2৩তম অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ!

২০৫০ সালে কেমন হবে বাংলাদেশের অর্থনীতি? বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোর কত কাছে থাকবে বাংলাদেশ? কতটা এগোবে বাংলাদেশ? এ নিয়ে বৈশ্বিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। এতে বলা হচ্ছে, ২০৫০ সালে বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ।
অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আগামী ৩৫ বছরে কতটা শক্তিশালী হবে, তা নিয়ে গবেষণা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারস (পিডব্লিউসি)। প্রতিষ্ঠানটির ‘২০৫০ সালের বিশ্ব: বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্ষমতার পরিবর্তন কী চলবে?’ শীর্ষক সাম্প্রতিক গবেষণায় বাংলাদেশ নিয়ে এমন আশাবাদের তথ্য উঠে এসেছে।
পিডব্লিউসির গবেষণায় বলা হচ্ছে, ২০১৪–২০৫০ সাল পর্যন্ত বিশ্বে মাত্র তিনটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের বেশি হবে। এ তিনটি দেশ হলো বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া ও ভিয়েতনাম।
একটি দেশের অর্থনীতি কতটা বড় ও শক্তিশালী, সেটি নির্ধারণে সর্বস্বীকৃত দুটি উপায় আছে। একটি হলো ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতার (পিপিপি) ভিত্তিতে জিডিপির আকার, অন্যটি হলো বাজার বিনিময় হারের (এমইআর) ভিত্তিতে জিডিপির আকার। দুই হিসাবেই বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নতি উঠে এসেছে গবেষণাটিতে।
পিপিপির ভিত্তিতে ২০১৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৫৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বা ৫৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের ৩১তম বৃহৎ অর্থনীতি। ১ হাজার ২৯১ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি নিয়ে ২০৩০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার হবে বিশ্বে ২৯তম। ২০৫০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার হবে বিশ্বে ২৩তম। তখন জিডিপির আকার দাঁড়াবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
বিনিময় হারের ভিত্তিতেও বড় হবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এমইআর হিসেবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৩২তম। এ হিসাবে ২০৫০ সালে বিশ্বের ২৮তম হবে বৃহৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি। এই ৩৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার এখনকার তুলনায় ১৩ গুণ বড় হবে।
এখানেই শেষ নয়, সুখবর আছে আরও। পিপিপির হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি চীনের প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালের পর কমবে। এর ফলে বহুজাতিক পশ্চিমা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতে তাদের পণ্য উৎপাদনের জন্য বেছে নেবে। এতে রপ্তানিনির্ভর অনেক শিল্প এ দেশগুলোতে চলে আসবে এবং উচ্চ বেতনের নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
আগামী ৩৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আরেকটি ভালো খবর হবে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রবৃদ্ধি। এ সময় বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ শতাংশ হারে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী যোগ হবে।
জিডিপির বিপরীতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধিও আগামী ৩৫ বছরে বাড়বে বাংলাদেশে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এ দেশে জিডিপির বিপরীতে বিনিয়োগ হবে গড়ে ২১ দশমিক ২ শতাংশ, পরবর্তী সময়ে এ বিনিয়োগ বেড়ে হবে ২৩ দশমিক ২ শতাংশ।
বিশ্ব অর্থনীতিতে আগামী ৩৫ বছরে সবচেয়ে বড় দেশ হিসেবে চীনের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে। ২০৩০ সালে এমইআরের হিসাবেও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে চীন।
গবেষণায় জিডিপির দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় ৩২টি দেশের অর্থনীতিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সে হিসাবে এখনই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৩২টি অর্থনীতির একটি হলো বাংলাদেশ। এই ৩২টি অর্থনীতি বিশ্বের মোট জিডিপির ৮৪ শতাংশের জোগান দেয়। বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনামের উত্থান হবে চোখে পড়ার মতো।