সামনে রোগীদের লাইন। রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আছেন ১২ জন চিকিৎসক।
স্বামী মো. আদুরের জন্য প্রায় সাত মাস ধরে এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে বিনা মূল্যে ওষুধ নেন রায় সাহেব বাজারের বাসিন্দা শোভা আক্তার। তিনি বলেন, স্বামী দীর্ঘদিন ধরে চোখ, ডায়াবেটিস ও হার্টের সমস্যা ভুগছেন। তাঁর জন্য মাসে ১০ ধরনের ওষুধ লাগে। কিন্তু সংসারে আয় নেই। এখান থেকেই ওষুধ নেন তিনি।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সূত্র জানায়, ২০১৫ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রটি প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছে। প্রতি শুক্রবার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে হলে সকাল সাতটা থেকে নয়টার মধ্যে নাম তালিকাভুক্ত করতে হয়। কলতাবাজার পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাজধানীর বাইরের মানুষকে সেবা দিতে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, সাভার, গাজীপুরে (দুবার) অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবছর টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের চিকিৎসায় মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়।